ইনসাইড বাংলাদেশ

মন্ত্রী-এমপি হওয়া সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা


প্রকাশ: 09/12/2023


Thumbnail

নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিলের সঙ্গে হলফনামা দিতে হয় এবং সেই হলফনামায় থাকে সম্পদের হিসাব। এবার নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী এবং এমপি হিসেবে আবার নির্বাচিত হয়েছেন, তারা তাদের হলফনামায় যে সম্পত্তির হিসাব দিয়েছেন তা শিহরণ জাগানিয়া। তাদের সম্পদের স্ফীতি দেখে জনগণ হতবাক হয়ে গেছে। তাদের এই অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে একটি বিষয় প্রমাণিত হয়েছে রাজনীতি এখন সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা। যেমন- স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কথাই ধরা যাক। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সম্পদ বেড়েছে প্রায় ১১ গুণ। ১১ গুণ সম্পদ বৃদ্ধি ১০ বছরে কোন ব্যবসার পক্ষে সম্ভব কি না—এই প্রশ্নটি উঠেছে। 

জাহিদ মালেকের সম্পদ তো মাত্র ১০ গুণ বেড়েছে। কিন্তু খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্রের সম্পদ বেড়েছে ৮৬ গুণ। তার বার্ষিক আয় বেড়ে হয়েছে ১৮৭ গুণ। এরকম ভাবে হিসাবের ফিরিস্তি অনেক লম্বা। যারাই মন্ত্রী-এমপি হয়েছেন তা সরকারি দলের হোক বা অন্য দলের হোক না কেন তাদের সম্পদের স্ফীতি ভীতিকর এবং আতঙ্কজনক। আর এ কারণেই হয়তো এখন রাজনীতির প্রতি ব্যবসায়ীদের এবং অন্যান্য মহলের আগ্রহ বাড়ছে। রাজনীতি যে এখন একটা বড় লাভজনক ব্যবসা তা বর্তমান এমপিদের দাখিলকৃত হলফনামা থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়।

একজন রাজনীতিবিদ রাজনীতি করেন জনগণের সেবা করার জন্য এবং তিনি জনগণকে একটা সমৃদ্ধ জীবন দেবেন এই অঙ্গীকার করেই তিনি জনপ্রতিনিধি হন বা জনসেবা করেন। কিন্তু বাংলাদেশে যারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন এবং জনপ্রতিনিধি আছেন তারা রাজনীতিকে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবেই ব্যবহার করছেন। আর এ কারণেই তাদের সম্পদের হিসেবে দেখা যাচ্ছে বিশাল উল্লম্ফন। তবে কোনো কোনো মহল বলছেন যে, দাখিলকৃত হলফনামায় যে সম্পত্তির হিসেব দেওয়া হয়েছে, বাস্তবে তাদের সম্পদের পরিমাণ তার চেয়েও বেশি। সম্পদের এই বৃদ্ধির বিষয়টি কতটা নৈতিকতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং তাদের সম্পদ বৃদ্ধি কতটা আইন সিদ্ধ সেই বিতর্কে না গিয়েও বলা যায়, এই ধরনের সম্পদ বৃদ্ধি অস্বাভাবিক। 

কেউ যদি কোন একটা ব্যবসা করেন তাহলে ব্যবসাতে তার ধাপে ধাপে উন্নতি হয়, ঝুঁকি থাকে। কিন্তু রাজনীতি বোধহয় এমন একটি ব্যবসা যে ব্যবসায় কোন ঝুঁকি নেই এবং যে ব্যবসায় আপনার লোকসান হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। বিভিন্ন সংসদ সদস্যের সম্পদের হিসাব পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, গড়ে তাদের সম্পদ বেড়েছে ১০ গুণ থেকে ১০০ গুণ পর্যন্ত। তাহলে এমপি হওয়া আর আলাদিনের চেরাগ পাওয়া বোধহয় একই কথা। কারণ আলাদিনের চেরাগে  যেমন ঘষলেই যা চাওয়া হয় সব পাওয়া যায় তেমনি মন্ত্রী-এমপি হলে তাদের সামনে খুলে যায় বড়লোক হওয়ার দরজা। আর সেই দরজা দিয়ে তারা নিজেদের ভবিষ্যত গড়েছেন, সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদের হিসাব দেখে রাজনীতি সম্বন্ধে সাধারণ মানুষের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭