ইনসাইড বাংলাদেশ

গত অল্পদিনে সাম্প্রদায়িকতা ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে গেছে: সম্প্রীতি বাংলাদেশ


প্রকাশ: 14/11/2023


Thumbnail

গত অল্পদিনে সাম্প্রদায়িকতা ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে গেছে। এটি রোধ না হলে সার্বিক উন্নয়ন মলিন হিসেবে গণ্য হবে বলে জানিয়েছে সামাজিক সংগঠন সম্প্রীতি বাংলাদেশ।

সংগঠনটি বলছে, সাম্প্রদায়িকতা আছে বলেই সম্প্রীতির প্রয়োজন। সময়ের আবর্তে ক্ষয়ে গেছে বিশুদ্ধ সংস্কৃতি। বদল হয়েছে পাঠ্যবই। রাজাকারও মন্ত্রী হয়েছে এদেশে। সুতরাং অল্পদিনে অনেক পরিবর্তনের কারণে র‌্যাডিকালিজম চাড়া দিয়েছে। সবমিলে একটা অস্থির সময় পার করছে এদেশের জনগন। মনের মধ্যে রাগ ক্ষোভ পুষে না রেখে তাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলা গঠনে সব মানুষের জোটবদ্ধ হওয়া জরুরী।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার ঠাঁই নেই’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে শিক্ষাবিদ ও লেখক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদদের তালিকা নিয়ে এখনও প্রশ্ন করে কেউ কেউ। কারণ এদেশে রাজাকারদের মতো আত্মস্বীকৃত খুনিরা মন্ত্রী হয়েছে। তাদের দোসরেরা সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদে আসীন হয়েছেন। অথচ মুক্তিযুদ্ধের মূল্যায়ন যদি হয় রক্তের দামে, তাহলে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি দামে পৃথিবীর অন্য কোনো জাতি স্বাধীনতা কেনে নাই।

বক্তব্যের বিভিন্ন পর্যায়ে মুহম্মদ জাফর ইকবাল তার কর্মময় জীবনের বিভিন্ন স্তরে কিভাবে সাম্প্রদায়িকতা দেখেছেন তার বর্ননা করেন। একইভাবে শিশু কিশোরদের মধ্যে মুক্তবুদ্ধি তথা অসাম্প্রদায়িক চেতনার বীজ কিভাবে প্রোত্থিত হতে পারে তারও সরল সমাধান দেন।

নাট্যজন, আবৃত্তিকার ও অভিনেতা পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে অন্যদের মধ্যে অংশ নেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক পূজা উদযাপন কমিটি সাধারণ সম্পাদক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, ডিবিসি নিউজের সম্পাদক প্রণব সাহা, একাত্তর টেলিভিশনের নূর সাফা জুলহাস, চিকিৎসক নেতা ও সোহরাওয়াদী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন পরিচালক ডা. উত্তম বড়ুয়া, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিস্টার ফারজানা মাহমুদ, সময় টেলিভিশনের সম্পাদক মোস্তফা হোসেইন, সম্প্রীতি বংলাদেশের কেন্দ্রিয় নেত্রী জয়ম্রী ব্যানার্জী, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান ময়না, একুশে টেলিভিশনের ভারপ্রাপ্ত অনুষ্ঠান প্রধান সাইফ আহমেদসহ অন্যরা।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ও সম্প্রীতি বাংলাদেশের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, নির্বাচন এলেই সাম্প্রদায়িক নানা দাঙ্গা আমরা দেখতে পাই। ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত নির্বাচন পরবর্তী হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যেসব হামলা-ধর্ষণ হয়েছে, তা ইতিহাসের কালো অধ্যায়। আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনে আমরা কোনো সাম্প্রদায়িকতা চাই না। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে আর কোনো সাম্প্রদায়িকতাকে আমরা মেনে নেব না।

তিনি বলেন, দ্বাদশ নির্বাচনকে ঘিরে দেশি-বিদেশি নানা অপশক্তি তৎপর। তারা দেশে আবারও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে চায়, আমাদেরকে সেটা রুখে দিতে হবে।

সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তিগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এগুলোকে প্রতিহত করতে হবে। আমরা যদি একত্রে সবাই মিলে দাঁড়াতে পারি, তাহলে তাদেরকে আমরা রুখতে পারব। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে, যতোই ষড়যন্ত্র থাকুক সেগুলো ছিন্ন করে বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িকতার দিকে নিয়ে যেতে হবে। সব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে শান্তি-সমৃদ্ধির দিকে আমাদের এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি, ২০০১ সালের বাংলাদেশ আর দেখতে চাই না। ইসিকে বলেছি শক্তভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। ওই সময়ে যে ভয়াবহতা, নৃশংসতা, যে অত্যাচার হয়েছিল, তা প্রায় একাত্তর সালকে মনে করিয়ে দেয়। সে ব্যাপারগুলো আমরা বাংলাদেশ থেকে চিরতরে সরিয়ে দিতে চাই।

অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দিতে সমাজের সর্বস্তরে ঐক্য প্রয়োজন। ধর্মের দোহাই দিয়ে যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ জলাঞ্জলি দিতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। দেশে কালো অশুভ শক্তির ষড়যন্ত্র এখনো বন্ধ হয়নি। যখনই সুযোগ পেয়েছে হিংস্র বিষধর নাগিনীরা ছোবল মারতে চেয়েছে।

তারা বলেন, আজ আমরা যুগসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। হিংস্র শ্বাপদের দল মরণ কামড় দেওয়ার জন্য তৈরি আছে। আমাদের শত বছরের ঐতিহ্য, আমার অহংকার আজ হুমকির মুখে। এসব শ্বাপদকুলের সঙ্গে আমাদের মোকাবেলা অবশ্যম্ভাবী।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭