ইনসাইড পলিটিক্স

জাপাকে কাছে পেতে মরিয়া বিএনপি (ভিডিও)


প্রকাশ: 15/12/2023


Thumbnail

আন্দোলন নয়, বিএনপি এখন নির্বাচন ভণ্ডুলের মিশনে নেমেছে। আর এই মিশনে নেমে জাতীয় পার্টিকে কাছে পেতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। শেষ মুহূর্তে জাতীয় পার্টি যেন নির্বাচন থেকে সরে আসে, সেজন্য বিএনপি ভাবে তৎপরতা চালাচ্ছে। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এই তৎপরতায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। 

জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে এখন বিএনপির নেতারা কোন কথা বলছেন না তারেক জিয়ার নির্দেশে। লন্ডন থেকে তারেক জিয়া জাতীয় পার্টির বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। একই সাথে সুশীল সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধিকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যারা জাতীয় পার্টির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন এবং জাতীয় পার্টি যেন নির্বাচনে না যায় সেজন্য তাদেরকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় পার্টির নির্বাচনে যাওয়ার এখন যে অনিশ্চয়তা সেটি লন্ডনের নীল নকশা বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা।

বিএনপি এখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। এই দাবিতে তারা ১১ দফা অবরোধ, হরতাল ইত্যাদি কর্মসূচি পালন করেছে। এই ধরনের কর্মসূচিগুলো জনগণের মধ্যে তেমন কোন রেখাপাত করেনি। জনগণের মধ্যে রেখাপাত না করলেও তারা তাদের টানা কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে চায়। কিন্তু এই কর্মসূচির চেয়ে তারা গুরুত্ব দিচ্ছে নির্বাচনকে অকার্যকর অর্থহীন করার দিকে। আর সেজন্য তারা একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রথমত, তারা তাদের নিজেদের দলকে সংহত রাখার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছে। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতারা বলছেন, চাপ ছিল, প্রলোভন ছিল, একাধিক নেতার পদত্যাগের গুঞ্জনও ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শাহজাহান ওমর ছাড়া বিএনপির বড় কোন নেতাই দলত্যাগ করেননি। তৃণমূল বিএনপি বা বিএনএমে বিএনপির অনেক নেতা যোগ দিতে পারেন-এমন আলোচনা ছিল। কোনো কোনো নেতা যে এ সমস্ত দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেননি, তেমনটিও নয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিএনপি কৌশলগত লড়াইয়ে জয়ী হয়েছে। দলে কোন ভাঙন হয়নি। এক্ষেত্রে যাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদেরকে সাথে সাথে বহিষ্কার করার ফলে একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে। 

বিএনপির দ্বিতীয় লক্ষ্য ছিল যে, জোটের শরিকরা যেন দলত্যাগ না করে। বিএনপি কমবেশি ৩০ টি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন করছে। এই দলগুলোর অনেকগুলোরই নির্বাচনে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এবং তারা সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলাপ আলোচনাও করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কল্যাণ পার্টির নেতা জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম ছাড়া আর কেউই নির্বাচনে যায়নি। বিএনপি মনে করছে, এটি তাদের একটি নৈতিক বিজয়। বিশেষ করে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরের দল, এলডিপি সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু অনেক দূরে এগোনোর পরও তারা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের পথে যায়নি। 

বিএনপির তৃতীয় কৌশল ছিল, যে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো বিগত উপনির্বাচন এবং স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে তাদেরকে আস্তে আস্তে নির্বাচন থেকে সরিয়ে আনা। এক্ষেত্রে তারা ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে আনতে পেরেছে। ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বিভিন্ন উপনির্বাচন এবং স্থানীয় নির্বাচনে প্রায় সবগুলো স্থানে তৃতীয় হয়েছিল। জাতীয় পার্টিকেও তারা কোথাও কোথাও পিছনে ফেলেছিল। কিন্তু এই নির্বাচনে তাদের সরে যাওয়াটা নির্বাচন বিরোধীদের জন্য একটি বড় অর্জন বলে বিএনপি নেতারা মনে করছেন। 

এছাড়াও ইসলামী দলগুলোকে নির্বাচনের মাঠে আনার জন্য আওয়ামী লীগ অনেক চেষ্টা করার পরও শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। এখন বিএনপি টার্গেট করেছে জাপাকে। জাতীয় পার্টি যদি নির্বাচন থেকে সরে আসে তাহলে বিএনপির নীল নকশার ১৬ কলা পূর্ণ হয়। আর সেই লক্ষ্যে বিএনপি মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে। এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত বিএনপি জাতীয় পার্টিকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে আনতে পারে কি পারে না?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭