প্রকাশ: 23/11/2023
রাজধানীর
শাহবাগে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর সঙ্গে
তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্র
বের করে ফাঁকা গুলি
ছুড়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় একজন নেতা। এ
ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
ঘটনার পর শাহবাগ থানায়
দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে ওই আওয়ামী
লীগ নেতার অস্ত্রটি হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায়
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
পুলিশ
ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গত সোমবার রাত
সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগে বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বহির্বিভাগসংলগ্ন রসনাবিলাস নামের একটি রেস্তোরাঁর সামনে
গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এ
ঘটনায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ
মোশাররফ হোসেন শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের
সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। বর্তমানে তিনি ঢাকা মহানগর
দক্ষিণ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়।
সোমবার
রাতে গুলি ছোড়ার সময়
ঘটনাস্থলে ছিলেন শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের সাবেক
যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন কোতোয়ালসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী। তাঁদের
একজন বলেন, রসনাবিলাস রেস্তোরাঁর মালিক লিটন ১৭ নভেম্বর
শারফিন মিয়া নামের এক
কর্মচারীর বিরুদ্ধে টাকা চুরির অভিযোগ
তুলে তাঁকে ব্যাপক মারধর করেন। ওই কর্মচারীকে বাঁচাতে
গেলে মো. ইফতি নামের
আরেক কর্মচারীকেও মারধর করা হয়। পরে
তাঁদের চাকরিচ্যুতও করা হয়। ইফতির
গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক এক সহসভাপতি তাঁর
পরিচিত। ইফতি বিষয়টি ওই
নেতাকে জানালে তিনি শাহবাগের সাবেক
ছাত্রলীগ নেতা জাকিরকে নিয়ে
সোমবার রাতে রসনাবিলাস রেস্তোরাঁয়
যান।
ঘটনায়
অংশ নেওয়া ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার ভাষ্য,
স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কিছু
নেতা-কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার রাত
সাড়ে ১০টার দিকে রসনাবিলাস রেস্তোরাঁর
সামনে গিয়ে লিটনকে পান।
তাঁর সঙ্গে কর্মচারীদের মারধর ও চাকরিচ্যুতির বিষয়ে
কথা হচ্ছিল।
এমন
সময় মোশাররফ হোসেন সেখানে আসেন জানিয়ে ওই
ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘তিনি
এসে আমাকে বলেন, “এখানে কী? তুমি কী
করো এখানে?” আমি বললাম, ভাই,
কথা বলছি।’ কথা চলার এক
পর্যায়ে তিনি পিস্তল বের
করেন৷ পরপর দুটি ফাঁকা
গুলি ছোড়েন। লোকজন তাঁকে ঘিরে ফেললে তিনি
আরও একটি গুলি ছোড়েন৷
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে
গুলির খোসা উদ্ধার করে।
পরে রাতে শাহবাগ থানায়
স্থানীয় কাউন্সিলর (ঢাকা দক্ষিণের ২১
নম্বর ওয়ার্ড) আসাদুজ্জামানের উপস্থিতিতে পুলিশ কর্মকর্তারা দুই পক্ষের সঙ্গে
কথা বলেন।
থানায়
আলোচনার পর বিষয়টি ‘সমাধান’
হয়ে গেছে বলে দাবি
করেন কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি
আমার এলাকার মধ্যে হওয়ায় পুলিশ আমাকে বিষয়টি জানায়। পরে আমি থানায়
গিয়ে ঘটনা শুনলাম। মোশারফ
হোসেন ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ
করেন। তাঁর বক্তব্য ছিল,
হামলা থেকে আত্মরক্ষার জন্য
তিনি গুলি ছুড়েছেন। যেহেতু
নির্বাচনের তফসিলের পর এভাবে অস্ত্র
প্রদর্শন করা যায় না,
তাই পুলিশ তাঁর বৈধ অস্ত্রটি
জব্দ করে রাখে।’
তবে
শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের
সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মোশাররফ হোসেন
গুলি ছোড়ার কথা অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দোকান থেকে কর্মচারীদের টাকা
চুরিসংক্রান্ত ঘটনা নিয়ে দুই
কর্মচারীর মধ্যে মারামারি হয়৷ এক কর্মচারীর
পক্ষ হয়ে কিছু ছাত্র
এসে আরেক কর্মচারীকে মারধর
করেন৷ পরে শাহবাগ থানায়
ডেকে নিয়ে পুলিশ এটি
মীমাংসা করে দিয়েছে। গুলি
ছোড়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
এই
আওয়ামী লীগ নেতা আরও
বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি,
বিভিন্ন ধরনের মুভমেন্ট তো করতে হয়।
রাজনীতি করতে গেলে শত্রু
থাকে। কে কী করে,
সেটা কি আমরা বলতে
পারি? আমার বৈধ অস্ত্র
আছে। তবে আমি কোনো
গুলি ছুড়িনি।’ বিস্তারিত জানতে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) পুলিশ কর্মকর্তাদের
সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ
দেন তিনি।
যোগাযোগ
করা হলে শাহবাগ থানার
ওসি নূর মোহাম্মদ বলেন,
মোশাররফ হোসেনের কাছে লাইসেন্স করা
পিস্তল ছিল। দুই পক্ষের
মধ্যে হট্টগোলের এক পর্যায়ে তিনি
ফায়ার করেন (গুলি ছোড়েন)।
সম্ভবত দুটি গুলি ছোড়েন
তিনি। এ ঘটনায় কেউ
থানায় অভিযোগ করেননি। দুই পক্ষ নিজেরা
বসে সমাধান করে নিয়েছে। মোশাররফ
হোসেনের পিস্তলটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭