ইনসাইড পলিটিক্স

জাতীয় পার্টির অপেক্ষায় বিএনপি


প্রকাশ: 11/12/2023


Thumbnail

আগামী ১৭ ডিসেম্বর কি হতে যাচ্ছে, সেই অপেক্ষায় রয়েছে বিএনপি। বিএনপির একাধিক নেতা মনে করছেন যে, শেষ পর্যন্ত হয়তো জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে না। জাতীয় পার্টি যদি নির্বাচনে না থাকে তাহলে এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতার সঙ্কটে পড়বে। আর তখনই বিএনপির আন্দোলনের গতি বাড়বে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হবে না। এরকম একটি আশাতেই বিএনপি বসে আছে। 

এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির আসন ভাগাভাগি নিয়ে চূড়ান্ত ফয়সালা হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন যে, জাতীয় পার্টির সাথে যে আলোচনাগুলো হচ্ছে সেই আলোচনাগুলো ইতিবাচক। কখনোই মনে হয়নি যে, জাতীয় পার্টি নির্বাচন থেকে সরে যেতে পারে। কিন্তু জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে না- এমন সঙ্কা আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের মহলে রয়েছে। 

আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক মহলে কেউ কেউ মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত পশ্চিমা কিছু দেশের পরামর্শ, সুশীল সমাজের কিছু কিছু ব্যক্তির পরামর্শে এবং জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে নাও থাকতে পারে। তবে জাতীয় পার্টিতে জি এম কাদেরের বিপরীতে একটি শক্তিশালী অংশও রয়েছে, যারা নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে। বিশেষ করে দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা, যারা জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে নিতে চায়। অন্যদিকে জি এম কাদেরের ভূমিকা এখনও রহস্যময় বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এমনকি জাতীয় পার্টির কোনো কোনো নেতাও জি এম কাদেরের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছেন। 

তবে শেষ পর্যন্ত যদি জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকে, তাহলে এই নির্বাচনে গ্রহণযোগ্যতার কোন প্রশ্ন উঠবে না। কিন্তু বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে যে, বিএনপির নেতারা এখনও আশাবাদী। তারা মনে করছেন যে, শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি নির্বাচন থেকে সরে আসবে। জাতীয় পার্টি যদি নির্বাচন থেকে সরে আসে তাহলে এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিষয় পরিণত হবে এবং এটি হবে একটি প্রীতি ম্যাচ। আর সেই প্রীতি ম্যাচ আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। 

বিএনপি গত দুই বছর ধরে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। সেই আন্দোলন সব সময় মূলত অন্যের শক্তির ওপর নির্ভরশীল। বিএনপি আন্দোলন শুরু করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব দেখে এবং তাদের নেতারা আশাবাদী ছিল যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবার যেনতেন প্রকারে একটি নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্যতা দেবে না। সেই ভরসাতেই বিএনপি আন্দোলনের গতি পেয়েছিল। বিশেষ করে বিএনপি যখন দেখল যে, গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তখন বিএনপির আন্দোলন বেগবান হয়েছিল। বিশেষ করে মার্কিন কূটনীতিকদের একের পর এক বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য তাদেরকে আগ্রহী এবং উৎসাহি করে তুলেছিল। এ রকম একটি অবস্থান থেকেই বিএনপি মনে করছিল যে, সরকার সরকারের কোন উপায় নেই বিএনপির দাবি মেনে নেওয়া ছাড়া। আর এ কারণে বিএনপি সরকারের ডাকে সংলাপে যায়নি এবং বরং তারা আগ্রাসী অবস্থান গ্রহণ করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হঠাৎ নীরবতা তাদের আন্দোলনে বড় চোট দিয়েছে। এখন বিএনপি একটাই আশা, যদি জাতীয় পার্টির নির্বাচন থেকে সরে যায়। যদি জাতীয় পার্টি নির্বাচন থেকে না সরে শেষ পর্যন্ত যদি থেকে যায় তাহলে বিএনপি কী করবে সেটাই দেখার বিষয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭