প্রকাশ: 05/12/2023
বিএনপি সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর ঝালকাঠি-১ আসনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন বৈধতা পাওয়ার পরই তিনি অস্ত্রধারী পাশে বসিয়ে নির্বাচনী এলাকায় সমাবেশ করেছেন, যা নতুন করে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ইতোমধ্যে তাকে শোকজও করা হয়েছে।
এ বিষয়টি নিয়ে সাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত, নির্বাচন যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে বিষয়ে অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের জোড়ালো পদক্ষেপ নেওয়া বিষয়ে মন্তব্য প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এবং কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। একই সঙ্গে তিনি নির্বাচনকেন্দ্রীক সকল ষড়যন্ত্র অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। শাহজাহান ওমরের পাশে বিএনপি নেতার অস্ত্রকান্ড নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ডা. মোদাচ্ছের আলী তার মনোভাব ব্যাক্ত করে বিস্তারিত আলাপ করেছেন।
এ সময় তিনি বলেছেন, ‘আমি পত্র-পত্রিকায় দেখতে পেলাম যে, সদ্য বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানকারী শাহাজাহান ওমর সাহেব নমিনেশন পেপার (মনোনয়ন পত্র) জমা দেন তখন এক অস্ত্রধারী তার সঙ্গে ছিল, যা পরবর্তীতে গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি হচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি। আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এবং দেশে যেন গণতন্ত্র স্থায়ীত্ব লাভ করে, সংবিধান অনুযায়ী যেন পাঁচবছর পর পর নির্বাচন হয়, সেই নির্বাচন যেন সঠিকভাবে হয়। যেমন, ৭ জানুয়ারি ২০২৪ সালে নির্বাচনের (ভোটের) দিন ঠিক করা হয়েছে, সেই প্রসেস চলছে। কিছু লোক এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে। যেন দেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়। যেমন, একটি গ্রুপ ২০১৪, ২০১৮ প্রত্যেকটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়েছে এবং এ ব্যাপারে তারা অনেকটাই সফলকাম হয়েছে।’
ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, ‘এবারও দেখা যাচ্ছে, এই যে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে অস্ত্রধারী যে সমাবেশ হয়েছে তা সব জায়গায় প্রচার হবে, এমনকি আন্তর্জাতিকভাবেও। তাহলে, এই শাহজাহান ওমর যাকে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতিক দিল, সে আওয়ামী লীগে যোগদানই করেছে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য। এখন আওয়ামী লীগের মতো এতো পুরোনো দল, যে দলে এরকম প্রশ্নবিদ্ধ লোক প্রবেশ করছে সেটা যদি আওয়ামী লীগ না দেখে, তাহলে তারা কিভাবে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবে? সেটাই বুঝতে আমি অক্ষম।’
তিনি মনে করেন, ‘নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত ভালোভাবে দায়িত্ব পালন করছে। তারা ইতোমধ্যে যারা নির্বাচনী আইন ভঙ্গ করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা আনছে। অস্ত্রধারী নিয়ে সমাবেশ করায় তাকেও আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। এবং প্রয়োজনে রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা উচিৎ, কেন সে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সমাবেশস্থলে গেলো? সে কি অস্ত্র নিয়ে সমাবেশ করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এই কাজ করেছে? নাকি, শাহজাহান ওমর নিজেই এখানে জড়িত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, আওয়ামী যাকে নৌকা প্রতিক দিয়েছে, যে বিএনপি নেতাকে সে (শাহজাহান ওমর) নিজেই এর সাথে জড়িত। তাই না হলে, উপজেলা পর্যায়ের যে বিএনপির সভাপতি সমাবেশে অস্ত্র নিয়ে উপস্থিত হতে পারে না। সুতরাং, নির্বাচন কমিশনের উচিৎ হবে কোন দিকে না তাকিয়ে, কি প্রতিক তাতেও কিছু যায় আসে না, অবিলম্বে আমাদের রক্ষা করার জন্য, ১৭ কোটি মানুষকে রক্ষা করা জন্য, গণতন্ত্র রক্ষা করা জন্য, সংবিধান রক্ষা করা জন্য, নির্বাচন রক্ষা করার জন্য কঠিনতম পন্থা অবলম্বন করা উচিৎ। আমি সঠিক আইন জানি না। আমার ধারণা হচ্ছে, নির্বাচনের সময়, এমনকি যদি লাইসেন্স করা অস্ত্রও কেউ প্রদর্শন করে তার জন্য মামলা হয়। এখানেও অন্তত দুই-তিনটা মামলা হওয়া উচিৎ। তিনি কিভাবে অস্ত্র দেখালেন, যে কারণে সাধারণ মানুষ ভয় পায়? কিভাবে তিনি নৌকার মনোনিত প্রার্থী পাশে দাড়িয়ে অস্ত্র প্রদর্শন করলেন, তা নিয়েও মামলা হয়। এবং, আরও কি কি নিয়ম ভঙ্গ করা হয়েছে; আমার নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন থাকবে, তাদের যে ব্যাকবোন (মেরুদণ্ড) আছে, তারা যে দন্তবিহীন ব্যাঘ্র না, সেটা তাদের প্রমান করতে হবে। না হলে, আমরা সাধারণ জনগণ হিসেবে কিভাবে তাদের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করবো? সে জন্য আমার মনে হয় এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।’
অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রচেষ্ট ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। বলা হয়, ষড়যন্ত্র হচ্ছে, এটিই ষড়যন্ত্র। এই সকল ষড়যন্ত্র অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং আইনের মাধ্যমেই বন্ধ করতে হবে। এই জন্য সবার প্রতি আমার আবেদন, আইন নিজস্ব গতিতে চলুক। আর আওয়ামী লীগ যে ষড়যন্ত্রের কথা বলে, তারা ষড়যন্ত্র থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করবে। তারাই যদি আবার ষড়যন্ত্রের জন্ম দেয়, তাহলে আমরা যাবো কোথায়?
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭