ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা চায় জাতীয় পার্টি


প্রকাশ: 02/12/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এককভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছিল। এই ঘোষণা দেওয়ার পর জাতীয় পার্টি বিভিন্ন আসনে তাদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে৷ এখন পর্যন্ত জাতীয় পার্টি তিনশ আসনের মধ্যে ২৮৭ টি আসনে একক প্রার্থী দিয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে যখন আওয়ামী লীগের একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড়িয়ে গেছে, তখন জাতীয় পার্টি কিছুটা শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং কয়েকটি আসনে সমঝোতার জন্য প্রস্তাব করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ তাদের সাথে আসন সমঝোতা করবে কি না সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত না পাওয়া যায়নি৷ 

জাতীয় পার্টির একজন নেতা বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে এবং আসন সমঝোতার ব্যাপারে নীতিগত প্রশ্নে তারা একমত হয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কোনো সূত্রই এই তথ্যকে সমর্থন করেনি। বরং আওয়ামী লীগ বলছে যে, শুরু থেকে জাতীয় পার্টি বলেছে তারা একক নির্বাচন করবে এবং সেজন্যই আওয়ামী লীগ কোনো আসন বণ্টনে যায়নি। উন্মুক্ত নির্বাচনে জাতীয় পার্টি যে কয়টি আসনে জয়ী হয় সে কয়টি আসন নিয়ে তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হবে। এর ফলে জাতীয় পার্টি বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। বিশেষ করে বৃহত্তর রংপুর এবং সিলেট ছাড়া কোথাও জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা ভালো নয় এবং এই সমস্ত আসনে জাতীয় পার্টির নিশ্চিত ভরাডুবির শঙ্কার রয়েছে। 

বৃহত্তর রংপুরে জাতীয় পার্টি কতটুকু কি করবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। কারণ রংপুর অঞ্চলে জাতীয় পার্টির গুরুত্বপূর্ণ নেতা মশিউর রহমান রাঙ্গা এবার মনোনয়ন পাচ্ছেন না। এখনকার স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নও নির্বাচন কমিশন যাচাই বাছাই স্থগিত করে দিয়েছে। মশিউর রহমান রাঙ্গা যে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে কাজ করবেন এটা মোটামুটি নিশ্চিত। এর ফলে রংপুরের ছয়টি আসনে জাতীয় পার্টি বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে পারে। একই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে গাইবান্ধা, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম সহ বৃহত্তর রংপুরের অন্যান্য আসনগুলোতে।

জাতীয় পার্টির কিছুটা ভাল অবস্থান রয়েছে সিলেট অঞ্চলে। সেখানেও আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন এবং এই সব আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও প্রার্থী হচ্ছেন। সিলেট অঞ্চলে তৃণমূল বিএনপিরও ভালো অবস্থান রয়েছে। এই আসনগুলোতে যদি জাতীয় পার্টি সমঝোতা করতে না পারে তাহলে পরে তাদের নিশ্চিত ভরাডুবি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, সরকার জাতীয় পার্টির সঙ্গে যদি আসন সমঝোতাও করে তাহলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ব্যাপারে কোন কিছু করতে পারবে না৷  আর এবারের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী। যদি জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন সমঝোতা করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা বসে যান, প্রত্যাহার করেন বা নিষ্ক্রিয় হয়ে যান সেক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একাট্টা হবেন এবং আওয়ামী লীগের ভোট গুলো চলে যাবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেবেন না এমনটি মোটামুটি নিশ্চিত। এরকম পরিস্থিতিতে জাতীয় পার্টির সাথে কোন প্রক্রিয়া কিভাবে সমঝোতা হবে সেটিও এখন একটি দেখার বিষয়। আর শেষ পর্যন্ত যদি সমঝোতা না হয় তাহলে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে কিনা সেই প্রশ্নটিও এখন ক্রমশ সামনে উঠে এসেছে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় পর্যন্ত এ নিয়ে নানারকম দর কষাকষি হবে বলেও রাজনৈতিক মহল মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭