ইনসাইড বাংলাদেশ

নির্বাচনকালীন সরকার: যা করতে পারবে, যা করতে পারবে না


প্রকাশ: 18/11/2023


Thumbnail

আনুষ্ঠানিক ভাবে দেশে নির্বাচনকালীন সরকারের যাত্রা শুরু হয়েছে। যদিও বাংলাদেশের সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকার বলে কোনো বিধি ব্যবস্থা নেই। যখন নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে তখন যে সরকারটি থাকে যে মন্ত্রিপরিষদ থাকে তারাই নির্বাচনকালীন সরকার এবং মন্ত্রিপরিষদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। গণতান্ত্রিক বিশ্বে নিয়ম হল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই সংসদ নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং রাষ্ট্রপতি তাকে নতুন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ পর্যন্ত দায়িত্ব অব্যাহত রাখার জন্য অনুরোধ করেন। এটি একটি সাংবিধানিক আনুষ্ঠানিকতা, গণতন্ত্রের শিষ্টাচার। সেই শিষ্টাচারটি সম্পন্ন করেছেন আজ প্রধানমন্ত্রী। 

আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম বিতরণ এবং গ্রহণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করে তিনি বঙ্গভবনে গেছেন এবং রাষ্ট্রপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। আইন বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এর মধ্যে দিয়ে আসলে নির্বাচনকালীন সরকারের যাত্রা শুরু হল। এখন নির্বাচনকালীন সরকার কোন কোন কাজ করতে পারবে এবং কোন কোন কাজ করতে পারবেন না। যদিও এখন যে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য যারা আছেন, তাদের মধ্যে কয়েকজন ছাড়া সবাই সংসদ সদস্য এবং আগামী নির্বাচনে এদের অনেকে মনোনয়ন পাবেন। কাজেই তারা মন্ত্রণালয়ের কাজে মনোযোগ দিতে মনোযোগ দিতে পারবেন না, বরং এলাকাতেই তাদের ব্যস্ত সময় কাটাতে হবে। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বগুলো এসময় ন্যস্ত থাকবে সচিবদের ওপর। তবে যারা টেকনোক্রেট মন্ত্রী যেমন- ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী  ইয়াফেস ওসমান সহ কয়েকজনকেও রুটিন দায়িত্ব পালন করতে হবে। 

নির্বাচনকালীন সরকার কি কি করতে পারে? নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান কাজ হবে।

১. নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন হয়। 
২. রুটিন দায়িত্বগুলো পালন করা অর্থাৎ নিত্যনৈমিত্তিক যে কর্মকাণ্ড গুলো পরিচালিত হয় সেই কর্মকাণ্ড গুলোকে এগিয়ে নেওয়া।
৩. আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা। 
৪. দেশের কূটনীতি এবং পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিষয়গুলোকে দেখভাল করা এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিক রুটিন দায়িত্ব পালন করা।

নির্বাচনকালীন সরকার কতগুলো সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। এটি নির্বাচন আইন এবং আচরণ বিধি দ্বারা রহিত করা হয়েছে। নির্বাচনকালীন সরকার যে কাজগুলো করতে পারবেন না তার মধ্যে রয়েছে-

১. কোন নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন না। নির্বাচনকালীন সরকার কোন গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত এই সময়ে নিতে পারবেন না। যেমন-ধরা যাক আরেকটি পদ্মা সেতু তৈরি করা। এটি একটি নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত। এ রকম সিদ্ধান্ত এখন নির্বাচনকালীন সরকার গ্রহণ করতে পারবেন না। 

২. কোন উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন বা উন্নয়ন প্রকল্প ঘোষণা দিতে পারবেন না। এসময় সরকারের পক্ষ থেকে নতুন কোন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ বা উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ইত্যাদি করা যাবে না। এ কারণেই গত ৯ নভেম্বর শেষ একনেক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখন নতুন কোন একনেক বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারবে না। 

৩. নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ ছাড়া পদায়ন করতে পারবেন না। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিব কিংবা নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট অন্য কোন পদে পদায়ন করতে গেলে এখন নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের সাথে পরামর্শ ছাড়া এই ধরনের কোন পদে পদায়ন করা করতে পারবে না বর্তমান সরকার। 

৪. নিজ এলাকা নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন না। নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী সহ অন্যান্য মন্ত্রীরা যদি কোন প্রচারে অংশ নেন তাহলে তারা তাদের সরকারি সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন না। 

এছাড়াও বেশ কিছু নীতি এবং সীমাবদ্ধতার মধ্যে দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালিত হবে। আগামী ৫০ দিন যে সরকারটি থাকবে তাদের প্রধান দায়িত্ব হবে রুটিন কাজের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭