ইনসাইড পলিটিক্স

কারাগারে কোন কোন বিএনপি নেতার সাথে সরকারের আলোচনা হয়েছে?


প্রকাশ: 01/12/2023


Thumbnail

বিএনপি নেতা শাহজাহান ওমরের আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার নাটকীয় ঘোষণার মধ্য দিয়ে থলের বিড়াল বেরিয়ে এসেছে। বিএনপির নেতারা যতই বলুক না কেন, তারা সরকারের সঙ্গে আপস করছে না, কোন সমঝোতা করছে না, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করবে না বা নির্বাচন হতে দেবে না, বাস্তবে সরকার বিএনপির সঙ্গে একটি গোপন সমঝোতা করছে। যে সমস্ত বিএনপি নেতারা কারান্তরীণ আছেন তাদের সাথেই আলোচনা হচ্ছে। তাদেরকে সবাইকে যে আওয়ামী লীগ বা সরকার নির্বাচনে আনার জন্য চেষ্টা করছে এমনটি নয়। বরং এদের মধ্যে একটি অংশকে সরকার বুঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে নির্বাচনটি হয়ে যাক, নির্বাচনের পরে বিএনপির সঙ্গে আলাপ আলোচনা করা যাবে এবং বিএনপির যে সমস্ত রাজনৈতিক সুযোগ সুবিধা দরকার সেগুলো বিবেচনা করা যেতে পারে। আর এই শর্তেই বিএনপির নেতারা এখন আরাম আয়েশে কারাগারে রয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

বিএনপি নেতাদের মামলা, তাদের ভবিষ্যৎ এবং ব্যক্তিগত নানা দেন দরবারের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছে। আর এই সমস্ত আলোচনার সূত্র ধরেই বিএনপি এখন ঢিমেতালে আন্দোলন করছে। তাদের আন্দোলনের কৌশল সাধারণ কর্মীদের কাছে বিরক্তির কারণ সৃষ্টি করেছে। 

শাহজাহান ওমর কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন এবং তিনি কারা মুক্তির পরদিনই মনোনয়নপত্র জমা দেন এবং তাকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেন। এভাবে নাটকীয়ভাবে ঘটা সম্ভব নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, শাহজাহান ওমর যখন জেলে ছিলেন, তখনই সরকারের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়েছে এবং এই যোগাযোগের ভিত্তিতেই তিনি নির্বাচনে যাওয়ার জন্য রাজি হয়েছেন। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে, সরকার তিনটি বিকল্প নিয়ে বিএনপির অন্তত এক ডজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং আলাপ আলোচনা করেছে। এই তিনটি এজেন্ডার মধ্যে প্রথমটি ছিল বিএনপির একটি অংশকে নির্বাচনে নিয়ে আসা। এতে অধিকাংশ বিএনপি নেতা তার রাজি হয়নি। দ্বিতীয় ছিল ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচনে আসা। যেটি শাহজাহান ওমর করেছেন। তৃতীয় ছিল নির্বাচনের সময় পর্যন্ত চুপচাপ থাকা। নির্বাচনের পরে বিএনপির নেতাদের মামলা এবং অন্যান্য বিষয়গুলোর দিকে দৃষ্টি দেওয়া হবে, একটি সমঝোতার চেষ্টা করা হবে। এই তিনটি বিকল্পের মধ্যে তৃতীয় বিকল্পে বিএনপির অধিকাংশ নেতা রাজি হয়েছেন। 

সাম্প্রতিক সময়ে কিছু কিছু ঘটনা লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে যে, বিএনপির সঙ্গে সরকারের এক ধরনের সমঝোতা হয়েছে। যেমন বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস তার দুর্নীতি মামলার রায় হওয়ার কথা ছিল গত বৃহস্পতিবার। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বিএনপির ওই নেতার বিরুদ্ধে রায় স্থগিত করা হয়েছে। রায় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুস্পষ্টভাবে কোন কোন মহল মনে করছেন যে, সরকারের সঙ্গে মির্জা আব্বাসের একটি গোপন সখ্যতা এবং তার ভিত্তিতে একটি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ব্যাপারেও একই কথা প্রযোজ্য। তার সঙ্গেই সরকার সবার আগে যোগাযোগ করেছে এমন নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচনের ব্যাপারে রাজি নন বা নির্বাচনে যাবেন না বলে। তবে নির্বাচন হওয়ার ক্ষেত্রে তিনি বড় ধরনের কোনো বাধা দেবেন না—এমন একটি সমঝোতা তার সঙ্গে হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। মির্জা আব্বাস, মির্জা ফখরুল ছাড়াও কারাগারের বাইরে থাকা বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, এই সমস্ত সমঝোতার কারণেই বিএনপির আন্দোলন এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭