ইনসাইড পলিটিক্স

সুলতান মনসুর কি আওয়ামী লীগের টিকিট পাবেন?


প্রকাশ: 20/11/2023


Thumbnail

সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ একদা ডাকসুর ভিপি, ছাত্রলীগের সভাপতি। এক-এগারোর সময় সংস্কারপন্থি হয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। তারপর তিনি আওয়ামী লীগ বিরোধী হয়ে ওঠেন। ২০১৮ নির্বাচনে তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তার নির্বাচনী এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিএনপির সমস্ত সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করলেও সুলতান মনসুর জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেননি। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি কোন প্রতীকে কিভাবে নির্বাচন করবেন? এটি এখন একটি বড় প্রশ্ন হিসেবে সামনে এসেছে। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে, সুলতান মনসুর আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনতে চান। এই মনোনয়নপত্র কেনার জন্য তিনি আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। একই সাথে তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন। কিন্তু দুজনেই সুলতান মনসুরকে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার আওয়ামী লীগ সভাপতির বলেও এই দুই নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর জানিয়েছেন। তবে সুলতান মনসুর তার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের টিকিট চান। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান। এ কারণে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলার সুযোগ খুঁজছেন। প্রধানমন্ত্রীর সবুজ সঙ্কেত পেলেই তিনি শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনবেন বলে জানা গেছে। 

তবে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আওয়ামী লীগের সবুজ সংকেত পাবেন কিনা বা আওয়ামী লীগ সভাপতি তাকে মনোনয়ন দেবেন কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। অনেকে মনে করছেন যে, সুলতান মনসুর অতীতে যাই করুক না কেন যে, তিনি সংস্কারপন্থি ছিলেন। একদা আওয়ামী লীগ ছেড়ে বাকশালে গিয়েছিলেন ইত্যাদি সব পাপই শেখ হাসিনা ক্ষমা করে দেবেন। কারণ তিনি উদার, ক্ষমাশীল। অতীতে সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের চেয়েও খারাপ তৎপরতা চালিয়ে অনেককে আওয়ামী লীগের ফিরে এসেছেন। সেক্ষেত্রে সুলতান মনসুরকে আওয়ামী লীগের নিয়ে আসার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি ইতিবাচক ভূমিকা নিতে পারেন। কারণ সুলতান মনসুর সে সব রাজনীতিবিদদের একজন, যাদেরকে পচাঁত্তর পরবর্তীতে শেখ হাসিনা নিজের হাতে গড়ে তুলেছেন। সুযোগ সুবিধা দিয়ে তাদেরকে বড় নেতা বানিয়েছেন। আর এই কারণে তাদের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি আলাদা স্নেহের জায়গা রয়েছে। সেই স্নেহের জায়গা থেকে অতীতের ভুল ত্রুটি ক্ষমা করে দিয়ে তাকে মনোনয়ন দিতে পারেন।

অন্যদিকে কোন কোন মহল মনে করেন যে, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর যে আসনটি নিতে চান, সেই আসনটি নিয়ে নানারকম জটিলতা তৈরি হয়েছে। তাছাড়া এই ধরনের ব্যক্তিদেরকে আওয়ামী লীগকে নিয়ে আসলে তারা আবার চোখ উল্টোতে সময় নেবে না। কারণ বিভিন্ন সংকটকালে যারা দলের নেতৃত্বের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে, দলের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা হারিয়েছে তাদেরকে আবার দলে নিলে এটি দলের ভিতরে একটা ভুল বার্তা যাবে। নেতাকর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হবে নানা রকম বিভ্রান্তি। এর ফলে দলের ভিতরে অনেকেই বিশ্বাসঘাতকতা করা, বিদ্রোহ করা ইত্যাদি সাহস পাবে যা দলের জন্য ক্ষতিকারক হবে। সেই সমস্ত বিবেচনা থেকে সুলতান মনসুরকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নাও দেওয়া হতে পারে। তবে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর যদি শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পান আর বিএনপি যদি নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত না আসে তাহলে তিনি ঠিকানা বিহীন অবস্থায় কি করবেন নাকি তিনি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন এবং সময় সুযোগ মতো নির্বাচিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগে যোগদান করবেন। সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের ভাগ্য এখনও ঝুলে আছে শেখ হাসিনার ওপর।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭