ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কী ঘটছে মিয়ানমারে?


প্রকাশ: 19/11/2023


Thumbnail

জান্তা সরকার নিয়ন্ত্রিত মিয়ানমার বর্তমানে একটি ফুটন্ত অগ্নিকুন্ডে পরিণত হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে রীতিমতো কোনঠাসা হয়ে পড়েছে সেনাবাহিনী। এতেই যেন মাথা নষ্ট অবস্থা জান্তা সরকারের। এমন শঙ্কায় সেনাবাহিনীকে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

জান্তা সরকার নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বিদ্রোহীদের উপর নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। বিমান হামলা করে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। সাধারণ জনগণও প্রাণ ভয়ে যে যেভাবে পারছে ছুটছে সীমান্তের দিকে। যেন ফিরে এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের মতোই আরেকটা রোহিঙ্গা নিধন মিশন। 

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় (ইউএনওসিএইচএ) অফিসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১৩ নভেম্বর রাথেদাউং শহরে আরাকান আর্মি ও সেনাবাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা মংডু, কিয়াউকতাও, মিনবিয়া, পাউকতাও, পোন্নাগিউন এবং পালেতওয়া শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। আর ওই যুদ্ধের ফলে ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সেখানে থাকা বেসামরিক ব্যক্তিদের জীবনও হুমকির মুখে পড়েছে। 

 নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়া পাউকতাও শহরের বাসিন্দা সাবেক এক সংসদ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএনএন-কে জানিয়েছেন, তিনি শহরের থাকাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না এবং সেখানে কী ঘটছে তা জানেন না।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, গেল কয়েক দিনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তাণ্ডবে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে হাজার হাজার মানুষ।  প্রাণ ভয়ে কিছু সেনা সদস্যও পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে ভারত এবং চীন সীমান্তে। জান্তা বাহিনীর এমন কাণ্ডে নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে নয়াদিল্লি।

রয়টার্সে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কায়াহ রাজ্যে সেনাবাহিনীর কিছু ক্যাম্প জালিয়ে দিয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্যরা। সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে নতুন নতুন রাজ্যে। পরিস্থিতি অনেকটা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনী শঙ্কা করছে, তাদের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালাতে পারে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। এরই মধ্যে বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সেনাবাহিনীর সব ক্যাম্প জালিয়ে দিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদিরা।

গত কয়েক দশক ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জাতিগত সংখ্যালঘু ও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর লড়াই চলছে। তবে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থান দেশটির জান্তাবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর মাঝে নজিরবিহীন সমন্বয় তৈরি করে দিয়েছে। যার ফলে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সাথে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনী সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।

অঞ্চলটির বিদ্রোহীরা বলছেন, সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন থেকে রক্ষা পেতে আরাকান আর্মিসহ বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী এক হয়ে যুদ্ধে নেমেছে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে। তাদের দাবি, স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে স্বেচ্ছায় তরুণতা স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলোতে যোগ দিচ্ছে। নিচ্ছে প্রশিক্ষণও। তারাই রুখে দাঁড়াচ্ছে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে।

২০২১ সাল থেকে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চিকে জান্তা সরকার গৃহবন্দি করে রেখেছে। সে সময় সেনা শাসনের প্রতিবাদে তখন রাস্তায় নামে হাজার হাজার মানুষ।

মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গারা জাতিগত বিদ্বেষের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় । এ সময় প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাশেশে আশ্রয় গ্রহন করে। ৬ বছর পরও তাদের ফেরত পাঠানো যায়নি নিজ দেশে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭