এডিটর’স মাইন্ড

ভেঙে যাচ্ছে জাপা: লাঙ্গল পাবেন রওশন?


প্রকাশ: 12/12/2023


Thumbnail

আজ জাতীয় পার্টির অন্যতম নেতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ তার পাঁচ জন নেতাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই সাক্ষাতে তিনি জাতীয় পার্টির সঙ্গে মহাজোট না করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন এবং একই সাথে জাতীয় পার্টির সঙ্গে যেন আওয়ামী লীগ আসন ভাগাভাগি না করে সেজন্য আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্য তাদের এই মতামতের ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি। তবে রওশন এরশাদের এই ভিন্ন অবস্থান আওয়ামী লীগের জন্য এক ধরনের আশাবাদ তৈরি করেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি কোনো পক্ষ অবলম্বন না করলেও এর মধ্য দিয়ে জাতীয় পার্টির বিভক্তি সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

জাতীয় পার্টির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, নির্বাচন প্রশ্নে খুব শীঘ্রই রওশন এরশাদ পৃথক অবস্থান নিতে পারেন এবং জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করতে পারেন। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে, জাতীয় পার্টি যে ২৮৭টি আসনের মনোনয়ন জমা দিয়েছে তার মধ্যে অন্তত ১৫০ জন রওশন এরশাদের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন এবং তারা কোন অবস্থাতেই যেন জাতীয় পার্টি নির্বাচন থেকে সরে না যায় সেজন্য রওশন এরশাদের ভূমিকা কামনা করছেন। আর তাদের অনুরোধে পাঁচ জন নেতাকে নিয়ে রওশন এরশাদ আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর তিনি জাতীয় পার্টির বৈঠক ডাকবেন এবং এই বৈঠকের মাধ্যমে নিজেই চেয়ারম্যান হবেন বলে একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছেন। 

রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হলেই তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি দেবেন এবং এই চিঠি দেওয়ার মাধ্যমে তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এবং জাতীয় পার্টিতে লাঙ্গল প্রতীক দেওয়ার ক্ষমতা তার এই সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করবেন। আর এর ফলে জিএম কাদের দলের নেতৃত্ব হারাবেন এবং লাঙ্গল প্রতীক তিনি পাবেন না। 

বর্তমানে নির্বাচন আইন অনুযায়ী যে দল নিবন্ধিত তাদের নেতা চিঠি দেন এবং প্রতীক বরাদ্দের ক্ষমতা তার। তার চিঠিতে যে সমস্ত প্রার্থীর নাম দেওয়া থাকে তাদেরকেই নির্বাচন কমিশন প্রতীক বরাদ্দ করতে পারে। কিন্তু যদি রাজনৈতিক দল ভেঙে যায় সেক্ষেত্রে ওই দলের গঠনতন্ত্র এবং দলের মূল নেতৃত্ব কার কাছে ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনা করেই নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। জাতীয় পার্টিতে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে যদি একটি অংশ বিভক্ত হয়ে যায়, তাহলে নির্বাচন কমিশন কোনো অংশকে স্বীকৃতি দেবে সেই সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। তবে রওশন এরশাদের সমর্থকরা বলছেন, আইনগতভাবে রওশন এরশাদকেই নির্বাচন কমিশনকে স্বীকৃতি দিতে হবে। কারণ রওশন এরশাদ হলেন বিরোধী দলের নেতা। জাতীয় পার্টির জাতীয় সংসদে যে সংসদীয় দল রয়েছে সেখানে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কিছু নন। কাজেই সংসদের বিরোধী দলের নেতাই দলের মূল নেতা এবং যারা দলের নীতি নির্ধারক অর্থাৎ কেন্দ্রীয় কমিটি বা মূল নীতিনির্ধারক নেতৃবৃন্দ তারা যদি সম্মিলিতভাবে জিএম কাদেরকে সংগঠন বিরোধী তৎপরতার জন্য বহিষ্কার করেন, সে ক্ষেত্রে রওশন এরশাদের চেয়ারম্যান হতে কোন বাধা থাকবে না। 

তবে জাতীয় পার্টিতে জিএম কাদের পন্থীরা বলছেন, এভাবে একজন চেয়ারম্যানকে ক্ষমতাচ্যুত করা যায় না। তারা বলছেন, জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সর্বময় ক্ষমতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের হাতে অবারিত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কাজেই তাকে রওশন এরশাদ বা অন্য কেউ দল থেকে চাইলে বহিষ্কার করতে পারে না এবং এধরনের বহিষ্কারাদেশ যদি নির্বাচন কমিশন আমলে নেয় তাহলে বুঝতে হবে যে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়। এখন দেখা যাক যে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় জাতীয় পার্টিতে কি কি ঘটে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭