ইনসাইড পলিটিক্স

আসছেন মেজর (অব:) হাফিজ-কর্নেল অলি?


প্রকাশ: 21/11/2023


Thumbnail

মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বিএনপির জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী নেতা। যদিও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে তার শেকড় আলগা হয়ে গেছে। তারেক জিয়ার প্রতি তার বিতৃষ্ণা এবং অনাগ্রহ এখন আর কোন গোপন বিষয় নয়। সংবাদ সম্মেলন করেই তিনি এই বার্তাটি দিয়েছেন। আর এই কারণেই মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজকে নিয়ে নানারকম গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। মেজর হাফিজ যদিও বিএনপি ত্যাগের কথা নাকচ করে দিয়েছেন। বরং তিনি মনে করেন, বিএনপির দলগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে পাশ কাটিয়ে। বিএনপির ভুল নেতৃত্বের বিষয়ও তিনি কথা বলতে কোন লুকোচুরি করেননি। এই মেজর হাফিজকে নিয়ে এখন আবার নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বিএনএমে যোগ দিতে পারেন এবং বিএনএম এর নেতৃত্ব দিতে পারেন এমন কথা ইতোমধ্যে আলোচনায় এসেছে। শাহ্ জাফর বিএনএমে যোগদানের পরপরই মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিনের কথা জোরেশোরেই আলোচিত হচ্ছে। 

শুধু মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন নন, এলডিপির নেতা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং জিয়াউর রহমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মী কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত অলি আহমেদেরও নির্বাচনে যোগদানের সম্ভাবনার কথা গুঞ্জরিত হচ্ছে। যদিও কর্নেল অলি আহমেদ এখন পর্যন্ত বলে যাচ্ছেন যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তিনি নির্বাচনে যাবে না। নির্বাচনের তফসিল তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। কিন্তু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন যে, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। আজকে যখন কর্নেল অলি আহমেদ এ ধরনের কথা বলছেন, কালকে যে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবেন না তা কেউ হলফ করে বলতে পারে না। 

তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, ইতোমধ্যেই কর্নেল অলি আহমেদের সঙ্গে বিভিন্ন মহল যোগাযোগ করেছে এবং তাকে নির্বাচনের ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্ররোচিত করা হচ্ছে। কর্নেল অলি আহমেদ চট্টগ্রামের আসন ছাড়াও অন্তত ১০ টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন এমন গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে এই সমস্ত বক্তব্যকে গুজব এবং অপপ্রচার হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছেন কর্নেল অলি আহমেদ। তবে মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন কোন কিছুকে গুজব বলে উড়িয়ে দেননি। তিনি বিএনএম বা অন্য কোন রাজনৈতিক দলে যোগদান না করলেও স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে পারেন এমন কথাও শোনা যাচ্ছে এবং তিনি নির্বাচন করলে ভোলার দুটি আসনে নির্বাচনে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে। 

আওয়ামী লীগ একটি কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করেছে। সেই কৌশলগত অবস্থানের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যারা এলাকায় জনপ্রিয় তাদেরকে নির্বাচনের মাঠে নামানো এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা মনোনয়ন পাননি কিন্তু জনপ্রিয় আছে তাদেরকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাড়ানোর সবুজ সঙ্কেত দেওয়া। আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্য হল নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো। অন্তত ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোটার যেন ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয় এটি আওয়ামী লীগ নিশ্চিত করতে চায় এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে এই নির্বাচনকে একটি গ্রহণযোগ্যতা দিতে চায়। সে লক্ষ্যে মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন বা কর্নেল অলি আহমেদের মতো স্থানীয় পর্যায়ে এলাকায় জনপ্রিয় জাতীয় নেতাদেরকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন সংসদের মর্যাদা বাড়বে, অন্যদিকে তেমনি আবার নির্বাচনের ব্যাপারেও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি তৈরি হবে। আর একারণেই নির্বাচনের আগে অনেক বড় ধরনের চমক আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

ইতোমধ্যেই বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এখন যদি মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন, কর্নেল অলি আহমেদ, আ স ম আবদুর রবের মতো ব্যক্তিরাও নির্বাচনে আসে তাহলে নির্বাচনের মাঠে বিএনপির বিরোধিতা গুরুত্বহীন তামাশায় পরিণত হবে। সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে আওয়ামী লীগ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭