ইনসাইড পলিটিক্স

অবহেলা বঞ্চনার অভিযোগ: ভেঙে যাবে ১৪ দলীয় জোট? (ভিডিও)


প্রকাশ: 15/12/2023


Thumbnail

২০০১ সালের নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ১৪ দল গঠন করেছিল। এই ১৪ দলীয় জোটকে বলা হত আদর্শিক জোট। আর এই আদর্শিক জোটে এখন টানাপোড়েন এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, যেকোনো সময় জোট ভেঙে যেতে পারে। ১৪ দলের শরিকরা প্রকাশ্যে এখন আওয়ামী লীগের সমালোচনা করছেন। আসন ভাগাভাগি নিয়ে আওয়ামী লীগ যে তাদের সঙ্গে ‘বড়ভাই সুলভ’ আচরণ করছে সে ব্যাপারে অস্বস্তি প্রকাশ করতেও কার্পণ্য করছে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ তার শরিকদের আগের মতো খুব একটা পাত্তাও দিচ্ছেন না।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গতকাল রাতে ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু শরিক দলগুলোকে ৭টি আসন প্রদান সংক্রান্ত আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। এই ৭টি আসনে নৌকার প্রার্থীরা থাকবে না বলে আমির হোসেন আমু ১৪ দলের শরিকদেরকে জানান। তবে ১৪ দলের অন্যতম নেতা জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এই ৭টি আসন গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, এর ফলে ১৪ দলের শরিকদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে, অন্যায় করা হয়েছে। তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির সাথে আমির হোসেন আমুকে আবার কথা বলার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন এবং কথা বলে আসন বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন। 

কিন্তু আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, এর বাইরে আসন দিতে আওয়ামী লীগ মোটেও রাজি নয়। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ১৪ দলের শরিকদের সাথে কথাও বলবেন না বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলছেন, বিষয়টি সব শেষ হয়ে যায়নি। এখনও সময় রয়েছে। ১৪ দলের সঙ্গে শেখ হাসিনা বসতেই পারেন। এখনও আমাদের হাতে একদিন সময় আছে। আজকের মধ্যে সবকিছু চূড়ান্ত ফয়সালা হবে। তবে আসন ভাগাভাগি নিয়ে ফয়সালা হলেও, ১৪ দল নির্বাচনে গেলেও ১৪ দলের শরিকরা তাদের ভাষায় অপমানজনকভাবে নির্বাচনে গেলেও শেষ পর্যন্ত ১৪ দল টিকবে কিনা তা নিয়ে অনেকের প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। 

বিভিন্ন নেতারা বলছেন, গত পাঁচ বছরে ১৪ দলকে আওয়ামী লীগ প্রায় গুরুত্বহীন করে তুলেছে। ১৪ দলের অস্তিত্ব সংকটের মুখে ফেলে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ২০০১ সালে ১৪ দল গঠিত হওয়ার পর এই জোটের মাধ্যমেই বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি ২০০৮ সালের নির্বাচনে ১৪ দলকে সাথে নিয়ে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটি। ২০১৪ এবং ২০১৮ নির্বাচনেও ১৪ দলকে সাথে নিয়ে ছিল।

২০১৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীসভায় ১৪ দলের শরিকরা ছিলেন। কিন্তু ২০১৮-তে আওয়ামী লীগ একলা চলো নীতি গ্রহণ করে। ১৪ দলের সমন্বয়কারী মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর দৃশ্যত ১৪ দল অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। আর সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনে টানাপোড়েন সময় ১৪ দল অবহেলার শিকার হয়েছে বলে শরিকদের অনেকেই মনে করেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ তাদেরকে আগের মতো পাত্তা দিচ্ছেন না এবং তাদের কথাও খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না এমন অভিযোগ এখন ১৪ দলের শরিকরা প্রায় সবাই বলছেন। এরকম অবস্থায় শেষ পর্যন্ত হয়তো নির্বাচনে ১৪ দল থাকবে। নির্বাচনের আগে হয়তো একটা সমঝোতা হবে কিন্তু নির্বাচনের পর ১৪ দল আদৌ টিকবে কি টিকবে না সেটি একটি বড় প্রশ্ন। 

তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, নির্বাচনে এরকম মান অভিমান নতুন বিষয় নয়। এই ধরনের মান অভিমান অতীতেও হয়েছে। ১৪ দল আছে, থাকবে। তবে আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন, ১৪ দলের শরিকদেরকে সংগঠন শক্তিশালী করার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭