ইনসাইড পলিটিক্স

ঘর সামলাতে হিমশিম আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 29/11/2023


Thumbnail

হুমকির মুখে পড়েছে আওয়ামী লীগের শতাধিক প্রার্থী। তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বটে কিন্তু মনোনয়ন পাওয়ার পরও তাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কারণ প্রত্যেকটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে অন্তত ১২ জন বর্তমানে সংসদ সদস্যরা আছেন। আজ নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে যে, পদত্যাগ না করেও সংসদ সদস্যরা নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন৷ ফলে এই স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এবং অনেক এলাকায় জনপ্রিয় প্রার্থীরা এবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘর সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে আওয়ামী লীগ।

২৯৮ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত হিসাবে দেখা গেছে, ২০৬ টি আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং সে ব্যাপারে তারা প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন। 

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, এলাকায় যাদের জনপ্রিয়তা আছে, এলাকায় যারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন এবং যারা মনে করেন যে, নির্বাচনে দাঁড়ালে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর যে তারা ভালো করবে, এরকম প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হওয়ার মিছিলে যোগ দিয়েছেন। তিন ধরনের আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। প্রথমত, যারা সংসদ সদস্য ছিলেন কিন্তু এবার নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি, এ রকম প্রার্থীদের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১২ জন। তবে এটি বাড়তেও পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে কয়েকজন এলাকায় জনপ্রিয় এবং তারা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারেন।

সিরাজগঞ্জ-২ আসনে বর্তমান এমপি ডা: হাবিবে মিল্লাত মুন্না প্রার্থী হয়েছেন। তিনি যেকোনো বিচারে জান্নাতুল হেনরীর চেয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী বলে এলাকাবাসীরা মনে করছেন। কারণ পাঁচ বছর এমপি থাকার কারণে সংগঠন এবং তার লোকজন সংঘবদ্ধ এবং তারা যদি নির্বাচনে করেন তাহলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী একটি বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়বেন। একই অবস্থা রাজশাহী-৪ আসনে। সেখানে বর্তমান এমপি এনামুল হককে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি৷ অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি পৌরসভার চেয়ারম্যান। এই আসনটিতেও যদি শেষ পর্যন্ত প্রার্থী পরিবর্তন না হয় তাহলে বর্তমানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থী কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছেন। এছাড়াও ১২ টি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়া এমপিরা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবেন দলীয় প্রার্থীদের এমন শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। 

আবার দ্বিতীয় যে ধরনের প্রার্থীরা বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন যারা উপজেলা চেয়ারম্যান বা স্বতন্ত্র হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যান বা পৌরসভার মেয়র হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এদের অবস্থান অত্যন্ত সংহত এবং এদের একটি কর্মী সমর্থক গোষ্ঠী রয়েছে। এখন যদি তারাও আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ান, তাহলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জন্য তারা বড় ধরনের হুমকি হিসাবে বিবেচিত হবেন। 

তৃতীয় ধারার যারা আছেন তারা হলেন দলের ত্যাগী পরীক্ষিত নেতারা। যারা গত ১৫ বছরে কিছুই পাননি। এক রকম অভিমান থেকে তারা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। এঁরা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারাতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে এরা আওয়ামী লীগের ভোট কাটবেন এবং এই সমস্ত আসনে তৃতীয় ব্যক্তির নির্বাচিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আর এরকম একটি বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ঘর সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭