ইনসাইড পলিটিক্স

সংকটে শামীম ওসমান-নাহিদ এবং অন্যান্য


প্রকাশ: 21/11/2023


Thumbnail

আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক করতে চায়। এ কারণে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনের মাঠে নামানোর জন্য চেষ্টা চলছে। একই সাথে বিএনপিতে যারা নির্যাতিত নিপীড়িত এবং অমূল্যায়নের শিকার হয়েছেন, তারাও বিভিন্ন রাজনৈতিক প্লাটফর্ম তৈরি করছেন। বিএনপির মধ্যে যারা জনপ্রিয় নেতা, যারা রাজনীতি করতে চান, আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণের পক্ষেই। এজন্য বিএনপিতে বড় ধরনের ভাঙন শুরু হয়েছে। এই ভাঙনের অংশ হিসেবে বিএনপির বহু নেতাই দলত্যাগ করেছেন অথবা দলত্যাগ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করার অভিযোগে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই সমস্ত ব্যক্তিদের নিয়ে ইতোমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠেছে। তাদের মধ্যে তৃণমূল বিএনপি অন্যতম। 

শমসের মবিন চৌধুরী এবং তৈমুর আলম খন্দকারের নেতৃত্বে তৃণমূল বিএনপি আগামী নির্বাচনে তিনশ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়াও বিএনএম নামে আরেকটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। তারাও এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেশ কিছু আসনে প্রার্থী দেবে বলে জানা গেছে। জাতীয় পার্টিকে ছাপিয়ে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী আলোচনা চলছে। আর এই সমস্ত আলোচনার ফলে আওয়ামী লীগের দুর্গে কিছু কিছু জায়গায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। আর এই আতঙ্কের প্রধান কারণ হল এই সমস্ত দলগুলো যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাহলে আওয়ামী লীগের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতার ভাগ্য বিপর্যয় ঘটতে পারে। যেমন- নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমানের কথাই ধরা যাক। শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জের যে আসনটিতে দাঁড়িয়েছেন, সেই আসনেই তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকারের প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার কথা রয়েছে। তৈমুর আলম খন্দকার গত সিটি নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী হয়েছিলেন এবং ওই নির্বাচনে তিনি ভাল লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয়ে যান। ওই নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। এখন তিনি তৃণমূল বিএনপি নেতা। তিনি শামীম ওসমানের আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারেন এমন শঙ্কা করা হচ্ছে এবং শামীম ওসমানের আসনে তাকে প্রার্থী করার জন্য আওয়ামী লীগের আরেক নেতা সেলিনা হায়াৎ আইভী উৎসাহ উদ্দীপনা দিচ্ছেন। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জের একাধিক আসনে তৈমুর আলম খন্দকার প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারে। তার মধ্যে শামীম ওসমানের আসনটি অন্যতম। এই আসনে যদি তৈমুর আলম খন্দকার দাঁড়ান তাহলে নিশ্চিতভাবেই তিনি সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থন পাবেন। সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থন পেলে এই আসনে শামীম ওসমানের বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটার শঙ্কা রয়েছে। শামীম ওসমানের আসনটি তাই ঝুঁকির মধ্যে আছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

একই অবস্থা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের আসন। তিনি সিলেটের যে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাচ্ছেন সেই আসনে প্রার্থী হবেন শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপার্সন। এই আসনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদের ভাগ্য বিপর্যয় ঘটার শঙ্কা রয়েছে। কারণ শমসের মবিন চৌধুরীর পিছনে আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ কাজ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে শমসের মবিন চৌধুরীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। অন্যদিকে নুরুল ইসলাম নাহিদ এক সময় কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক ছিলেন। কমিউনিস্ট রাজনীতির কারণে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তিনি ততটা গ্রহণযোগ্য নন। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগের একটি অংশ শমসের মবিন চৌধুরীর পক্ষে কাজ করা শুরু করতে পারে। ফলে তারও ভাগ্য বিপর্যয় ঘটবে। এই দুটি আসন শুধু নয়, এরকম অনেকগুলোই আসন রয়েছে যেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে এবং আওয়ামী লীগের দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব না মিটলে এ সব আসনে আওয়ামী লীগের ভাগ্য বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭