ইনসাইড পলিটিক্স

আন্দোলনের কৌশল নিয়ে তীব্র মতবিরোধ: জুম মিটিং থেকে উঠে গেলেন মঈন-নজরুল


প্রকাশ: 06/12/2023


Thumbnail

বিএনপির আন্দোলনের কৌশল নিয়ে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া আন্দোলনকে এগিয়ে নেওয়ার পক্ষপাতী। অবরোধ-হরতালের মতো কর্মসূচি দিয়ে নির্বাচন পর্যন্ত সময় পার করতে চান তারেক জিয়া। কিন্তু ঢাকায় যে সমস্ত নেতারা এখনও বাইরে আছেন এবং যারা বিভিন্ন আন্দোলনের কর্মসূচির কারণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত হচ্ছেন, তারা এই ধরনের কর্মসূচির বিপক্ষে। 

আজ সন্ধ্যায় চলমান আন্দোলন এবং বিএনপির কৌশল নিয়ে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকা নীতি নির্ধারকদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে নেতৃত্ব দেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এভাবে আন্দোলন অর্থহীন বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এই আন্দোলনের ফলে না হচ্ছে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি, না হচ্ছে কোন রকম অর্জন। তিনি এটিও বলেন যে, এই আন্দোলনের ফলে জনগণের কাছ থেকে বিএনপি আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তিনি ২০১৩ সালে উদাহরণ দিয়ে বলেন, ওই সময় নির্বাচন ঠেকানোর জন্য যে আন্দোলন করা হয়েছিল তা ছিল অনেক বেশি আগ্রাসী। কিন্তু তারপরও নির্বাচন ঠেকানো যায়নি। আর এবার অবরোধ গুলোতে জীবনযাত্রা প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। অবরোধের ছাপ কোথাও নেই। কিছুদিন দূরপাল্লার বাস চলত না, এখন সেটা চলাচল করছে। এই অবরোধ দিয়ে জনগণের কাছে যাওয়া যাবে না এবং এই অবরোধের ফলে বিএনপিও কোন কিছু অর্জন করতে পারবে না। 

একই অভিমত ব্যক্ত করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান। তিনি বলেন, এই ধরনের কর্মসূচি আন্তর্জাতিকভাবে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করছে এবং আন্তর্জাতিক মহলের কাছে বিএনপিকে বিতর্কিত করছে। এ ধরনের কর্মসূচির ফলে বিএনপির পশ্চিমাদের কাছে যে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছিল তাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই অর্থহীন কর্মসূচি অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন। কিন্তু তারেক জিয়া উল্টো ধমকের সুরে এই দুই নেতাকে বলেন, আপনারা রাজপথে নামেন না কেন? আপনাদেরকে অবরোধে দেখা যায় না কেন? অবরোধে সিনিয়র নেতারা যদি পিকেটিং না করে তাহলে পদে থাকার দরকার কি? এই প্রশ্ন করার পর ড. মইন খান জুম মিটিং থেকে বেরিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গেও বিরোধে জড়িয়ে পড়েন তারেক জিয়া। এরপর নজরুল ইসলাম খানও জুম মিটিং থেকে বেরিয়ে যান। 

গত কিছুদিন ধরে আন্দোলনের কৌশল নিয়ে বিএনপির মধ্যে হতাশা এবং মতবিরোধ দেখা দিচ্ছিল। বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতারা মনে করছেন যে, এই ধরনের কর্মসূচি ক্রমশ অকার্যকর হয়ে পড়ছে এবং জনগণের কাছে বিএনপি একটি হালকা এবং খেলো দলে পরিণত হচ্ছে। তারা অভিযোগ করেছেন যে, সিনিয়র নেতারা এই ধরনের কর্মসূচিতে মাঠে থাকে না। কোথাও কোন পিকেটিং হয় না। একমাত্র রুহুল কবির রিজভী ছাড়া এখন পর্যন্ত এই সমস্ত অবরোধে কোন সিনিয়র নেতাই মাঠে নামেননি, যারা মুক্ত আছেন। আর অন্যদিকে সিনিয়র নেতারা বলছেন যে, এই ধরনের কর্মসূচিতে মাঠে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটির ফলে নির্ঘাত গ্রেপ্তার হতে হবে। কোন কোন নেতাকে বাইরে থাকতে হবে আন্দোলন অব্যাহত রাখার জন্য। সিনিয়র নেতাদের না যাওয়া, রাজপথে না নামা নিয়ে তারেকের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। 

তবে বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এই সব কিছুর পরও বিএনপি আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। তবে এই আন্দোলনের পরিণতি কি হবে সে সম্পর্কে বিএনপির মধ্যে হতাশা ক্রমশ বাড়ছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭