ইনসাইড পলিটিক্স

শরিকদের জোরেশোরে সঙ্গে চায় বিএনপি


প্রকাশ: 06/12/2023


Thumbnail

সরকার পতনের একদফা দাবিতে দুই একদিনের বিরতি দিয়ে টানা দশম দফার অবরোধ-হরতাল চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এলডিপিসহ অন্য শরিকদলগুলোও জাতীয়তাবাদী দলটির (বিএনপি) সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। একই দাবিতে টানা কর্মসূচি দিয়ে চলেছে বিএনপিকেন্দ্রীক সমমনা দলগুলো। এবার তাদের আরও শক্ত অবস্থান প্রত্যাশা করেছে বিএনপি।

নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবরের পর লাগাতার হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি শুরু করে বিএনপিসহ মিত্ররা। এরপার এক মাসের বেশি সময় ধরে চলমান কর্মসূচির বিকল্প খুঁজছেন নীতিনির্ধারকরা। সেইসঙ্গে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে একদফা আন্দোলনের গতি বাড়াতে চায় বিএনপি। তফসিল ৭ জানুয়ারি নির্বাচন। তবে, এই নির্বাচন ঠেকাতেই মরিয়া অংশ না নেওয়া দলগুলো।

তথ্যসূত্রগুলো বলছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে সরকারের পদত্যাগ ও একদফা নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিতে যুগপৎভাবে লাগাতার আন্দোলন করছে বিএনপিসহ ৩৯টি রাজনৈতিক দল এবং সমমনা জোট। পৃথকভাবে ধারাবাহিক কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে সক্রিয় আছে জামায়াতে ইসলামী এবং চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, আগামী দিনের কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নির্বাচন বয়কট করা সব দলকে নিয়ে একযোগে মাঠে নামতে চায় বিএনপির হাইকমান্ড। এক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে বিশেষভাবে পাশে চায় দলটি।

এদিকে নিবন্ধিত দল হয়েও আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে ইসলামী আন্দোলন। সেইসঙ্গে দলীয় সরকার নয়, জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপিসহ বিরোধীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছে দলটি। ফলে এসব দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা একাধিক ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন এবং যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। সেইসঙ্গে নির্বাচন বয়কট করা অন্যান্য রাজনৈতিক দলকেও একই মঞ্চে আনার লক্ষ্য বিএনপির। মূলত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ হলে এই সময়ের মধ্যে সব দলের মধ্যে সমঝোতাও হবে এবং একটি অভিন্ন লক্ষ্যে আন্দোলনের রূপরেখার ঘোষণা আসতে পারে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল বর্তমান দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড়। নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত মিলিয়ে ৬৪টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বয়কট করেছে। আসন্ন নির্বাচন ঠেকানোর কৌশল নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর ৩৯টি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। সেখানেও প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান। তার মতে রাজনৈতিক আদর্শের ভিন্নতা থাকলেও বৃহত্তর স্বার্থে জাতীয় ইস্যুতে এসব দলও ঐক্যবদ্ধ থাকবে।

এরই অংশ হিসেবে, সম্প্রতি জাতীয় সংলাপের আয়োজন করেন চরমোনাই পীর। সেখানে সরকার পতনের আন্দোলনে ঐক্যের আহ্বান নিয়ে এক টেবিলে বসেন বিএনপি এবং দেশের ডানপন্থি ও বামধারার কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা। ওইদিন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, সরকারের অত্যাচার, নির্যাতন, জুলুম আজ বাম-ডান সবাইকে এক কাতারে নিয়ে এসেছে। মজলুমদের ঐক্য হয়ে গেছে। বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বস্ত নেতৃত্ব চায়, এ দায়িত্ব নিতে হবে।

অন্যদিকে নির্বাচনবিরোধী একাধিক দলের নীতিনির্ধারকরা জানান, নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর ৭ জানুয়ারির ভোট ঘিরে নতুন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে চান তারা। এক্ষেত্রে বিএনপির দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে একসঙ্গে শক্তভাবে কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা ৭ জানুয়ারির আগেই আশা করি বিএনপিসহ সব বিরোধী দল এক ব্যানারে-এক মঞ্চে আন্দোলনের মোহনায় মিলিত হবো। সম্মিলিত আন্দোলনের মাধ্যমেই এই সরকারের পতন নিশ্চিত হবে। অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা কবে?–এমন প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, আগে সবাই এক কাতারে শামিল হচ্ছি, তারপর সবাই মিলে ক্রমান্বয়ে সম্মিলিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭