ইনসাইড পলিটিক্স

তৃণমূল-বিএনএম প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না?


প্রকাশ: 27/11/2023


Thumbnail

আওয়ামী লীগের পর আজ জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি তাদের প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করল। জাতীয় পার্টি দুইশ ২৮৯ টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। কিন্তু এবার নির্বাচনকে ঘিরে যারা আলোচনায় এসেছিল, সেই দুটি রাজনৈতিক দল এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি। শমসের মবিন চৌধুরীর নেতৃত্বে তৃণমূল বিএনপি এবং শাহ জাফরের নেতৃত্বে বিএনএম এখন পর্যন্ত প্রার্থীদের নাম আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেনি। তবে দুটি দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, তারা প্রার্থীর কাজ চূড়ান্ত করে ফেলেছে, আগামীকাল আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে বলেও তারা ঘোষণা করেছে। 

কিন্তু একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে যে, এই দুটি রাজনৈতিক দলই প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না। দুটি রাজনৈতিক দলের প্রধান টার্গেট ছিল রাজপথে আন্দোলন করা বিএনপি। বিএনপির অনেক নেতা এবং সম্ভাব্য প্রার্থীরা তৃণমূল বিএনপি এবং বিএনএমকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে তারা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবেন। কিন্তু এই আশ্বাসের ওপর বিশ্বাস পাচ্ছে না তৃণমূল বিএনপি বা বিএনএম কেউই। তারা বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যারা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, বিভিন্ন এলাকায় জনপ্রিয় নেতাদের সাথেও কথা বলেছেন, তাদেরকে আশ্বাসও দিয়েছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেউই বিএনপি ছেড়ে তৃণমূল বিএনপিতে আসার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছেন না শেষ পর্যন্ত। যারা বিএনপি ছেড়ে তৃণমূল বা বিএনএমে যোগদান করছেন তারা বিএনপিতে খুবই গুরুত্বহীন এবং জাতীয় নির্বাচনে তারা মনোনয়ন পেতেন এমন কোন সম্ভাবনাও নেই। বিএনপিতেই তাদের অবস্থান নড়বড়ে। এই সমস্ত ব্যক্তিদের নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপি বা বিএনএম কি করবে তা নিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যেই সংশয় দেখা দিয়েছে। এখন এই দুটি দলই আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি বা কোন কোন আসনে আওয়ামী লীগ যদি তাদেরকে ছাড় দেয় এরকম প্রত্যাশা করছে। 

কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সুস্পষ্ট অবস্থান হল যে নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। এখানে কোন রকম কারচুপি বরদাস্ত করা হবে না। আর তাই যদি শেষ পর্যন্ত তৃণমূল বিএনপি যাদেরকে টার্গেট করেছিল বা বিএনএম যাদেরকে লক্ষ্য করে নির্বাচনের পরিকল্পনা সাজিয়েছিল, তারা যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে বা বিএনপি থেকে যদি সরে না আসে তাহলে পরে এই দুটি দলের প্রার্থীরা জাতীয় নির্বাচনে খুব প্রভাব বিস্তার করতে পারবে বলে মনে হয় না। আর এটি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ভাল মতোই জানে। এই কারণে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডামি প্রার্থী দেওয়ার কথা বলেছেন। একই ভাবে আজ ওবায়দুল কাদের দলীয় কর্মীদেরকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন। এর ফলে নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপি বিএনএমের চেয়ে জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা বেশি কার্যকর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের একজন নেতাও স্বীকার করেছেন যে, নির্বাচন যদি উৎসবমুখর হয় বা ভোটারদের যদি ভোটকেন্দ্রে বেশি করে নিয়ে আসতে হয় সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। গাজীপুরের যে মডেলে নির্বাচন হয়েছিল সেই মডেলে যদি নির্বাচন করা যায় অর্থাৎ আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে একজন শক্তিশালী বিদ্রোহী প্রার্থী সেক্ষেত্রে নির্বাচন ভোটার উৎসবমুখর হবে বলে আওয়ামী লীগ মনে করছে। সেভাবেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনী কৌশল তৈরি করছে।

আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, আমরা কারও ওপর নির্ভরশীল নই। বরং আমরা নির্ভর করছি আওয়ামী লীগের শক্তির ওপরেই।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭