ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনে আসতে বিএনপিকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম: ঘটতে পারে নাটকীয় কিছু


প্রকাশ: 23/11/2023


Thumbnail

বিএনপি এখন নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত নির্বাচনী তফসিলকেও তারা প্রত্যাখ্যান করেছে। নির্বাচন বাতিল এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি টানা কর্মসূচি দিচ্ছে কিছুটা বিরতি দিয়ে দিয়ে। সে কর্মসূচির ধারায় আজ ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শেষ হয়েছে। আগামী রোববার থেকে আবার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

কিন্তু, এর মধ্যেই নাটকীয় অনেক কিছু ঘটতে যাচ্ছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে আওয়ামী  লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আজ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘অপেক্ষা করুন, অনেক নাটকীয় ঘটনা ঘটছে।’ কি নাটকীয় ঘটনা? এটি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানান জল্পনা-কল্পনা এবং আলোচনা। বিশেষ করে গতকাল বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক রুমিন ফারহানার সঙ্গে মার্কিন দূতাবাসের দুইজন কর্মকর্তার বৈঠকের পর আরও গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে আসার নাটকীয় ঘোষণা দিতে পারে। বিশেষত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাচ্ছে, বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে নিঃশর্তভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পর যদি কোন সমস্যা হয়, তাহলে সেই সমস্যাগুলো দেখা হবে এবং অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত যেন হয়, সেটি পশ্চিমা দেশগুলো তদারকি করবে। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে ভিসানীতি ঘোষিত হয়েছে সেই ভিসানীতিতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে যারা বাধা দেবে, যারা নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করবে, তাদেরকে ভিসানীতির আওতায় আনা হবে।

গত মে মাসে এই ভিসানীতি ঘোষণা করা হয় এবং সেপ্টেম্বরে তা কার্যকর করা হয়েছে বলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। আর এই ভিসানীতি অনুযায়ী যদি কোন দল বা ব্যক্তি নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করে এবং ভোট গ্রহণে বিঘ্ন ঘটায় তাহলে তিনি ভিসানীতির আওতায় আসবেন। সেই হিসেবে বিএনপির ভোট বর্জন এবং নির্বাচনী তফসিল প্রত্যাখ্যান করাও ভিসানীতির আওতাভুক্ত। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞায় পড়া উচিত বিএনপির শীর্ষনেতাদের। কিন্তু, এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই ভিসানীতির ব্যাপারে কোন বক্তব্য রাখেনি। বরং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, তারা বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন নিয়ে মোটামুটি চুপচাপ রয়েছে। তবে, বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, গোপনে মার্কিন দূতাবাস এবং যুক্তরাজ্যের দূতাবাস বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করে যাচ্ছে। গতকাল বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত সারাহ্ কুক আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং সেখানেও তারা নির্বাচন পেছানোর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পরিস্কারভাবে বলা হয়েছে যে, নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন ৩০ নভেম্বর থেকে দুই-চারদিন পেছালে তাদের কোন আপত্তি নেই। তবে ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হতেই হবে। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে যে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো যদি আসে তাহলে নির্বাচনের তারিখ পেছানো সম্ভব হতে পারে।  

আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শে শেষ পর্যন্ত কি নির্বাচনে আসবে? এটি নিয়ে এখন রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানামুখী আলাপ-আলোচনা। আগামী দুই একদিনের মধ্যেই বিষয়টি পরিস্কার হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭