কালার ইনসাইড

শিহাব শাহীন ও শহীদুজ্জামান সেলিমের জীবনের সত্য ঘটনা এবার পর্দায়!


প্রকাশ: 23/11/2023


Thumbnail

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বিঞ্জ অ্যাপে মুক্তি পাচ্ছে শিহাব শাহীন পরিচালিত ওয়েব ফিল্ম ‘বাবা, সামওয়ানস ফলোয়িং মি’। অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যাওয়া এক তরুণীর জীবনে ঘটে যাওয়া সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি করা হয়েছে ওয়েব ফিল্মটি।

সিনেমায় নিজের জীবনের ঘটনা নিয়ে আসা নির্মাতাদের জন্য নতুন কিছু নয়। তবে কাকতালীয় ব্যাপার হলো ‘বাবা, সামওয়ানস ফলোয়িং মি’ এর ঘটনার সঙ্গে পরিচালক শিহাব শাহীন তো বটেই, অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিমের নিজের জীবনের ঘটনারও মিল আছে! এ ওয়েব ফিল্মটিতে বাবার চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন সেলিম।

ওয়েব ফিল্মটি নিয়ে নির্মাতা শিহাব শাহীন জানান, ‘আমার মেয়ে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া করে। পাশাপাশি সেখানে চাকরিও করে। হঠাৎ একদিন রাতে মেয়ে আমাকে ফোন দিয়েছে। তখন আমি ঘুমাচ্ছিলাম। মেয়ে কাজ থেকে ফিরছিল। ফোন দিয়ে মেয়ে বলে, হ্যালো বাবা, কিপ টকিং, ফোন কাটবা না! সামওয়ান’স ফলোয়িং মি। অর্থাৎ ‘বাবা, কেউ একজন আমাকে ফলো করছে, তুমি ফোন কাটবা না, আমার সঙ্গে কথা বলতে থাকো।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নির্মাতা বলেন, ‘আমি তখন কথা বলতে থাকলাম। মেয়ের কণ্ঠে ছিল আতঙ্ক আর আমার মধ্যে ছিল অস্থিরতা। ঐ রাতে এত দূরের দেশে মেয়ের জন্য কার কাছে সাহায্য চাইব বুঝতে পারছিলাম না। খুব দুশ্চিন্তায় পড়েছিলাম। কেননা, রাস্তার পথে কেউ তার পিছু নিয়েছে। সে আস্থা ও ভরসার জন্য সাহস চাচ্ছে তার বাবার থেকে, ভয়টা কাটাতে চাচ্ছে ফোনকল এর মাধ্যমে। সেই ঘটনাকে ধরে গল্পটি বলার চেষ্টা করেছি। তাতে আরেকটু ফিকশনাইজড করে, আরও চরিত্র, ঘটনা এনে গল্পটাকে একটু নাটকীয় করার চেষ্টা করেছি।’

বাস্তবে একই রকম একটা ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলেন শহীদুজ্জামান সেলিমের অস্ট্রেলিয়ায় পড়ুয়া মেয়ে। গতকাল গণমাধ্যমকে এই অভিনয়শিল্পী বলেন, ‘২০১৯-২০ সালের দিকে আমার মেয়ে যখন অস্ট্রেলিয়ায় পড়ত, তখন ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। শিহাব শাহীন যখন গল্পটা শোনাচ্ছিল, আর বলছিল, আমার মেয়ের জীবনে ঘটেছে। পত্রিকায় ছাপাও হয়েছে এই গল্প। আমি বললাম, কি বলো! আমার মেয়ের সঙ্গেও তো এমন ঘটনা ঘটেছে। সত্যিই একজন বাবার জন্য একটা বাজে অভিজ্ঞতা আছে। আমি বুঝতে পারছি তোমার আবেগটা। গল্পটা শোনার পর আমি কাজটা করতে সম্মত হই।’

পরিচালক শিহাব শাহীন বলেন, ‘সেলিম ভাই ব্রিলিয়ান্ট কাজ করেছেন। এই অর্থে বলছি, তাঁর জীবনে এ রকম একটা ঘটনা ঘটেছে। তাঁর মেয়েও অস্ট্রেলিয়ায় পড়ত। ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিল। আহত হয়েছিল। তাঁর জীবনেও এ রকম একটা বাজে সময় গেছে। লাইফ এক্সপেরিয়েন্স থাকায় গল্পের সঙ্গে ভালো রিলেট করতে পেরেছেন। কাজটা তাঁর জন্য সহজ হয়েছে। আমি যা চেয়েছি, তাই পেয়েছি। একজন বিপর্যস্ত বাবা দুঃসাহসী হয়ে যা করেন আর কি।’ পরিচালক আরও জানালেন, ছেলেমেয়ে বাইরে থাকলে দেশে বাবাদের কেমন লাগে, সেই ব্যাপার গল্পে তুলে ধরার চেষ্টা আছে।

ওয়েব ফিল্মটিতে মেয়ে বিজয়া চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাসনিয়া ফারিণ। গল্পে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় লেখাপড়া ও চাকরি করেন। মোট ১০ দিনের শুটিংয়ে ওয়েব ফিল্মটির কাজ শেষ হয়েছে। আগস্টে শুটিং শুরু হয়। পাঁচ দিন হয় বাংলাদেশে ও পাঁচ দিন অস্ট্রেলিয়ায়। ফারিণের শুটিং অস্ট্রেলিয়ায় হলেও শহীদুজ্জামান সেলিমের শুটিং হয়েছে ঢাকায়।

ওটিটিতে মুক্তির আগে আজ ওয়েব ফিল্মের বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। ফিল্মটির অভিনয়শিল্পী, কলাকুশলী ও বিনোদন অঙ্গনের তারকা-পরিচালকের উপস্থিতিতে ঢাকার মহাখালীতে আজ সন্ধ্যায় প্রদর্শনীটি হবে বলে জানালেন পরিচালক।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ সময় ধরে নাটক, টেলিছবি বানানো শিহাব শাহীন ওটিটিতে বানিয়েছেন একাধিক সিরিজ। তাঁর প্রথম ওয়েব ফিল্ম ছিল ‘দ্বিতীয় কৈশোর’। এরপর ‘যদি কিন্তু তবুও’ ও ‘মায়াশালিক’ বানিয়েছেন। এবার অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে নিজের মেয়ের জীবনে ঘটে যাওয়া একটি সত্য ঘটনাকে ‘বাবা, সামওয়ানস ফলোয়িং মি’ এর মাধ্যমে পর্দায় তুলে এনেছেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭