ইনসাইড পলিটিক্স

তারেক জিয়ার হাতেই বিএনপির ধ্বংস?


প্রকাশ: 17/11/2023


Thumbnail

একদিকে নির্বাচনের তফসিল অন্যদিকে বিএনপির মুখ থুবড়ে পড়া আন্দোলন, একদিকে বিএনপিতে গণ পদত্যাগের হিড়িক, অন্যদিকে গণ বহিষ্কারের আতঙ্ক সবকিছু মিলিয়ে টালমাটাল বিএনপি। আর মাত্র ৫০ দিন পরে একটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিএনপি এখন পর্যন্ত নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপির কি লাভ হবে—সেই প্রশ্নের উত্তর জানেন না বিএনপির কোনো নেতা। এমনকি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে বিএনপি যে অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়ে পড়বে—এমন কথা বিএনপির মধ্যে থেকে উচ্চারিত হলেও সে ব্যাপারে কোন উত্তর নেই নীতি নির্ধারকদের। 

বিএনপির নেতাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপ চারিতায় তাদের দীর্ঘশ্বাস দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। তারা মনে করছেন যে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার অপরিণামদর্শী রাজনীতি, অদক্ষতা, অযোগ্যতা এবং অর্ধশিক্ষিত জ্ঞানের কারণেই বিএনপির আজকের এই পরিণতি। বিএনপির কোনো কোনো নেতা মনে করছেন যে তারেক জিয়ার হাতেই বিএনপির ধ্বংসলীলা সংঘটিত হতে যাচ্ছে। 

এই নির্বাচনটি বিএনপির জন্য বাঁচা মরার নির্বাচন। বিএনপির কারারুদ্ধ মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন যে এবারের আন্দোলন বাঁচা মরার আন্দোলন হয়। হয় বাঁচবো না হয় মরবো। কিন্তু এই আন্দোলন এখন মুখ থুবড়ে পড়ে গেছে। ২৮ অক্টোবর বিএনপির যে আগ্রাসী তৎপরতা ছিল এটি সম্পর্কে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা কেউ কিছু জানতেন না। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার নিজস্ব নির্দেশে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি এই ধরনের ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে। এ ধরনের ঘটনার পর সারা দেশের মানুষ বিএনপিকে আবার ধিক্কার জানাতে শুরু করেছে। 

কদিন আগেও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মানুষের মধ্যে যে সরকারের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা ছিল, তারা এখন সরকারকে মন্দের ভাল হিসাবে মনে করছেন। বিএনপি কথা দিয়েছিল যে তারা জ্বালাও-পোড়া ও সহিংসতার রাজনীতির আর করবে না। নাকে খত দিয়ে তারা ২০১৫ এর পর থেকে আস্তে আস্তে সংগঠন গোছাচ্ছিল। কিন্তু একটা  আত্মঘাতী টর্নেডো বিএনপিকে আবার তছনছ করে দিয়েছে। এখন বিএনপির সামনে একটি পথ খোলা রয়েছে। তা হল নির্বাচনে যাওয়া এবং নির্বাচনের মাধ্যমে যে কয়টি আসন পায় তা নিয়ে সংগঠনকে নতুন করে গোছানো, আটক নেতাকর্মীদের কারাগার থেকে আস্তে আস্তে মুক্ত করা এবং একটা নির্দিষ্ট সময় ধরে সংগঠনকে গুছিয়ে ফেলা। কিন্তু বিএনপি সে পথে হাঁটছে না। একজন অপরিণামদর্শী জেদের কাছে বিএনপি আছে জিম্মি হয়ে আছে বলেও বিএনপির নেতারা মনে করছেন। বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ যেমনটি বলেন যে বিএনপিতে নেতৃত্বের তীব্র সঙ্কট রয়েছে এবং দূরদৃষ্টি রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অভাব রয়েছে। 

গত সাতদিনে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেছেন দেড় হাজারের বেশি নেতাকর্মী। এদের অনেকেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য পদত্যাগ করেছেন। এরা হয়তো কেউ স্বতন্ত্র অথবা কেউ তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়ে নির্বাচন করবেন। বিএনপি যদি নির্বাচন না করে তাহলে তারা নির্বাচন প্রতিরোধ করবে—এমনটি ঘোষণা করা হয়েছিল বিএনপির শীর্ষ নেতাদের পক্ষ থেকে। কিন্তু নির্বাচন প্রতিরোধের আন্দোলন করার মতো সাংগঠনিক ক্ষমতা এবং দক্ষতা দলটির নেই। 

লন্ডনে পলাতক বিএনপির অর্ধ শিক্ষিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনে করেছিলেন যে, বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ার গোঁ ধরলে এই বিদেশিরা এসে সরকার ফেলে দেবে। কিন্তু বাস্তবতা তেমনটি নয়। এখন বিএনপি যদি নির্বাচন থেকে দূরে থাকে এবং আন্দোলনে সফল না হয় তাহলে দেশে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হয়ে যাবে এবং এই নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি কি আদৌ টিকে থাকবে—এই প্রশ্নটি এখন বিএনপির মধ্যে উচ্চারিত হচ্ছে। আর বিএনপি এই দুর্দশার জন্য সবাই একবাক্যে যাকে দায়ী করছেন তার নাম তারেক জিয়া।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭