ইনসাইড পলিটিক্স

ফরিদপুর-৩: যে কারণে টিকে গেলেন আজাদ আর হারলেন শামীম


প্রকাশ: 15/12/2023


Thumbnail

টিকে গেলেন ফরিদপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ। তার প্রার্থিতা বহাল রেখেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে আপিল শুনানির পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য নির্বাচন কমিশনাররা এই রায় দেন।

অপরদিকে, ফরিদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত শামীম হক ওরফে হল্যান্ড শামীমের মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিয়েছে ইসি। শামীম হক দ্বৈত নাগরিক হওয়ায় বুধবার ইসিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনে তার প্রার্থিতার বৈধতা নিয়ে শুনানি হয়। পরে শুনানি স্থগিত রেখে ইসি শুক্রবার রায়ের দিন নির্ধারণ করে। আইন অনুযায়ী দ্বৈত নাগরিক প্রমাণ হলে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না এমনটাই নিয়ম। এর জেরেই আজ শুক্রবার তার বিরুদ্ধে রায় এল। তিনি নৌকার প্রার্থীতা হারালেন।

এর আগে ফরিদপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ শামীম হকের বিরুদ্ধে তিনি নেদারল্যান্ডসের নাগরিক এমন অভিযোগ তোলেন। এই অভিযোগে নির্বাচন কমিশনে প্রার্থিতা বাতিলের জন্য এ. কে. আজাদের পক্ষে আইনজীবী মো. গোলাম কিবরিয়া আপিল আবেদন জমা দেন।

এ ব্যাপারে ওই আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হক নেদারল্যান্ডসের নাগরিক। মনোনয়ন বাছাইয়ের সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী এ. কে. আজাদ এ বিষয়ে তথ্য-উপাত্তসহ লিখিত অভিযোগ করা সত্ত্বেও রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম হকের মনোনয়নপত্র বাতিল না করে বৈধ ঘোষণা করেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার এই আদেশের বিরুদ্ধে এই আপিল দায়ের করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘শামীম হকের নেদারল্যান্ডসের পূর্ববর্তী পাসপোর্ট নম্বর-BESHC8751, জন্ম তারিখ ২১ অক্টোবর ১৯৬০ লেখা আছে। শামীম হক সম্প্রতি তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট ইস্যু করার জন্য ফরিদপুর পাসপোর্ট কার্যালয়ে এক দরখাস্ত দাখিল করেন। সেই দরখাস্তের ২৫ নং কলামে দ্বৈত নাগরিকত্বের ঘরে তিনি টিক মার্ক দিয়েছেন। ২৬ নং কলামে অন্য দেশের নাগরিক থাকলে সেই দেশের নাম উল্লেখ করতে বলা হয়েছে, সেখানে তিনি নেদারল্যান্ডস উল্লেখ করেছেন। ২৭ নং কলামে তার নেদারল্যান্ডসের পাসপোর্ট নম্বর BY60F0J74 উল্লেখ করা আছে।’

রিটার্নিং অফিসারের কাছে শামীম হকের মনোনয়ন বাতিলের জন্য যুক্তি হিসেবে তার নেদারল্যান্ডসের পাসপোর্টের ফটোকপি প্রমাণস্বরূপ উপস্থাপন করে আইনি ব্যাখ্যা তুলে ধরে আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া বলেছেন, ‘সংবিধানের ৬৬(২) অনুচ্ছেদ এবং ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২(১) (৬) অনুচ্ছেদের বিধানমতে, শামীম হক একজন বিদেশি নাগরিক হওয়ায় তিনি সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন না, তিনি অযোগ্য প্রার্থী।

এ ছাড়াও তিনি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২(২)(ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রদত্ত এফিডেভিটে বিষয়টি গোপন করায় তার ঘোষণাটি মিথ্যা হিসেবে বিবেচিত হবে। সে কারণেও তার মনোনয়ন বাতিল হওয়ার কথা।’

সংবিধানের ৬৬ (২) (গ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি তিনি কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন।’ সংবিধানের উক্ত অনুচ্ছেদের অনুরূপ বিধানই গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২(১)(৬) অনুচ্ছেদে সন্নিবেশিত হয়েছে।

সমস্ত প্রমাণাদি শামীম হকের বিরুদ্ধে যাওয়ায় ইসি শামীম হকের প্রার্থিতা বাতিলের এই সিদ্ধান্তে পৌছায়। ফলে, এ কে আজাদ ফরিদপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হলেন।

প্রসঙ্গত, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অবৈধ প্রার্থীদের আপিল কার্যক্রম চলেছে ৫-৯ ডিসেম্বর। এসব আপিলের শুনানি শুরু হয়েছে গত ১০ ডিসেম্বর। যা আজ ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে। আর ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭