ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নিষেধাজ্ঞায় গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটে কিউবা


প্রকাশ: 23/11/2023


Thumbnail

গভীর অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে কিউবা। কিউবা পর্যটন অর্থনীতির উপর নির্ভরশীল একটি দেশ। ২০২০ সালে করোনা মহামারী শুরু হলে দেশটি ব্যাপক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। করোনা চলাকালীন সময় থেকে কিউবায় অর্থনৈতিক সংকট শুরু হয়। বিগত কয়েক বছর যাবৎ দেশটিতে অর্থনৈতিক সংকট চলমান রয়েছে।

কিউবায় অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেই দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে কয়েকদফা আন্দোলন হয়। কমিউনিস্ট সরকার শাসিত দেশটির জনগণ এ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জন্য দায়ী করে দেশটির সরকারকে। এর ফলে এরপর হাজার হাজার জনগণ দেশজুড়ে বিক্ষোভ করে ।  

অর্থনৈতিক সংকট দেশটিতে ধীরে ধীরে ঘণীভূত হচ্ছে। দেশটির রাজস্ব কমতে শুরু করেছে। ফলে আমদানিনির্ভর দেশটির রিজার্ভে চাপ পড়ছে। প্রয়োজনীয় খাদ্য ও জ্বালানির বড় অংশ কিউবা আমদানি করে। এক দিকে আছে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞা, আরেক দিকে আছে পর্যটন খাতের দুরবস্থা। একসময় কিউবার অর্থনীতির মূল খাতই ছিল পর্যটন অথচ পর্যটন খাতের এই দুরবস্থা এখন দেশটির অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।

সম্প্রতি দেশটির জ্যেষ্ঠ নেতা ও মন্ত্রীরা টেলিভিশনের পর্দায় হাজির হয়ে অর্থনৈতিক সংকটের গুরুতর চিত্র হাজির করেছেন। নজীরবিহীনভাবে তাঁরা কিউবার অর্থনৈতিক সংকটের বিস্তারিত তুলে ধরছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, কমিউনিস্ট পার্টি–শাসিত দেশ কিউবায় টানা চার বছর ধরে অর্থনৈতিক সংকট চলছে। আমদানিনির্ভর এ দেশের রাজস্ব কমে গেছে, সেই সঙ্গে তৈরি হয়েছে বিদেশি মুদ্রার সংকট। আর এত সব সংকট নিয়েই এখন দেশটিকে চলতে হচ্ছে।

কিউবার অর্থনীতিবিদ ওমর এভারলেনি বলেছেন, দেশের মন্ত্রীরা যেমন বলেছেন, পরিস্থিতি তেমন গুরুতরই। এ বছর প্রবৃদ্ধি হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

দেশটির কৃষিমন্ত্রী ইদায়েল জেসাস পেরেজ বলেছেন, কিউবার শূকরের মাংস, চাল ও শুঁটিজাতীয় উদ্ভিদের উৎপাদন প্রাক্‌–সংকটকালের তুলনায় ৮০ শতাংশের কম, ডিমের উৎপাদনও কমেছে ৫০ শতাংশ। বাস্তবতা যা দাঁড়িয়েছে, তাতে জ্বালানি চাহিদার ৪০ শতাংশ, সারের চাহিদার ৪ শতাংশ আর প্রাণী খাদ্যের ২০ শতাংশ পাওয়া সম্ভব।

দেশটির প্রথম উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী তানিয়া মার্গারিতা ক্রুজ টেলিভিশনের এক উপস্থাপনায় বলেছেন, ‘২০১৯ সালের তুলনায় এসব উপকরণের অন্তত ৩০ শতাংশ স্বল্পতা তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া মৌলিক ওষুধের স্বল্পতা আছে ৬৮ শতাংশ। কিউবার হাসপাতালে এখন গজ ও তুলার মতো মৌলিক পণ্যের ঘাটতি তৈরি হয়েছে ‘

সমাজতান্ত্রিক দেশ কিউবায় ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা খুবই কম, গণপরিবহনই তাই ভরসা। কিন্তু জ্বালানিসংকটের কারণে দেশটির গণপরিবহন খাতের কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। ২০১৮ সালের পর কিউবার খাদ্য উৎপাদন, ওষুধ সরবরাহ ও যোগাযোগ খাতের সংকোচন হয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ–ঘাটতির কারণে চলতি বছরেও সেই ধারা অব্যাহত আছে।

দেশটির পরিবহনমন্ত্রী এদুয়োর্দো রদরিগেজ দাভিলা বলেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের আগে হাভানা শহরে দিনে ২ হাজার ৫০০ বাস চলাচল করত; চার বছর আগে যা নেমে আসে ৬০০ বাসে। এখন এই সংখ্যা ৩০০।

কিউবার মন্ত্রীরা জানিয়েছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্যবাহী যান চলাচল ২০১৯ সালের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে, শিল্পের সক্ষমতা এখন ৩৫ শতাংশ।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭