ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশের নির্বাচন: ভারতের পাঁচ প্রত্যাশা


প্রকাশ: 19/11/2023


Thumbnail

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে। আগামী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে ভারতের অবস্থান এখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট। ভারত সবসময় বলছে যে বাংলাদেশের নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার এবং বাংলাদেশের সংবিধান এবং জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই দেশে নির্বাচন নিয়ে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলেছে এবং অনেকেই মনে করেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে পরিবর্তিত অবস্থান এবং মনোভাব সেই সৃষ্টির পেছনে ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বা আছে। কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে ভারতের প্রত্যাশার জায়গা কি? 

ভারতের বিভিন্ন থিঙ্ক ট্যাঙ্কগুলো বাংলাদেশের নির্বাচন এবং গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আলাপ আলোচনা করেছে। তাদের কিছু লেখালেখিও সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এই সমস্ত লেখালেখির নির্যাস থেকে
ভারতের পাঁচটি প্রত্যাশার কথা পাওয়া যাচ্ছে। 

১. বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায় ভারত: বাংলাদেশ যেহেতু ভারতের নিকটতম প্রতিবেশী ভারত মনে করে প্রতিবেশী প্রথম। সব কিছু পাল্টানো যায়, প্রতিবেশী পাল্টানো যায় না। তাই বাংলাদেশেও যেন গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকে, সেটি ভারত প্রত্যাশা করে। এই কারণেই বাংলাদেশের নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় এই প্রত্যাশা ভারতে রয়েছে। ভারত বাংলাদেশ সরকারকে বিভিন্ন সময়ে এই বার্তাটি সুস্পষ্ট ভাবে দিয়েছে।

২. সংবিধানকে সমুন্নত রাখা: ভারত বাংলাদেশে কোনভাবেই অনির্বাচিত বা অসাংবিধানিক সরকারকে ক্ষমতায় আনতে রাজি নয়, বরং সংবিধানসম্মত ভাবেই গণতন্ত্র নানা রকম ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাবে এটাই ভারতের প্রত্যাশা। সেই প্রত্যাশার আলোকে নির্বাচন যেন সংবিধান সম্মত সময় এবং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয় সেটি ভারত প্রত্যাশা করে।

৩. সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান যেন না ঘটে: বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক সেকুলার এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায় ভারত। বাংলাদেশের নির্বাচনের মাধ্যমে বা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কোন অসাংবিধানিক সরকার যেন ক্ষমতায় না আসে এটি ভারত প্রত্যাশা করে। আর এই কারণেই বাংলাদেশে উগ্র মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিহত করার বিষয়টি ভারত সবসময় সমর্থন করে এবং প্রত্যাশা করে যে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনায় বিকশিত হবে। 

৪. বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদদ দেয় এমন সরকার যেন ক্ষমতায় না আসে: ভারত মনে করে যে বাংলাদেশ যেহেতু ভারতের সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশী, সেজন্য বাংলাদেশের ভূখণ্ড অনেক সময় বিচ্ছিন্নতাবাদের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে। আর তাই এমন একটি সরকার বাংলাদেশের ক্ষমতা থাকা দরকার যারা বিচ্ছিন্নতাবাদের প্রশ্রয় দেয় না এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করে। ভারত মনে করে বর্তমান যে সরকার দায়িত্ব পালন করছে সেই সরকার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে যথাযথ এবং কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। আর সেই অবস্থানের কারণেই দুই দেশের সম্পর্ক আজ একটি অনুকরণীয় জায়গায় পৌঁছে গেছে। এই সম্পর্ককে অটুট রাখতে গেলে এমন সরকারকে ক্ষমতায় থাকতে হবে যারা কোন ভাবেই বিচ্ছিন্নতাবাদ, সন্ত্রাসবাদকে লালন করে না এবং তাদেরকে সমর্থন করে না।

৫. চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সতর্কতা: ভারত মনে করে যে, চীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে একজন অনিবার্য অংশীদার। চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে ভারতের কোন মাথাব্যথা নেই। কিন্তু বাংলাদেশ যেন কখনোই চীনের বলয়ে চলে না যায় বা চীন যেন বাংলাদেশের রাজনীতির ওপর নিয়ন্ত্রণ এবং প্রভাব বিস্তার না করে যেমনটি করেছে মালদ্বীপে, সেরকমটি প্রত্যাশা করে ভারতের সকল রাজনৈতিক দল। আর এই সমস্ত প্রত্যাশার জায়গাগুলো থেকেই বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে ভারত।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭