ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় সন্তুষ্ট পশ্চিমা বিশ্ব, সুশীলরা বলছে লোক দেখানো


প্রকাশ: 03/12/2023


Thumbnail

নির্বাচন কমিশন গত কয়েকদিন অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে চলে গেছে। একদিকে যেমন তারা বিভিন্ন আসনে প্রার্থীদেরকে শোকজ করছে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে। অন্যদিকে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রাখার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করছে।

ইতোমধ্যে সব ওসিদেরকে বদলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যে সমস্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছয় মাস বা এক বছর বা তার বেশি সময় আছেন তাদেরকে প্রত্যাহার করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এই নির্দেশনা যেন কার্যকর হয়, সেই ব্যাপারেও নির্বাচন কমিশন সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। এই সমস্ত পদক্ষেপগুলির ফলে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের একটি আবহ তৈরি হয়েছে।

বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলো, যারা বাংলাদেশের নির্বাচনকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, তারা নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগে সন্তুষ্ট। নির্বাচনের আগে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেওয়া এবং সকল প্রার্থী যেন সমান সুযোগ-সুবিধা পায়, এই নির্বাচন উৎসবমুখর হয়, সেই সেটি নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কঠোর ভূমিকা প্রত্যাশা করেছিল পশ্চিমা দেশগুলো। আর সেই প্রত্যাশা পূরণে আস্তে আস্তে নির্বাচন কমিশন যে সক্রিয় হচ্ছে এটা পশ্চিমা দেশগুলোকে আশাবাদী করছে। 

যদিও তারা মনে করছে যে, বিএনপিসহ আরও কয়েকটি বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় নির্বাচনের অঙ্গহানি ঘটেছে কিন্তু তারপরেও তারা মনে করছে যে, যারা অংশগ্রহণ করছে তাদেরকেও যদি একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেওয়া যায় এবং অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা যায়, সেক্ষেত্রে সেটি মন্দের ভাল হিসেবে বিবেচিত হবে। আর এ কারণেই পশ্চিমা দেশগুলো নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের বলিষ্ঠ ভূমিকা প্রত্যাশা করে। 

আর নির্বাচন কমিশন যখন এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করছে এবং পশ্চিমা দেশগুলো যখন এই পদক্ষেপগুলোতে সন্তুষ্ট, ঠিক তখন বিপরীত অবস্থা পোষণ করছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। সুশীল সমাজের একটি বড় অংশ নির্বাচন কমিশনের এই সমস্ত কর্মকাণ্ডকে লোক দেখানো হিসেবে মনে করছেন। তারা বলছেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এ ধরনের বদলি বা রদবদল তেমন কোন কাজে দেবে না। নির্বাচনের মূল বিষয়টি হলো প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং জনগণের তার পছন্দের ব্যক্তিকে ভোট দেওয়ার অবস্থা। কিন্তু বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ফলে সাধারণ মানুষের সামনে পছন্দ করার সুযোগ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে সবচেয়ে বড় বাধা বলে মনে করছে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। সুশীল সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধি যেমন বদিউল আলম মজুমদার, ড. শাহদীন মালিক এই সমস্ত বক্তব্য নিয়ে মূল ধারার গণমাধ্যমগুলোতে নিয়মিত লিখছেন, কথাবার্তা বলছেন, টকশোতে তারা একই ধরনের বক্তব্য রাখছেন। 

কিন্তু একটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করল কি করল না সেটা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তের ব্যাপার। নির্বাচন কমিশনের কাজ হল যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন সেই সমস্ত দলগুলোর মধ্যে যেন একটি সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা হয়। একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় এবং প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে তা নিশ্চিত করা। সেই কাজ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যথাযথ দায়িত্ব পালন করছেন কি না, সেটি হল কমিশনের বিচার্য বিষয় এবং সেটি দিয়েই নির্বাচন কমিশনকে মাপকাঠি করতে হবে। আর সেটি যদি না করা হয়, বিরোধী দল নির্বাচনে এলো না এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো কখনওই কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে না।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭