ইনসাইড পলিটিক্স

সাত আসন পেয়েও সন্তুষ্ট নয় ১৪ দলের শরিকরা


প্রকাশ: 16/12/2023


Thumbnail

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে সমঝোতায় পাওয়া ৭ আসন নিয়ে সন্তুষ্ট নয় আদর্শিক জোট ১৪ দলের শরিকরা। আসনের সংখ্যা বাড়াতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফের বৈঠকের আহ্বানও জানিয়েছেন শরিক দলের নেতারা। একই সঙ্গে ছাড় পাওয়া আসন থেকে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরিয়ে নেওয়ার দাবিতেও তারা অনঢ়।

এর আগে গতকাল শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১৪ দল শরিকদের সাত আসনের বেশি ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়। এমনকি ছাড় দেওয়া আসন থেকে দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী সরিয়েও নেওয়া হবে না। মোট কথা, শরিক দলের প্রার্থীদের ভোটে লড়াই করেই জিতে আসতে হবে। আওয়ামী লীগ তাদের জয়ের গ্যারান্টি দেবে না।

একই দিনে জোটের দুই শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও জাতীয় পার্টি-জেপির নেতারাও সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষোভ জানিয়েছেন। তরীকত ফেডারেশন সংবাদ সম্মেলন করে আসন বণ্টনের সমালোচনা করেছে। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সাতটি আসনে ছাড় দেওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, সেটি ছিল প্রাথমিক প্রস্তাব। আমরা বিনয়ের সঙ্গে এই ‘অসম্পূর্ণ প্রস্তাব’ পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানাচ্ছি। কেননা ১৪ দল শরিকদের জন্য ছাড় দেওয়া আসন সংখ্যা আরও বাড়ানোর প্রয়োজন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনার কথাও বলেছি।

তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর দাবি, আওয়ামী লীগের তরফ থেকে তাদের দুটি আসনে ছাড় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের টেলিফোন করেও তাঁকে (মাইজভান্ডারী) চট্টগ্রাম-২ আসনে জোটের প্রার্থী করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন। তারা এখন আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুত দুটি আসনেই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চান।

এদিকে, গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ১৪ দলের শরিক গণআজাদী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে জাতীয় পার্টি-জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম ১৪ দলের আসন বণ্টনের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে ১৪ দলের শরিকদের প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে শরিকদের প্রতি বৈষম্যমূলক একটি দৃষ্টিভঙ্গিও নেওয়া হয়েছে। আমরা জোটনেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আবেদন জানাব– তিনি যেন এই আসন বণ্টন পুনর্মূল্যায়ন করেন।

ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, ওয়ার্কার্স পার্টিকে যে তিনটি আসনে ছাড় দেওয়া হয়েছে, সেগুলোতে স্বতন্ত্র প্রার্থীগত সমস্যা তেমন একটা নেই। তার পরও বিষয়টি নিয়ে শরিকদের সঙ্গে আরও আলোচনা হতে পারে।

তথ্যসূত্র বলছে, ১৪ দলের শরিকদের জন্য যে সাতটি আসনে ছাড় দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি তিনটি, জাসদ তিনটি এবং জাতীয় পার্টি-জেপির একটি আসন রয়েছে। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বরিশাল-২ (ঢাকা-৮ থেকে সরিয়ে), সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা রাজশাহী-২ ও পলিটব্যুরোর সদস্য অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ সাতক্ষীরা-১, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু কুষ্টিয়া-২, স্থায়ী কমিটির সদস্য একেএম রেজাউল করিম তানসেন বগুড়া-৪ ও মোশারফ হোসেন লক্ষ্মীপুর-৪ এবং জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু পিরোজপুর-২ আসনে ছাড় পেয়েছেন। তবে এর আগে রাশেদ খান মেননকে বরিশাল-৩ আসনে ছাড় দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। গতকাল রাতে জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে বৈঠকে বরিশাল-৩ আসনটি তাদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। মেননকে দেওয়া হয় বরিশাল-২।

এর আগে তিন দফা বৈঠকের পর গত বৃহস্পতিবার রাতে ১৪ দল শরিকদের জন্য সাতটি আসনে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আসনওয়ারি যাচাই-বাছাই ও জয়ের সম্ভাবনার বিচারে ওই সাতটি আসনে ছাড় দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রগুলো জানায়। এর পর ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু শরিক দলের নেতাদের ফোন করে ছাড় দেওয়া সাতটি আসন ও এগুলোতে জোটগত মনোনয়নের কথাও জানান।গতকাল ওবায়দুল কাদেরও দু-একজন শরিক নেতার সঙ্গে টেলিফোনে এ নিয়ে কথা বলেছেন।




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭