কালার ইনসাইড

লন্ডনের সেন্ট মাইকেল হাসপাতালে ছেলের পাশে দিন কাটছে কুমার বিশ্বজিৎ’র


প্রকাশ: 23/11/2023


Thumbnail

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন কুমার বিশ্বজিতের ছেলে কুমার নিবিড়। তাঁর সঙ্গে থাকা তিন বন্ধুর সবাই দুর্ঘটনায় মারা যান। আর তখন থেকেই লন্ডনের সেন্ট মাইকেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রয়েছেন তিনি। ছেলের এই দুরবস্থায় গত আট মাস ধরে স্ত্রীসহ ঐ হাসপাতালে অবস্থান করছেন জনপ্রিয় এ কণ্ঠশিল্পী।

এদিকে ২২ নভেম্বর ছিল নিবিড়ের ২২তম জন্মদিন। এদিন নতুন একটি গানের কয়েকটি লাইন অবমুক্ত হয়েছে কুমার বিশ্বজিতের। দীর্ঘ আট মাস সুরের বাইরে থাকার পর গত মাসের শেষ সপ্তাহে সপ্তাহখানেকের জন্য দেশে এসেছিলেন তিনি। আর সেই সময় তিনি গানটিতে কণ্ঠ দিয়ে যান। গতকাল বুধবার এই শিল্পীর ফেসবুক পেজ থেকে গানের চারটি লাইনের একটি মিউজিক্যাল টিজার প্রকাশ করা হয়। গানটির নাম ‘নিবিড় অপেক্ষা করছে’। যেখানে শোনা যায়,

‘আমার বুকেই কেন বৃষ্টি অঝোরে ঝরে পড়ছে/ তবু সারাক্ষণ আমার হৃদয় মন...’

গানটির কথা লিখেছেন হাসানুজ্জামান মাসুম। সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন কিশোর দাস। শিগগিরই পুরো গানটি ‘প্ল্যাটফর্ম’ নামক ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রচার করা হবে।

গানটি প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে বিশ্বজিৎ বলেন, ‘শিল্পীর প্রাণ মরে যায় যখন, তখন গান গাওয়াটাই তার জন্য কঠিন হয়ে যায়। আর আট মাস ধরে একরকম বেঁচে থেকেও বেঁচে না থাকার মতো আছি আমি। এবার ব্যক্তিগত কিছু কাজে যখন দেশে যাই, তখন আমার স্নেহের দুই ছোট ভাই কিশোর ও বাপ্পী এসে ধরল গানটি গাওয়ার জন্য। বলল, “আপনার জন্যই গানটি করা।” গানটির কথা ও সুর ভালো লাগল। তার চেয়ে বড় বিষয় হলো, গানটিতে একটা আর্ত এবং অপেক্ষার বিষয় রয়েছে, যেটা আমাকে খুব স্পর্শ করেছে, তাই গাইলাম।’

গানটি বাবার প্রতি সন্তানের আশীর্বাদ উল্লেখ করে এ গায়ক বলেন, ২২ নভেম্বর আমার ছেলে নিবিড়ের জন্মদিন। কাকতালীয়ভাবে ২২ নভেম্বর ওর ২২তম জন্মদিনও। গানটির শিরোনামও ‘নিবিড় অপেক্ষা করছে’। তাই এই বিশেষ দিনে নিবিড়ের প্রতি এটা আমার আশীর্বাদ।

একমাত্র সন্তানের জন্মদিনের কথা স্বরণ করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘জন্মদিনটা নিবিড় তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের নিয়েই বিশেষভাবে আনন্দ উদ্‌যাপন করত। কিন্তু সবকিছু কেমন এলোমেলো হয়ে গেল। দুর্ঘটনায় ওর যে তিনি বন্ধুকে আমরা হারিয়েছি, তারা প্রত্যেকেই ছিল আমার সন্তানের মতো। ওদের সঙ্গে আমরা বাবা-মা দুজনই থেকেছি, ঘুমিয়েছি। সন্তান হারানোর বেদনা, যে কষ্ট ওদের বাবা-মা প্রতিনিয়ত পাচ্ছেন, আমরাও তা তিলে তিলে অনুভব করছি।’  

কুমার বিশ্বজিৎ আরও বলেন, ‘মনে পড়ছে, ২০২১ সালে আমার জন্মদিনে আমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য কাউকে কিছু না জানিয়ে কানাডা থেকে বাংলাদেশে চলে এসেছিল নিবিড়। আজ ওর জন্মদিন। কিন্তু...। আমার আর ওর মায়ের প্রতিটি দিন এখন কাটে হাসপাতালে। এটাই এখন আমাদের বাড়িঘর। একটু সময়ের জন্যও নিবিড়কে রেখে কোথাও যেতে ইচ্ছা করে না। আমাদের প্রতিটি দিন, প্রতিটি ক্ষণ কাটে একটা অপেক্ষা, একটা প্রত্যাশা ঘিরে; নিবিড় কথা বলবে, ফিরে আসবে।’

উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টায় দুর্ঘটনায় ডানডাস স্ট্রিট ওয়েস্ট থেকে হাইওয়ে ৪২৭–তে উঠার সময় সড়ক ডিভাইডারে ধাক্কা খেয়ে গাড়ি উল্টে গুরুতর আহত হন কুমার বিশ্বজিৎয়ের ছেলে কুমার নিবিড়। দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে চারজন আরোহী ছিলেন। দুই জন গাড়ির ভেতরেই মৃত্যুবরণ করে এবং একজন হাসপাতালে মারা যায়। তারা সবাই বাংলাদেশ থেকে আসা ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট। নিহত দীপ্ত (২০) টরন্টোর হাম্বার কলেজ, শাহরিয়ার (১৭) জর্জ ব্রাউন কলেজ এবং শ্রেয়া (১৭) ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টোতে পড়াশোনা করতো। আর কন্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ছেলে নিবিড় (২১) পড়তো সেনেকা কলেজে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭