ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে ছাড় দেবে বিএনপি?


প্রকাশ: 01/12/2023


Thumbnail

তাহলে কি আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে সমঝোতা হয়েই গেল! নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপি এরকম ঢিমেতালে আন্দোলন করবে এবং এই আন্দোলনের ফাঁক দিয়ে সরকার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করবে। নির্বাচনের পর রাজনৈতিক সমঝোতা এবং রাজনৈতিক ঐক্যের ডাক দিতে পারে আওয়ামী লীগ এবং তখন বিএনপির নেতাদের সঙ্গেও আলাপ আলোচনা এবং বৈঠক হতে পারে। বৈঠকের ভিত্তিতেই শেষ পর্যন্ত একটি রাজনৈতিক সমঝোতায় উপনীত হতে পারে দেশ। এমন একটি সমঝোতার কথা এখন আকাশে বাতাসে শোনা যাচ্ছে৷ বিশেষ করে বিএনপির নেতা শাহজাহান ওমরের নৌকার প্রার্থী হওয়ার পর এই গুঞ্জন আরও পল্লবিত হয়েছে। যদিও বিএনপি নেতারা এ ধরনের সমঝোতার কথা অস্বীকার করেছেন। 

তারা বলছেন যে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তাদের আন্দোলন অব্যাহত আছে এবং এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে এরকম নির্বাচনে যেন ভোটার উপস্থিতি উপস্থিত না থাকে সেজন্য ভোটারদের ঘরে ঘরে তারা যাবেন। কিন্তু বিএনপি যে থেমে থেমে অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করছে বা হরতাল দিচ্ছে সেটি ইতোমধ্যেই অকার্যকর হয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার ১২ ঘণ্টার হরতাল শেষে আজ এবং আগামীকাল দু দিনের বিরতি। রোববার থেকে আবার দেশে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধে ডেকেছে বিএনপি। কিন্তু সাধারণ মানুষ এই ধরনের অবরোধ মানছে না। বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ছাড়া এই ধরনের অবরোধের কোন কার্যকারিতা নেই বললেই চলে। 

বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রথম দিকে অবরোধে দেখা গেলেও আস্তে আস্তে বিএনপির নেতাদেরকে আর দেখা যাচ্ছে না। বরং তারা ঘরেই চুপচাপ বসে আছে। আগে একটা কথা বলা হত যে, বিএনপি নেতারা আত্মগোপনে আছেন, পলাতক আছেন। এই জন্য তারা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। কিন্তু এখন সেই ভয় কেটে গেছে। বিএনপি নেতাদেরকে এখন প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে, কিন্তু তারপরও তারা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন না। নামকাওয়াস্তে একটি কর্মসূচি দিয়ে তারা চুপচাপ ঘরে বসে আছেন। তার অর্থ কি এই যে, আওয়ামী লীগ নির্বাচন করে ফেলুক তারপর দেখা যাবে নাকি সরকারের সঙ্গে বিএনপির একটি সমঝোতায় এলো।

বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, তারা এখনও বিশ্বাস করে যে সরকার শেষ পর্যন্ত ৭ জানুয়ারি নির্বাচন করতে পারবে না। কিন্তু সরকার ইতোমধ্যে আশাবাদী উল্লসিত এবং তারা নির্বাচনে যে কৌশল তৈরি করেছে সেই কৌশলে এবার ২০১৪ বা ২০১৮ এর মতো নির্বাচন হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। বরং এবারের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একটা বড় ফ্যাক্টর হিসাবে দাঁড়াতে পারে। কারণ আওয়ামী লীগের শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রতিপক্ষ প্রায় সব আসনেই থাকছে। এর ফলে এই নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। কোথাও কোথাও সহিংস হয়ে উঠতে পারে। তাই এই নির্বাচনে ভোটারদেরকে দূরে সরিয়ে রাখার কৌশল পুরোপুরি ভাবে অকার্যকর হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে, আন্তর্জাতিক মহল বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচনে কি হয় তারপর সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছে। বিএনপিও একই রকম কৌশল নিতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। তারা মনে করছেন যে, বিএনপি আসলে আগে নির্বাচন দেখতে চায় এবং তারা মনে করছে যে, নির্বাচনের পরে পরিস্থিতি এমন হবে যে সরকার বিরোধী আন্দোলন তীব্র করার একটি সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হবে। বিএনপি সেই সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭