ইনসাইড বাংলাদেশ

যশোরে চলমান অর্থবছরে ৭০০ কোটি টাকা ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা


প্রকাশ: 13/12/2023


Thumbnail

সামনের বছর লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখেন সব চাষী। তবে কোন না কোন বিপর্যয়ে সে স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে রুপ নেয়। কখনো কখনো লাভ হলে তাও খুব সীমিত। করোনা, ঘূর্ণিঝড় আম্পানসহ নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠে এ  বছর চলতি শীত মৌসুমে লাভের আশা করছেন দেশের ফুলের রাজধানী খ্যাত যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালির ফুল চাষীরা। পানি সারা ফুলচাষী নেতারা বলছেন দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকলে চলতি বছর ফুল বিক্রির মৌসুম (ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত) চার মাসে ৩ বেশি  টাকার ফুল বিক্রি হবে গদখালির ফুল সেক্টর থেকে। অপরদিকে ফুলচাষী এবং বিপননে জড়িত ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত নভেম্বর মাস এবং চলতি মাস জুড়ে হরতাল অবরোধের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে ফুল সরবরাহ ও পরিবহনে দ্বিগুন অর্থ গুনতে হয়েছে তাদের। 

 

জানা গেছে, গোটা যশোর জেলার দেড় হাজার হেক্টর কৃষি জমিতে প্রায় ৭   হাজার কৃষক এ ফুল চাষের সাথে জড়িত। দেশের মোট ফুলের চাহিদার ৮০ শতাংশ ফুল এই জেলা থেকেবাংলাদেশের সব জাগা ফুল  সরবরাহ করা হয়। প্রতি বছর ডিসেম্বর মাস থেকে গদখালির ফুলের চাহিদা ও বিক্রি ক্রমাগত বাড়তে থাকে। একইসাথে বাড়তে থাকে ফুলের দামও। 

 

প্রতি বছর ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস, ক্রিসমাস, ইংরেজি নববর্ষ, ১৪ই ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, ২১শে ফেব্রুয়ারী শহীদ দিবস ও ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি অনুষ্ঠানকে টার্গের করে মোটা অংকের ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে গদখালির ফুল চাষীরা। আসন্ন ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসকে ঘিরে এই ফুল সেক্টর থেকে ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ কোটি টাকা। বেশি 

 

সরজমিনে বুদবার (১৩  ডিসেম্বর) গদখালি ফুলের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, এ বাজারে গোলাপ বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৪-৫ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা প্রতি পিস ৩-৪ টাকা, গাদা ফুল প্রতি হাজার ৪০০-৫০০ টাকা, রজনীগন্ধা প্রতি পিস ৩-৪ টাকা, ঝাউ প্রতি পিস মানভেদে ৫০-১০০ টাকা, জারবেরা প্রতি পিস ১০-১২ টাকা। ভালো দামে ফুল বিক্রি করে সন্তুষ্ট চাষী ও ব্যবসায়ীরা। গদখালির থেকে পানিসারা ফুল মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন বাগান, ফুলের সেড ঘুরে দেখা যায়, আসন্ন দিবসগুলোকে উদ্দেশ্য করে ফুলের বাজার ধরতে বাগান পরিচর্যার কাজে ব্যাস্ত সময় পার করছে চাষী এবং বাগানের কর্মচারীরা।

 

পানিসারা এলাকার ফুলচাষী ইসমাইল হোসেন  বলেন, এ বছর চন্দ্রমল্লিকা, গোলাপ আর গাদা ফুলের চাষ করেছি। চাষের পরিমাণ কম হলেও এ বছর চাষীরা মোটামুটি ভালো দাম পাচ্ছে। তবে হরতাল অবরোধে দ্বিগুন গাড়িভাড়া দিয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় ফুল সরবরাহ করতে হচ্ছে। 

 

ফুল পরিচর্যার কাজ করছিলে ফুলচাষী সাইফুল ইসলাম। তিনি এ বছর ১ বিঘা জমিতে জারবেরা, রজনীগন্ধার চাষ করেছেন। তিনি বলেন 'এ বছর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আমাদের ফুল চাষীদের জন্য কাল হয়ে দাড়িয়েছে। আমরা বর্তমানে ভালো দাম পেলেও শঙ্কায় ভুগছী। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকলে অনুষ্ঠান বা দিবসগুলোর সুন্দরভাবে উদযাপিত হয় না তখন ক্রেতা পর্যায়ে আমাদের ফুলের চাহিদা ও বিক্রি কমে যায়। 

 

তিনি বলেন, প্রতি বছর নানা কারণে চাষীরা দাম পায় না। এজন্য চলতি বছর সব চাষী স্বল্প পরিমাণে ফুলের চাষ করেছে। বাজার ধরার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি আশা করি দিবসগুলোতে ফুলের দাম আরও বাড়বে।

 

এদিকে ফুলচাষী নেতারা বলছেন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চলতি বছর গদখালির ফুলচাষীরা রেকর্ড পরিমাণের অংকের ফুল বাজারজাত করতে পারবে। যশোর ফুল উৎপাদন ও বিপণন সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম   বলেন, এ বছর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ফুল বাহিরের জেলা গুলোতে বিপননে আমাদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে চলতি মৌসুমের চার মাসে গদখালি থেকে৩  শো   কোটি টাকারবেশ বেশি ফুল বিক্রি হবে বলে আমরা আশাবাদী। এবং আসন্ন বিজয় দিবস ক্রিসমাস  একুশে ফেব্রুয়ারি বিজয় দিবস  ঘিরে ফুল বিক্রি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা বেশি । আমরা আশাবাদী দেশ স্বাভাবিক হবে এবং ফুলচাষীরা তাদের ফুল সুন্দরভাবে বা জারজাত করে লাভবান হতে পারবে।

 

 

ঝিগরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ জানান,এবার ৬৩০ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়েছে সরাসরি ফুল চাষী যুক্ত সাত হাজার কৃষক এর সাথে সম্পৃক্ততা  ১ লক্ষ মানুষ এবারে ফুল চাষে টার্গেট করা হযেছে যদি হরতাল অবরোধ না থাকে বছরের ৭০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে তিনি বলেন আজ গদখালি বাজারে একটি গোলাপ ফুল ১০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে যেটা অতীতের থেকে অনেক ভালো বিক্রয় হয়েছ বলে কৃষি কর্মকর্তা জানান।  



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭