ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য জাপাকে এক’শ কোটি টাকা দিতে চেয়েছিল তারেক?


প্রকাশ: 23/11/2023


Thumbnail

বিএনপির টোপে পা দেয়নি জাতীয় পার্টি । শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করবে। জাতীয় পার্টি যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে এজন্য দলটিকে এক’শ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। তারেক জিয়ার পরিকল্পনা ছিল জাতীয় পার্টি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না আসে, তাহলে এই নির্বাচন ২০১৪ সালের মতোই অর্থহীন একটি নির্বাচনে পরিণত হবে। এবং তখন আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ আসবে, নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। 

২০১৪ সালেও জাতীয় পার্টিকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে আনার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল বিএনপি। সেই সময় বেগম খালেদা জিয়া জাতীয় পার্টিকে টোপ দিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়ার মাধ্যমে আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়াতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। আর সেই ধারাবাহিকতায় এবারও জাতীয় পার্টি টার্গেট ছিল বিএনপির।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সঙ্গে একাধিক সূত্র থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল এবং তাদেরকে এই আর্থিক প্রলোভন দেখানো হয়েছিল বলে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। অবশ্য জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় দুজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এই ধরনের বক্তব্যকে অস্বীকার করেছেন। তারা বলেছেন যে, জাতীয় পার্টি কারও প্রলোভনে নয়, বরং নিজেদের হিসাব নিকাশ থেকেই নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিদ্ধান্ত গ্রহণে দোদুল্যমানতা বা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিল না বলেও জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

তারা বলছে যে, যেকোনও একটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্ত তার নিজস্ব, আমরা সময় নিয়েছি, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলাপ করেছি, অবশেষে আমরা নির্বাচনে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছি। তবে জাতীয় পার্টির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছেন যে, চেয়ারম্যান জি এম কাদের এখনও নির্বাচনের ব্যাপারে অনাগ্রহী এবং তিনি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবেন কি না, এ নিয়েও খোদ জাতীয় পার্টির কারও কারও মধ্যে সন্দেহ সংশয় রয়েছে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, তারেক জিয়ার টোপের পর জাতীয় পার্টির বিভিন্ন মহলে নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। তবে জাতীয় পার্টির একটি বড় অংশ ছিল নির্বাচনমুখী। তারা মনে করছিলেন যে, শেষ পর্যন্ত যদি জাতীয় পার্টি নির্বাচনে না যায়, তাহলে এই দল অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে এবং এটি হবে বড় ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা। তাছাড়া, জাতীয় পার্টির নির্বাচনে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা রেখেছিলেন রওশন এরশাদ। জিএম কাদের আগেই কাজ সেরেছেন। তিনি নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, নির্বাচনের তফসিলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন এবং যারা নির্বাচনের পক্ষে তাদেরকে একত্রিত করেছেন। এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে, শেষ পর্যন্ত যদি জাতীয় পার্টি নির্বাচনে না যেত, তাহলে পরে জিএম কাদের একটি ক্ষুদ্র অংশ নিয়ে বিভক্ত হতেন। জিএম কাদের বুঝতে পেরেছেন যে, দলে তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ নন। 

অধিকাংশ বিএনপির নেতাই নির্বাচনের বিপক্ষে। এরকম অবস্থায় জিএম কাদেরসহ সিংহভাগ নেতাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে তিনি এখনও নির্বাচনের ব্যাপারে সংশয়াচ্ছন্ন। এখনও তিনি দেখবেন যে, নির্বাচন শেষ পর্যন্ত অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হচ্ছে কি না, নির্বাচনের ব্যাপারে সরকার কতটুকু তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে- ইত্যাদি। আর এসবের প্রেক্ষিতেই এখন পর্যন্ত এ জাতীয় পার্টি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে কী অবস্থায় থাকে তা নিয়ে এখনও কারও কারও সন্দেহ রয়েছে। তবে জাতীয় পার্টির বিভিন্ন নেতারা বলছেন যে, তারা নির্বাচনে যাবেন, এককভাবে নির্বাচন করবেন এবং তারেকের ফাঁদে পা দেওয়া হবে না।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭