ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মোসাদের হাত থেকে ফিলিস্তিনি হ্যাকারকে উদ্ধার করল তুরস্ক


প্রকাশ: 23/11/2023


Thumbnail

সম্প্রতি প্রভাবশালী এই গোয়েন্দা বাহিনীর একটি অভিযান ভণ্ডুল করে দিয়েছে তুরস্কের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা তথা এমআইটি। মোসাদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে ফিলিস্তিনি এক হ্যাকারকে। ইসরায়েলের হিট লিস্টে থাকা কে এই ফিলিস্তিনি হ্যাকার, আর মোসাদের কাছ থেকে তাকে কীভাবে উদ্ধার করল এমআইটি?

ফিলিস্তিনের এই তরুন হ্যাকারের নাম ওমার।  ২০১৫-১৬ সাল থেকেই ওমারকে গ্রেপ্তারে উঠেপড়ে লেগেছে তেলআবিব। সেই বছর হামাসের ছোড়া রকেট প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যর্থ হয় ইসরায়েল। ইসরায়েলের দুর্ভেদ্য আয়রন ডোম হ্যাক করার পিছে জড়িত ছিলেন ফিলিস্তিনের এই তরুণ।  এই ঘটনার পর সামনে আসে ওমারের নাম। তিন বছরের গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনার পর এ ঘটনার পেছনে ফিলিস্তিনি হ্যাকার ওমারের সম্পৃক্ততার সন্ধান পায় গোয়েন্দারা। আয়রন ডোম হ্যাক করা ছাড়াও গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে নজরদারি টুল তৈরি করেন এই হ্যাকার। তারপরই মোসাদের নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন তিনি।

গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে পড়াশোনা শেষ করেন ওমার। ওমারকে ধরতে প্রথমে ২০১৯ সালে নরওয়েজিয়ান একটি কোম্পানি থেকে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হলে, ইসরায়েল সম্পৃক্ততার সন্দেহে তিনি তা নাকচ করেন। ২০২০ সালে তুরস্কে চলে আসেন ফিলিস্তিনি এ হ্যাকার। ওমারের পূর্বের কর্মকাণ্ডের জন্য আগে থেকেই সতর্ক ছিল তুর্কি গোয়েন্দা সংস্থা। 

ইস্তাম্বুলে থাকার সময় ২০২১ সালের এপ্রিলে রাইদ গজল নামে এক মোসাদ এজেন্ট ওমারকে ফরাসি কোম্পানি থিঙ্ক হায়ারে চাকরির প্রস্তাব দেয়। তারপর ওমার সালেবি নামে আরেক মোসাদ এজেন্ট তাকে পুনরায় চাকরির প্রস্তাব দেয়। এমনকি একটি কোডিং সফটওয়্যার তৈরির জন্য ওমারকে ১০ হাজার ডলার দেওয়া হবে বলে জানায়। তবে এবার এই প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন ওমার। ২০২২ সালের জুনে নিকোলা রাডোনিজ নামে আরেক মোসাদ এজেন্ট তাকে ব্রাজিল অথবা ইস্তাম্বুলে চাকরির অফার করলে তিনি ইস্তাম্বুলে যোগদান করেন।

চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই ওমারকে বিদেশ ভ্রমণের লোভ দেখাতে থাকেন রাডোনিজ। এমন সংবাদ পেয়ে তাকে আগেই সতর্ক করে দেয় এমআইটি। ফলে রাডোনিজের প্রস্তাবে সাড়া দেন না ওমার। তবে হাল ছেড়ে দেয় না মোসাদ। ২০২২ সালে সেপ্টেম্বরে মালয়েশিয়ায় ছুটি কাটাতে যান ওমার। এ সময় এমআইটির কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স বিভাগ সম্ভাব্য অপহরণের বিরুদ্ধে সতর্ক করার পরে ওমারের সেলফোনে ট্র্যাকিং সফটওয়্যার ইনস্টল করে। আর সেখানে এমআইটির সন্দেহকেই বাস্তবে রূপ দেয় মোসাদ।

মালয়েশিয়া ভ্রমণকালীন ওমারকে কুয়ালালামপুর থেকে অপহরণ করে ৫০ কিলোমিটার দূরে একটি স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাটি টের পেয়ে যায় এমআইটি। তাৎক্ষণিকভাবে জানানো হয় মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষকে। আগে থেকেই ইন্সটল করে রাখা সফটওয়্যারের মাধ্যমে ওমারের সঠিক অবস্থান পাঠানো হয় মালয়েশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে। তারপর সেখানে অভিযান চালিয়ে ওমারকে উদ্ধারের পর নিয়ে আসা হয় ইস্তাম্বুলে। সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় অন্তত ১১ জনকে। তারপর থেকে এমআইটির তত্ত্বাবধানে গোপন স্থানে রয়েছে ফিলিস্তিনি এই হ্যাকার।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭