ইনসাইড পলিটিক্স

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বিএনপির সব দরজা


প্রকাশ: 21/11/2023


Thumbnail

একে একে বিএনপির সব দরজাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিএনপি না পারছে আন্দোলন করতে না পারছে নির্বাচনে যেতে। এমনকি তাদের ভাষায় একতরফা নির্বাচনের পরও যে তারা আন্তর্জাতিক সহানুভূতি সমর্থন পাবেন এমন সম্ভাবনাও ক্রমশ নিঃশেষিত হয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল বরং আওয়ামী লীগের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে বলে বিএনপি নেতারা মনে করছেন। এরকম একটি বাস্তবতায় বিএনপির জন্য একরাশ হতাশা এবং তীব্র অস্তিত্বের সংকট দানা বেঁধে উঠেছে। বিএনপির দরজাগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন তাদের অদূরদর্শী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং ভুল কৌশল তাদেরকে এই অবস্থায় নিয়ে এসেছে। বিএনপির জন্য যে সব ক্ষেত্রে দরজাগুলো বন্ধ হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে:

১. নির্বাচনের আন্দোলন মুখ থুবরে পড়েছে: সাধারণ মানুষ এখন আন্দোলন পছন্দ করে না। তারা জ্বালাও-পোড়াও, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ইত্যাদিকে মোটামুটি ঘৃণা করে। বিএনপি সেই পথেই গেছে। একের পর এক অবরোধে তারা গাড়ি ভাঙচুর করেছে, নিরীহ মানুষের ওপর আক্রমণ করেছে, বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসী তৎপরতা করেছে। এর ফলে সাধারণ জনগণ বিএনপির ওপর ক্ষুব্ধ হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ বিএনপিকে আর পছন্দ করতে পারছে না। এই ধরনের পদ্ধতি জনগণের থেকে বিএনপিকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। 

২. আন্দোলনের গতি নেই: বিএনপি ধারণা করেছিল যে, তাদের নেতাকর্মীরা আন্দোলনে যাবে এবং হরতাল, অবরোধ ইত্যাদি সফল করার ক্ষেত্রে নির্ভীক ভূমিকা রাখবে। কিন্তু বিএনপির আন্দোলন গতিহীন হয়ে পড়েছে। নেতারা এখন বিভ্রান্ত, দ্বিধান্বিত। তারা এই সমস্ত আন্দোলনের সঙ্গে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত রাখতে পারছেন না। কর্মীরা হতাশ হয়ে যে যার মতো বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বিএনপির একটি বড় অংশ পদত্যাগ করছে এবং তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। 
৩. নির্বাচনে যাওয়ারও পথ বন্ধ: বিএনপির সিদ্ধান্তহীনতা, অযৌক্তিক রাজনৈতিক অবস্থান তাদেরকে নির্বাচন থেকেও দূরে রেখেছে। এখন এমন একটা অবস্থায় গিয়েছে যে বিএনপি নির্বাচনও করতে পারবে না। তাদের দলের অন্তত দুইশ জন নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। আরও কিছু নেতা আছেন যারা নির্বাচনের জন্য অযোগ্য। এরকম অবস্থায় বিএনপির জন্য নির্বাচন করার আর কোন পথ খোলা নেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আর নির্বাচনে গেলে বিএনপি ভাল ফলাফল করত, এমনকি সংগঠনকে গুছিয়ে নেওয়ার একটা সুযোগ পেত, সেই সুযোগও বিএনপি হারিয়েছে।
 
৪. আন্তর্জাতিক মহলও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে: আন্তর্জাতিক মহল বিএনপির নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত এবং ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপি যে সন্ত্রাস সহিংসতার রাজনীতির পথ বেছে নিয়েছে, তার ফলে অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছে এবং বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক মহল থেকে বিএনপি কোন সহানুভূতি বা সহযোগিতা পাচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত কয়েকটি দেশ বিএনপিকে নির্বাচনে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল এবং সেই পরামর্শ অনুযায়ী বিএনপিকে শর্তহীন সংলাপের কথাও বলেছিল। কিন্তু এসব কোন কিছুতেই কর্ণপাত করেনি। বরং বিএনপির একগুয়েমি রাজনীতির কারণে এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বিএনপির প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে এবং বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এর ফলে বিএনপি একটি বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। কারণ আন্তর্জাতিক মহলই ছিল বিএনপির শক্তির মূল উৎস। তারাই যখন বিএনপিকে সমর্থন দিচ্ছে না তখন একটি কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছে বিএনপি। 

একে একে সব দরজাই দলটির জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে কি এই নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপির কবর রচিত হবে? বিএনপির কফিনে কি শেষ পেরেক ঠুকছে?


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭