কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করছে দক্ষিণ কোরিয়া

কুকুরের মাংস খাওয়া দক্ষিণ কোরিয়ার একটি প্রাচীন ঐতিহ্য। প্রতিবছর দেশটিতে শুধুমাত্র মাংস খাওয়ার জন্য ৭ থেকে ১০ লাখ কুকুর হত্যা করা হয়। শত বছরের এই বিতর্কিত প্রথাটি দেশটিতে স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ না হলেও অবৈধ নয়।  তবে গত কয়েক বছর ধরে পশু অধিকারবিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে কুকুরের মাংস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সাধারণ মানুষ।  প্রাণী অধিকার নিয়ে সচেতন বাড়তে থাকার মধ্যে প্রাচীন প্রথা নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটাতে কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করতে চলেছে কোরিয়া।

কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করতে একটি আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে দক্ষিণ কোরিয়া।রোববার (১৯ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) প্রাণী সুরক্ষাকর্মীদের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে পিপল পাওয়ার পার্টির নীতি প্রধান ইউ-ইউই-ডং বলেন, ‘কুকুরের মাংস খাওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা সামাজিক বিতর্ক ও দ্বন্দ্ব শেষ করার সময় এসেছে। কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করে বিশেষ আইন প্রণয়ন করা হবে।’

কৃষিমন্ত্রী চুং হোয়াং-কেউন বৈঠকে বলেছেন, আইন পাস হলে সরকার দ্রুতই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করবে। আর কুকুরের মাংস ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসীয়দের সর্বোচ্চ সহায়তা দেবে সরকার।

এর আগে বেশ কয়েকবার দেশটিতে কুকুরের মাংস খাওয়া নিয়ে বিল উত্থাপন হলেও কুকুর-খামারি এবং রেস্তোঁরা মালিকদের বিরোধিতায় বিলটি পাস হয়নি। মূলত জীবিকা ও ব্যবসা হারানোর ভয়েই বিরোধিতা করেছিলেন তারা।

গত সেপ্টেম্বরে কুকুরের মাংস বেচা ও খাওয়া নিষিদ্ধ করতে সংসদে একটি বিল উত্থাপন করেছিল দেশের প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি। দেশের ফার্স্ট লেডির নামে প্রস্তাবিত আইনটির নাম কিম কিওন হি বিল দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুরের মাংস বেচা ও খাওয়া নিষিদ্ধ করার পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন কিম কিওন হি।

গত আগস্টে এক সংবাদ সম্মেলনে কিম কিওন বলেছিলেন, মানুষ ও প্রাণীদের পাশাপাশি বাস করা উচিত। কুকুরের অবৈধ মাংস সম্পর্কিত সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা উচিত।

সাম্প্রতিক বছরে দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুরের খামারের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। এরপরও প্রতি বছর প্রায় ৭ লাখ কুকুর জবাই হচ্ছে।