ইনসাইড গ্রাউন্ড

গ্রেট শচীনের উদারতা, পরিপ্রেক্ষিতে আমরা


প্রকাশ: 16/11/2023


Thumbnail

একটা সময় পাকিস্তানী ড্যাশিং ওপেনার সাঈদ আনোয়ার ও ভারতীয় গ্রেট শচীন টেন্ডুলকারের মধ্যে কার সেঞ্চুরি বেশি হবে সেই প্রতিযোগীতা চলতো । কখনো শচীন সাঈদকে ছাড়িয়ে যেত কখনো সাঈদ আনোয়ার শচীনকে ছাড়িয়ে যেত। ওই ১৮-২০টি সেঞ্চুরিকেই মনে হতো পাহাড় সমান। এক সময় সাঈদ আনোয়ার অবসরে যান। আর শচীন সাঈদ আনোয়ারকে পেছনে ফেলে সেঞ্চুরির এভারেস্ট গড়েন। শেষ পর্যন্ত ৪৯তম সেঞ্চুরিতে এসে থামেন ভারতীয় গ্রেট শচীন টেন্ডুলকার । তখন মনে হতো এই রেকর্ড হয়তো কেউ ছুঁতেই পারবেন না। কারণ ক্রিকেট গ্রেট শচীনের উচ্চতায় যাওয়া কোনও ব্যাটসম্যান এক শতাব্দীতে জন্মাবে কি না সন্দেহ! 

কিন্তু, সেই সন্দেহকে ভুল প্রমান করেছেন তারই দেশী ভিরাট কোহলি। কোহলি অনায়াসেই তার ২৯১তম ম্যাচে এসে ৫০তম সেঞ্চুরি করে গড়লেন এক অনন্য রেকর্ড। ভিরাটের এই অনন্য রেকর্ড গড়ার সময় মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ের মাঠে স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন ক্রিকেট গ্রেট, লিটল মাস্টার শচীন টেন্ডুলকার। তিনি তার রেকর্ড ভাঙার সময় উঠে দাঁড়িয়ে কোহলিকে হাত তালি দিয়ে অভিবাদন জানান। 

এরপর ভিরাট তার স্মরণীয় সেঞ্চুরি উদযাপন করেন শচীনকে সম্মান জানিয়েই। তিনি শচীন টেন্ডুলকারকে প্রণাম জানিয়েছেন মাঠেই। ওয়াংখেড়ে শচীনের ঘরের মাঠ। আর সেই মাঠেই শচীনের ৪৯টি শতরানের রেকর্ড ভেঙে দিলেন কোহলি।

এসময় শচীনের মনে পড়ে গিয়েছে ভিরাটের সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাতের কথা। ভিরাটের ৫০তম শতরানের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি লিখেন, ‘ভারতের সাজঘরে তোমার সঙ্গে যখন প্রথম দেখা হয়েছিল, সতীর্থেরা তোমাকে মজা করে বলেছিল আমাকে প্রণাম করতে। তাতে নাকি ক্যারিয়ার ভালো হবে। এটাই নাকি ভারতীয় দলের সাজঘরের নিয়ম। তুমি সেই ইয়ার্কি না বুঝে আমাকে প্রণাম করতে গিয়েছিলে। আমি হাসি থামাতে পারিনি। আজ তুমি আমার মন ছুঁয়ে নিলে। তোমার প্রতিভা এবং খেলার প্রতি আবেগ আমার মন ছুঁয়ে গিয়েছে। সেই বাচ্চা ছেলেটা আজ ভিরাট হয়ে গিয়েছে। আমি প্রচণ্ড খুশি।’

একজন গ্রেটের অনন্য রেকর্ড আরেকজন ভাঙার পর কেউ এতটা আবেগ দিয়ে লিখে তার উদারতা এত চমৎকারভাবে প্রকাশ করতে পারেন! শচীন পেরেছেন, কারণ তিনি গ্রেট। আর গ্রেটরা এমনই হন। তাদের মনের সংকীর্ণতা থাকে না। তারা উদার। কী অবলীলায় তিনি তারই রেকর্ড ভাঙার পর অনুজের কৃতকর্মের প্রশংসা করতে সময় নিলেন না। 

শচীন আরও খুশি তার রেকর্ড কোনও ভারতীয় ব্যাটার ভেঙেছেন বলে। তিনি লেখেন, ‘আমি সব থেকে খুশি একজন ভারতীয় আমার এই রেকর্ড ভেঙেছেন। আর বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের মতো বড় মঞ্চে করার কৃতিত্বটাই আলাদা। আর আমার ঘরের মাঠে সেঞ্চুরি  করাটা সত্যিই কেকের উপর রাখা চেরির মতো।’

কথায় আছে না, যে দেশে গুণীর কদর হয় না, সেদেশে গুণী জন্মায় না। আমাদেরওতো সাকিব-মাশরাফি-তামিম-রিয়াদ-মুশফিকরা আছেন। কজন তাদের কদর করি! কতজন তাদের সম্মান দেই? মানুষ মাত্রই ভুল হবে আর এতটুকু সুযোগ পেলে আমরা তাদের ধুয়ে দিতে ছাড়ি না। গুণীর কদর করাটা একটি শিক্ষা, প্রথা আর উচ্চমার্গীয় ভদ্রতা।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭