প্রকাশ: 04/12/2023
এদেশে বিএনপির বুদ্ধিজীবীদের প্রধান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুলের সাথে আমার কয়েকবার দেখা হয়েছে। আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে বেশ পছন্দ করি। দুটি কারণে আমি তাকে পছন্দ করি।
একটি কারণ হচ্ছে তার ব্যবহার খুবই ভাল। বয়সের বিবেচনায় আমার ছোট বলে তিনি যেভাবে কথাবার্তা বলেন তাতে আমার মনে হয় যে একজন ছোট ভাই আমার সাথে কথা বলছে। আরেকটি কারণে তাকে পছন্দ করি। সেটা হল তিনি তার লেখাতে কোন রাখঢাক করেন না। তিনি যেটা বিশ্বাস করেন সেটাই করেন এবং তিনি যে বিএনপির একজন খাঁটি বুদ্ধিজীবী নেতা এটা বোঝা যায়। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার অধ্যাপনা সেটা কেবল পরিচয়ের কারণে। তার আসল কাজ হচ্ছে বিএনপির বুদ্ধিজীবী হিসাবে কাজ করা।
বিএনপির বুদ্ধিজীবী হিসেবে তার কাজ মূলত ২টি। প্রথমত বিএনপিকে কি করতে হবে সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়া এবং দ্বিতীয়ত বিএনপিকে কিভাবে উপরে তোলা যায় এবং আওয়ামী লীগকে কিভাবে নিচে নামানো যায় সেটি জনগনকে প্রচার করা। কিন্তু সম্প্রতি তার একটি ফেসবুক পোস্ট আমার নজরে আসে এবং তাতে তার সম্বন্ধে আমার যে ধারনা ছিল সেটি সেটু ভুল প্রমাণিত হল। তাকে একজন বড় মাপের বুদ্ধিজীবী মনে করলেও এখন মনে হচ্চে তিনি একজন কাঁচা মানে বুদ্ধিজীবী। ফেসবুক পোস্ট আসিফ নজরুল লিখেছেন, ৭ জানুয়ারি দেশে কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। এটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের সঙ্গে তার ডামি প্রার্থী বা অনুগত দলগুলোর প্রার্থীদের নির্বাচন। কাজেই এটিকে নির্বাচন না বলে একদলীয় নির্বাচন বলা যেতে পারে।
কিন্তু জাতীয় পার্টি এতদিন ধরে বিরোধী দলে থাকলো সেটি নিয়ে আসিফ নজরুল কোন লেখা লিখলেন না। জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হিসেবে সর্বজন গৃহীত হয়েছে। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে এটি নিয়ে কোন প্রশ্ন ওঠেনি। এছাড়া শুধু আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপির অনেক নেতাও নির্বাচন করছে এবং এর বাইরে ১৪ দল সহ আরও কয়েকটি দল নির্বাচনে আসছে। এখানে শুধু আওয়ামী লীগের সাথে আওয়ামী লীগের নির্বাচন হচ্ছে এমনটি ভাবার কোন কারন নেই।
আসিফ নজরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক এবং আমিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন ছাত্র। কারন তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনেই ছিল। আমি দুইবার নির্বাচিত সিনেট সদস্য ছিলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত ডিন ছিলাম। সুতরাং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আমার নারীর সম্পর্ক। সেই বিশ্ববিদ্যালয়য়ের একজন প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে আমি খুবই মর্মাহত যে, এখন কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাড়াটিয়াদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়? যারা কোন না কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে কথা বলবে? এদের মত শিক্ষকদের জন্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বে লিডিং ইউনিভার্সিটিগুলোর মধ্যে থাকতে পারে না। এদের দ্বারা যারা ভবিষ্যতে শিক্ষিত হবে তারা আসলে কি শিখবে? তারাতো আরও নিন্মগামী হবে। এসব শিক্ষকরা টাকার জন্য অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও লেকচার দেন। তাতে আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু টাকার বিনিময়ে একজন শিক্ষক কোন রাজনৈতিক দলের ভাড়া খাটবেন এটা মানা যায় না। আমি নিজেও জীবনে অনেকটা সময় শিক্ষকতা করেছি। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচার দিয়েছি এবং আমি নিজেও একজন রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তি। কিন্তু তারা এত তারাতারি কিভাবে পচে গেলেন সেটি একটি বড় প্রশ্ন। আসিফ নজরুলের মত এমন বেশকিছু বুদ্ধিজীবী যাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের শিক্ষক রয়েছে, কিছু মিডিয়ার পণ্ডিত আছেন এবং অন্য পেশার অনেকে আছেন যারা বিদেশিদের টাকায়, লন্ডনের টাকায় তাদের বুদ্ধি বিক্রি করছেন। আমার মতে ওনাদের মধ্যে এবং টাকার জন্য যারা অন্যের বিছানায় যায়, তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। বরং যারা বুদ্ধি বিক্রি করে তারা আরও নিকৃষ্ট এ কারনে যে তারা দেশের মানুষের সাথে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সাথে প্রতারণা করছে। তারা দেশকে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। যতই আন্তর্জাতিক চাপ আসুক না কেন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশের নির্বাচন সঠিক সময়ে হবে। অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে। নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্থ করার চেষ্টা করবে এবং নির্বাচন নিয়ে যারা বিভ্রান্তি ছড়াবে তারা দেশের শত্রু, জনগনের শত্রু এবং গণতন্ত্রের শত্রু।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭