এডিটর’স মাইন্ড

মান্না কেন বড়শিতে বিঁধলেন না


প্রকাশ: 27/11/2023


Thumbnail

প্রায় দু সপ্তাহ নীরব থাকার পর মাহমুদুর রহমান মান্না আবার সরব হয়েছেন। আবার রাস্তায় এসে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন। কিন্তু গত দু সপ্তাহ তিনি কোথায় ছিলেন? বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, এ সময় মান্না সরকারের সাথে নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে দেন দরবার করেছিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত দেন দরবারের রফা হয়নি। সেই কারণেই মান্না এখন আবার সরব হয়েছেন। আবার বিরোধী দলের লড়াকু সৈনিক হিসেবে মাঠে নেমেছেন। মাহমুদুর রহমান মান্না যা চেয়েছিল তা দেওয়া সম্ভব হয়নি। 

তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে, একদিকে যেমন মান্না সরকারের সঙ্গে সংলাপ করেছিলেন, অন্যদিকে লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার সাথেও যোগাযোগ করেছিলেন। তারেক জিয়ার যে টোপ সেটি বেশি মাত্রায় লোভনীয় হওয়ার কারণে তিনি সরকারের টোপ গেলেননি। আর এ কারণেই মাহমুদুর রহমান মান্না আবার আগের অবস্থানে ফিরে গেছেন। 

২৮ অক্টোবর বিএনপির তাণ্ডব, নাশকতার পর বিএনপি ব্যাকফুটে চলে যায় এবং এই ব্যাকফুটে যাওয়ার পর থেকেই বিএনপির কোনো কোনো নেতা সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা করে। বিএনপির শীর্ষ নেতারা গ্রেপ্তার হয়ে গেলে সামনে চলে আসেন মাহমুদুর রহমান মান্না। মাহমুদুর রহমান মান্না নিজে থেকেই সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন এবং নির্বাচনে যাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে চান এমনটাই বলেছিলেন। এরপর সরকারের সঙ্গে তার কয়েক দফা বৈঠক হয়, যেসব বৈঠকে মান্না নির্বাচনকালীন সরকারে তার মন্ত্রিত্ব, বগুড়ার একটি আসনে তার নিশ্চিত বিজয় সহ আরও বেশ কিছু দাবিদাওয়া দিয়েছিলেন। কিন্তু সরকার থেকে তাকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় যে, নির্বাচনকালীন সরকারে অনির্বাচিত কোন মন্ত্রীদের রাখার সুযোগ নেই। 

দ্বিতীয়ত, নির্বাচনে বগুড়া আসন থেকে তিনি জিতবেন কি জিতবেন না এটি সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভর করে ভোটারদের অভিপ্রায়ের ওপর। ভোটাররা যদি ভোট না দেন তাহলে সরকার কাউকে জিতিয়ে আনতে পারে না। অন্যদিকে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে হাতছাড়া করতে চাননি লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। আর এ কারণেই মান্না যেন শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে থাকেন এই জন্য তাকে লোভনীয় অফার দেওয়া হয় এবং ভবিষ্যতে তার জন্য অনেকগুলো সুখবর আছে এমন আশ্বাসও দেওয়া হয়। সবকিছু হিসাব নিকাশ মিলিয়ে মান্না শেষ পর্যন্ত তারেক জিয়ার বড়শিতে বিদ্ধ হচ্ছেন এমন কথা রয়েছে। 

মান্না অবশ্য সরকারের বড়শিতে বিদ্ধ না হওয়ার একটি বড় কারণ ছিল যে তিনি যেভাবে বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন বা বিএনপি নির্বাচনে আসবেন বলে পরিকল্পনা নিয়েছিলেন সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। কারণ বিএনপির মধ্যে একটি বড় অংশ আন্দোলনকে শেষ পর্যন্ত দেখা এবং নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করার নীতিতে বিশ্বাসী। দলছুট হয়ে কেউই ঝুঁকি নিতে চাননি এবং বিশ্বাসঘাতক হিসেবে পরিচিত হতে চাননি। অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে তারা দেখেছেন, যারা বিএনপি ছেড়ে চলে গেছেন তারাই রাজনীতিতে এতিম এবং পরিত্যক্ত হয়েছে। এ কারণেই বিএনপির মধ্যে যারা নির্বাচন করতে আগ্রহী, তারাও ঝুঁকি নেওয়ার সাহস পাননি। আর এ কারণেই শেষ পর্যন্ত মান্নার মিশনও ব্যর্থ হয়েছে। মিশন ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি আবার বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। কিন্তু মান্নারা সব সময় সুযোগসন্ধানী। সুযোগের রাজনীতি তাদের কাছে শুধু মাত্র কিছু পাওয়া না পাওয়ার হিসেব। যখন তার পাওয়া না পাওয়ার হিসেব মেলেনি, তখন তিনি আর সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় যাননি। নিশ্চয়ই সরকারের কাছ থেকে তিনি যা পেতেন তার চেয়ে বেশি পেয়েছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭