ব্রাজিলে খনিতে ফাটল, ধসে পড়বে ঘরবাড়ি

ব্রাজিলের পেট্রোকেমিক্যাল জায়ান্ট ব্রাস্কেম অধীনে পরিচালিত একটি খনিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে খনিতে ফাটলের ফলে এটি সম্পূর্ণ ধ্বসে পড়তে পারে। ইতোমধ্যে ফটলের কারণে খনিতে হ্রদের পানিও প্রবেশ করেছে।  

শিলা লবণের এ খনিটি ব্রাজিলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিতযা থেকে ৪০ বছর ধরে লবণ আহরণ করা হচ্ছে। মাইন ১৮ নামে খনিটি পরিচিত ছিল। স্থানীয় সময় রবিবার দুপুর সোয়া ১টায় এ ঘটনা ঘটেছে।

দেশটির সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষের ধারণা করা ভিডিওতে দেখা যায়, ম্যাসিও শহরের কাছে মুন্ডাউ হ্রদে ঘোলা জলের বুদবুদ হচ্ছে। এছাড়া খনির ওপরের মাটি তলিয়ে যাচ্ছে। সরকারি তথ্য বলছে, ৩০ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে মোট ২.৩৫ মিটার মাটি তলিয়ে গেছে।

ম্যাসিওর মেয়র জোয়াও হেনরিক কালদাস একটি হেলিকপ্টারে করে হ্রদের ওপর থেকে ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করেন। তার মতে, ফাটলটি ২০০ ফুট ব্যাস পরিমাপের একটি অঞ্চলকে প্রভাবিত করেছে। এতে বর্তমানে কোনো মানুষের জন্য হুমকি তৈরি হয়নি বলেও জানান তিনি। খনিটি স্থিতিশীল হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। তবে আশপাশে বসবাসকারীদের ইতিমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। 

এর আগে পেট্রোকেমিক্যাল জায়ান্ট ব্রাস্কেমকে সতর্ক করে বলা হয়েছিল মাইনটি ধ্বসে পড়তে পারে । তবে কর্তৃপক্ষ তাতে গুরুত্ব দেয়নি। 

২০১৮ সালে আশপাশের পাঁচটি ভবন এবং রাস্থায় ফাটল শুরু হয়। এর ফলে বিগত ৫ বছরে ১৪ হাজারেরও বেশি ভবন খালি করতে হয়েছে। এতে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ ভুক্তোভোগী হয়েছে। পরিত্যক্ত এলাকাগুলো পরিণত হয়েছে ভূতের শহরে। ক্ষয়ক্ষতির জন্য মূলত ভারি বৃষ্টিপাত এবং ভূমিকম্পকে দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু ২০২০ সালের একটি ফেডারেল গবেষণায় দেখা গেছে, ফাটল এবং মাটির অবনমন ব্রাস্কেম পরিচালিত শিলা লবণের খনির কারণে হয়েছে।

ব্রাস্কেম ব্রাজিলিয়ান ভূতাত্ত্বিক পরিষেবার বিশেষজ্ঞদের পরিচালিত গবেষণাকে ত্রুটিপূর্ণ অভিহিত করে। তবে কম্পানিটি ২০১৯ সালে ম্যাসিওতে তাদের খনিগুলো বন্ধ করে দেয়। 

এই বছরের শুরুতে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণে ৩৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি সমঝোতায় পৌছায় কোম্পানিটি। মাইন ১৮-এর আসন্ন পতন সম্পর্কে সতর্কতার পর পৌর কর্তৃপক্ষ ‘নতুন ক্ষতি’ অন্তর্ভুক্ত করতে কম্পানিটিকে একটি নতুন ক্ষতিপূরণ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে বলেছে।