ইনসাইড পলিটিক্স

তারেকের গোয়েন্দা নজরদারিতে বিএনপির দুই ডজন নেতা


প্রকাশ: 25/11/2023


Thumbnail

বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে যাবে না বলে এখন পর্যন্ত ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। এই ঘোষণার পরিবর্তন হবে না এমনটাই জানাচ্ছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। কিন্তু এই ঘোষণার মধ্যে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা মনোনয়নপত্র কেনা এবং জমা দেওয়ার জন্য গোপনে নানা রকম তৎপরতা চালাচ্ছেন এমন খবর চলে গেছে লন্ডনে। আর তাই তারেকের নিজস্ব  গোয়েন্দা বাহিনীকে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বিএনপির প্রায় দুই ডজন নেতার বিরুদ্ধে। এই নেতারা সরকারের সঙ্গে গোপনে আঁতাত করে নির্বাচনে যেতে পারে এমন কথা শোনা যাচ্ছে খোদ বিএনপির মধ্যে। এদের মধ্যে একজন আজ রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন যে, তিনি নির্বাচনে যাবেন না। কিন্তু তার কথায় আস্থা রাখতে পারছেন না বিএনপির শীর্ষ নেতারা। বরং তারা মনে করছেন যে, নির্বাচনে যাওয়ার আগে এ ধরনের নাটক অনেকই করে। বিশেষ করে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের ঘটনার পর বিএনপির কোন নেতাকেই এখন বিশ্বাস করতে পারছেন না লন্ডনের পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া।

জানা গেছে যে, রাজনৈতিক ডিগবাজি দেওয়ার মাত্র ২ দিন আগে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম তারেক জিয়ার সাথে ৫২ মিনিট কথা বলেছিলেন এবং এই কথায় তিনি কিভাবে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, কিভাবে সরকার বিরোধী আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে সে ব্যাপারে তার মতামত দিয়েছিলেন। কিন্তু এরকম ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এখন অন্যান্য নেতারাও একই নাটক করবে কিনা সে সম্পর্কে কেউই নিশ্চিত তথ্য দিতে পারেনি। তবে বিএনপি এখন কাউকেই বিশ্বাস করতে পারছে না এবং বিএনপিতে যে কেউ যেকোনো সময় ডিগবাজি দিতে পারে এমন গুঞ্জন রয়েছে। বিশেষ করে যারা নির্বাচনী এলাকায় জনপ্রিয়, এলাকায় যাদের একটা বড় ধরনের অবস্থান রয়েছে এবং কর্মীদের মধ্যে যাদের শক্ত ভিত্তি রয়েছে- এই সমস্ত নেতারাই তারেক জিয়া নজরদারিতে রয়েছেন।

বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের বাসা বাড়িতেও এখন তারেক জিয়ার ক্যাডাররা অবস্থান গ্রহণ করছেন। নেতারা কোথায় যাচ্ছেন, কার সাথে কথা বলছেন ইত্যাদি সব তদারকি করছেন। কোনো অবস্থাতেই যেন তারা মনোনয়ন ফরম কিনতে না পারেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারেন সেজন্য এই ক্যাডারদেরকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা ধরে তারা বিএনপি নেতাদেরকে পাহারা দিচ্ছেন। কিন্তু এই পাহারার মধ্যেও কিছু কিছু বিএনপি নেতা ফসকে গেছে এমন গুঞ্জনও রয়েছে।

বিএনপির অন্তত ১০ জন নেতার খবর পাওয়া গেছে যারা বিভিন্ন মাধ্যমে ইতোমধ্যে মনোনয়ন ফরম কিনে ফেলেছেন। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এই মনোনয়ন ফরম জমা দিতে হবে। বিএনপির বিভিন্ন নেতারা তাদের ট্যাক্স ফাইল ঠিক করছেন। যাদের ব্যাংক লোন ছিল, তারা ব্যাংক লোন পরিশোধ করছেন। এভাবে একটা নির্বাচনের প্রস্তুতি লক্ষ করা যাচ্ছে বিএনপির বিভিন্ন নেতার মধ্যে। তবে ঠিক কতজন শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন এই সম্পর্কে কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। সবকিছু নির্ভর করছে পারিপার্শ্বিক অবস্থার ওপর। অনেকে ভয়ে নির্বাচনে যাওয়ার আগ্রহ থাকলেও অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। আবার অনেকে দেখতে চাইছেন যে, শেষপর্যন্ত কি ঘটে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, বিএনপির অধিকাংশ মাঠ পর্যায়ের নেতারাই মনে করছেন যে, সরকারের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন করা হচ্ছে সেটি অর্থহীন এবং এই আন্দোলনের মাধ্যমে আর যাই হোক সরকারের পতন ঘটানো যাবে না। আর তাই তারা মনে করেন যে, কৌশলগত কারণে হলেও বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত। কিন্তু প্রকাশ্যে মুখ ফুটে এ ধরনের কথা
কেউ বলতে পারছেন না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭