ইনসাইড বাংলাদেশ

১০ ডিসেম্বর, যুক্তরাষ্ট্র কি আবার কোন নিষেধাজ্ঞা দেবে?


প্রকাশ: 05/12/2023


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে এলিট ফোর্স র‌্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। এই নিষেধাজ্ঞা এখনো পর্যন্ত বহাল রয়েছে। প্রতিবছর মানবাধিকার দিবসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করে এবং এই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, মানবাধিকার বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বিভিন্ন রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার। এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর নতুন করে আবার কোন নিষেধাজ্ঞা দেয় কিনা তা নিয়ে সুশীল সমাজ এবং বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে নানা রকম কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অবলম্বন করে। আর সে কারণেই র‌্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। চট্টগ্রামের কক্সবাজারে একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির ক্রসফায়ারের ঘটনার সূত্র ধরে তৎকালীন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদসহ বেশ কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ওই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছেন সেই সময় র‌্যাবের মহাপরিচালক এবং বর্তমান পুলিশের আইজিও। 

এবার যখন বাংলাদেশ একটি নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে এবং যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে অত্যন্ত সোচ্চার অবস্থানে রয়েছে, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে কি ধরণের প্রতিবেদন দেয়, তা নিয়ে জনমনে বিভিন্ন ধরণের আগ্রহ, উৎসাহ-উদ্দীপনা রয়েছে। এ নিয়ে নানা মহলে গুজবও প্রচার হচ্ছে। বিশেষ করে যারা বিএনপি এবং জামায়াতপন্থী তারা এ রকম একটি অপপ্রচারের চেষ্টা করছে যে, নির্বাচনের আগে ১০ ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা করতে পারে। তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের দূতাবাস এই রকম কোন ধরণের ঘটনা ঘটছে বলে তথ্য দিতে পারেনি। তারা মনে করছে যে, এই ধরণের কোন ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম।

ঢাকাস্থ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করছে যে, বাংলাদেশে এমন কোন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা গত এক বছরেও ঘটেনি, যার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে মানবাধিকার বিষয়ক কোন কারণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, সাধারণত মানবাধিকার প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয় এক বছরের কর্মকাণ্ড নিয়ে এবং এই এক বছরে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি অনেক ভালো ছিল। এখানে কোন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়নি। গুমসহ অন্যান্য যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো এসেছে সেগুলোও কমতে শুরু করেছে। বিশেষ করে র‌্যাবের ভূমিকায় প্রশংসনীয় অগ্রগতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ওপর নতুন করে কোন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণ নেই। 

উল্লেখ্য যে, গত ১৩ নভেম্বর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর) শেষে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে ৯০ শতাংশ দেশ প্রশংসা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ জানিয়েছে। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের ওপর জোর দিয়েছে তারা। 

তবে, বিএনপি-জামায়াতপন্থীরা বলছেন যে, এই সময়ে বিএনপি নেতাদেরকে দমনপীড়ন, নির্যাতন, বিএনপি নেতাদের দ্রুত বিচার করা, এমনকি মৃত ব্যক্তিদের বিচার করা ইত্যাদি বিষয়গুলো সুস্পষ্টভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন। এ বিষয়গুলো নিয়ে বিএনপি এবং জামায়াত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক অভিযোগও পেশ করেছে। আর এই সমস্ত অভিযোগের প্রেক্ষাপটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে, এমন আশাবাদ বিএনপি নেতাদের মুখে মুখে। 

তবে, বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখন সামনে। নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হয়তো বাংলাদেশকে বড় ধরণের নিষেধাজ্ঞার আওতায় ফেলবে না। কারণ, বাংলাদেশের নির্বাচন কেমন হয়, সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগে দেখতে চায়। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন যদি বাংলাদেশে হয়, সেক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে কোন ধরণের চাপের মধ্যে রাখবে না বলে মনে করেন কোন কোন কূটনীতিক বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয় ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কি হয়? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি করে?


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭