ইনসাইড বাংলাদেশ

মার্কিন-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েন: বাংলাদেশের নির্বাচনে কি প্রভাব পড়বে?


প্রকাশ: 13/12/2023


Thumbnail

আগামী ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আসার কথা ছিল। জো বাইডেন যখন দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেন তখনই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ভারতের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, নীতিগতভাবে জো বাইডেন এই সফরে সম্মতি প্রকাশ করেছিলেন। এই নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক আলাপ আলোচনাও শুরু হয়েছিল। কিন্তু এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে দিয়েছে যে, জো বাইডেন আগামী ২৬ জানুয়ারি দিল্লি সফরে আসছেন না। শুধু তাই নয়, জো বাইডেনের সফর উপলক্ষে কোয়াডের যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ২৭ জানুয়ারি তাও বাতিল করা হয়েছে। 

কানাডার নিহত শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের সূত্র ধরেই ভারত-কানাডার যে সম্পর্কের অবনতি তার প্রভাব পড়ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের সম্পর্কের মধ্যে। ভারত ওই অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত এবং মিত্র। কিন্তু হারদীপ সিং নিজ্জর ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানাডার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এখন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে এবং একটি গোয়েন্দা দল ভারত সফর করেছে এই বিষয় নিয়ে তথ্য অনুসন্ধানের জন্য। এরকম অবস্থায় কানাডা এবং শিখ আন্দোলন ইস্যুতে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েনের যে আলাপ আলোচনা এতদিন ছিল তা এখন প্রকাশ্য রূপ নিতে শুরু করেছে। 

প্রশ্ন হল এই টানাপোড়েনের ফলে যে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে দূরত্ব সেই দূরত্ব বাংলাদেশের নির্বাচনের ওপর কোন প্রভাব ফেলবে কি না, ফেললে কতটুকু প্রভাব ফেলবে। এই অঞ্চলে যেহেতু ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার। কাজেই ভারতের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূরত্ব এই অঞ্চলে প্রভাব ফেলবে এটি অনিবার্য। তাছাড়া বাংলাদেশের ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের মধ্যে দ্বিমত ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের ওপর একইরকম চাপ প্রয়োগ করছিল। এ নিয়ে বাংলাদেশের ওপর তারা ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছে। আবার বাংলাদেশে যখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনেকটাই নিশ্চুপ রয়েছে।

অনেকেরই ধারণা ছিল যে, ভারতের কূটনৈতিক তৎপরতার কারণেই হয়তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে নীরবতা অবলম্বন করছে। কিন্তু এখন যদি কানাডা এবং শিখ ইস্যুতে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটে, তাহলে কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার পূর্বের অবস্থানে ফিরে যাবে? 

কোনো কোনো কূটনৈতিকমহল মনে করেন এটি ফিরে যাওয়া অসম্ভব নয়। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে চাপে রাখার কৌশল নেবে। অন্যদিকে ভারত শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদেরকে কোনভাবেই প্রশ্রয় দেবে না। কাজেই দুই দেশের সম্পর্কের যে দূরত্ব তা সহসা কমবে বলে মনে হয় না। তবে কোনো কোনো কূটনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন যে, হরদীপ সিং বা শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী ইস্যুটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনেক বিষয়ই ভারতের ওপর নির্ভরশীল। আর এ কারণেই বাংলাদেশ প্রশ্ন শেষ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সাথে দ্বিমত পোষণ করবে কি না তা নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ রয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭