ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সেই ২৪০ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়নি ইন্দোনেশিয়া, ফের সাগরে তাদের নৌকা


প্রকাশ: 19/11/2023


Thumbnail

কাঠের নৌকায় চেপে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের উপকূলে পৌঁছানো ২৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়নি স্থানীয়রা। রোহিঙ্গাদের জোর করে সেই কাঠের নৌকাতেই সাগরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে খবর প্রকাশ করেছে বার্তাসংস্থা এপি।  

গত সোম এবং মঙ্গলবার দুটি পৃথক নৌকায় অন্তত ৪০০ উদ্বাস্তু ইন্দোনেশিয়ার আচেহ পৌঁছান। 

আচেহ পুলিশ এবং স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন, শরণার্থীদের আগের দুটি দলকে খাবার, জল, চিকিৎসা সেবা এবং অস্থায়ী আশ্রয় দেয়া হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার সর্বশেষ নৌকাটি ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে পৌঁছালে স্থানীয়রা এই তৃতীয় দলটিকে সমুদ্রে ফিরে যেতে বাধ্য করে। ফিরে যাওয়ার পথে দ্বিতীয় আরেক স্থানে গিয়ে নৌকাটি ভিড়লে সেখানেও শরণার্থীরা একই পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দেশটির আচেহ প্রদেশের বিরুয়েন এলাকায় উপকূলে পৌঁছালে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা তাদের নৌকাটি অবতরণ করতে বাঁধা দিলেও শরণার্থীরা সাঁতরে তীরে উঠে আসে এবং সৈকতে উঠার পর অনেকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এ সময় অনেকেই অনুনয়-বিনয় করলেও শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) ভোরে স্থানীয়রা তাদের পুনরায় নৌকায় করে সাগরে পাঠিয়ে দেয়।

বিরুয়েন পুলিশের মুখপাত্র মারজুকি বলেছেন, বেশ কয়েকদিন ধরে ভেসে যাওয়া কাঠের নৌকাটি প্রথমে বিরুয়েন জেলার উপকূলে দেখা গিয়েছিল। সেখানে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী উদ্বাস্তুদের মানবিক কারণে অবতরণ করতে গ্রামবাসীদের রাজি করানোর চেষ্টা করেছিল।

এপিকে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘মানবিকতার দিক থেকে আমরা তাদের নিয়ে যেমন শঙ্কিত তেমনি আরেক দিকেও শঙ্কা আছে। তারা এখানে বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি করছে। অতীতে আমরা দেখেছি তারা ডাঙায় পৌঁছায়, আশ্রয়কেন্দ্র থেকে তাদের অনেকে পালিয়ে যায়। তাই স্থানীয়রা তাদের আর গ্রহণ করতে চায় না।’

স্থানীয় পুলিশের মুখপাত্র সালমান আলফারিসি জানান, “নৌকাটি তারপরে ফিরে যায় এবং উত্তর আচেহের লোকসুমাওয়েতে নামার চেষ্টা করে। কিন্তু সেখানেও তারা স্থানীয়দের কাছ থেকে একই রকম প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়।”

বিরুয়েন পুলিশের একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জলি রনি মামারিমিং বলেছেন, কর্তৃপক্ষ শরণার্থীদের খাবার ও পানীয় সরবরাহ করেছে এবং তাঁদের মধ্যে খারাপ অবস্থায় থাকা পাঁচজনকে নামতে দিয়েছে। 

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, কয়েক বছর ধরে উদ্বাস্তুদের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়ার উদারতার অপব্যবহার করে আসছে পাচারকারীরা। উদ্বাস্তুরা স্থানীয়দের জন্য সমস্যা তৈরি করছে।

স্থানীয় জেলেদের মতে, নৌকার রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে সেখানে গেছেন। বৃহস্পতিবার তীর থেকে ফিরিয়ে দেয়া নৌকার এক শরণার্থী বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, যে ওই নৌকার যাত্রীরা কক্সবাজার থেকে রওয়ানা দিয়েছিলেন।

মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে ২০১৭ সাল থেকে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। আরাকানে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর নিপীড়নমূলক অভিযান শুরুর পর থেকে সীমান্ত দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭