ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে বিশ্বে কি হবে?


প্রকাশ: 17/12/2023


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। আগামী ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই নির্বাচন। ধারণা করা হচ্ছে, বাইডেনকে পেছনে ফেলে এবার দ্বিতীয়বারের মত ক্ষমতায় আসতে পারেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বেশ কয়েক মাস ধরে আমেরিকার বিভিন্ন জড়িপের ফলাফল তাই বলে। বেশ কিছু জরিপে দেখা গেছে, সুইং অঙ্গরাজ্যগুলোতেও বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চেয়ে ট্রাম্প বেশ এগিয়ে রয়েছেন।

তবে আগামী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে যদি দ্বিতীয়বারের মত ট্রাম্প ক্ষমতায় আসেন সেটা যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসীদের জন্য বা যুক্তরাষ্ট্র গমনে ইচ্ছুক বিদেশীদের জন্য মোটেও সুখবর বয়ে আনবে না। কারণ, বরাবরের মত জেনোফোবিক (বিদেশিদের প্রতি ঘৃণার মনোভাব) মতাদর্শের ট্রাম্প এখন পর্যন্ত অভিবাসীদের জন্য বর্ণবাদী এবং ঘৃণ্য মনোভাবই পোষণ করেন।

প্রথমবার ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর অভিবাসনবিরোধী একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ট্রাম্প। ২০২৪ সালের নির্বাচনে জিতে দ্বিতীয়বারের মত ক্ষমতায় যেতে পারলে অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধ এবং বৈধ অভিবাসন নীতি কঠোর করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) নিউ হ্যাম্পশায়ারে একটি প্রচারণা সমাবেশে যোগ দিয়ে সেখানকার কয়েক হাজার সমর্থকের সামনে বিদেশীদের প্রতি তার বিরূপ মনোভাব প্রকাশ করে বলেন, ‘ওরা (অনিবন্ধিত অভিবাসী) আমাদের দেশের রক্ত বিষাক্ত করে তুলছে। দক্ষিণ আমেরিকা ছাড়াও এশিয়া, আফ্রিকা, সারা বিশ্ব থেকে তারা আমাদের দেশে আসছে।‘

অবৈধ বিদেশীরা যুক্তরাষ্ট্রের রক্ত খারাপ করছে বলেই ট্রাম্পের ধারণা। তার এই মন্তব্যে বিদেশীদের প্রতি তার তীব্র বিদ্বেষপূর্ণ মনমানসিকতার স্পষ্ট প্রকাশ ঘটে।

তবে এ ধরনের বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করে আবারও চরম বিতর্কের মুখে পড়েছেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার এ ধরনের মন্তব্য তার ভেতরের জেনোফোবিক (বিদেশিদের প্রতি ঘৃণার মনোভাব) আচরণেরই প্রকাশ ঘটায় যা নিয়ে এর আগেও বেশ সমালোচনা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে দ্য ন্যাশনাল পালস নামে একটি ডানপন্থি ওয়েবসাইটকে ট্রাম্প একটি সাক্ষাৎকার দেন। সে সময় এই সাক্ষাৎকারেও ট্রাম্প ‘রক্ত বিষাক্ত করে তোলা’ শব্দগুলো ব্যবহার করেছিলেন।

ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে অ্যান্টি-ডিফামেশন লীগ। এর নেতা জোনাথন গ্রিনব্ল্যাট ট্রাম্পের মন্তব্যকে ‘বর্ণবাদী, জেনোফোবিক এবং ঘৃণ্য’ বলেও অভিহিত করেছিলেন।

অভিবাসীদের প্রতি ট্রাম্পের এহেন বিরূপ মনোভাব ও বক্তব্যের জেরে অনেকের মনেই আবারও নতুন করে সৃষ্টি হচ্ছে আতঙ্ক।

এ বিষয়ে ইয়েল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবং ফ্যাসিবাদের ওপর একটি বইয়ের লেখক জেসন স্ট্যানলি বলেছেন, ‘ট্রাম্প এ ধরনের ভাষা বারবার ব্যবহার করছে, যা বিপজ্জনক। তার মতে, ট্রাম্পের কথায় নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারের বক্তব্যের বেশ মিল রয়েছে।‘

স্ট্যানলি আরও বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) এই শব্দগুলোকে সমাবেশে বারবার ব্যবহার করছেন। বিপজ্জনক বক্তৃতার পুনরাবৃত্তি করার মাধ্যমে তিনি ব্যাপারটিকে স্বাভাবিককরণ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন, যা উল্লেখিত বিষয় বাস্তবায়নের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। এটি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অভিবাসীদের নিরাপত্তার জন্য খুবই উদ্বেগজনক।‘

যেভাবে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রিপাবলিকান পার্টিতে আধিপত্য বিস্তার করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প তাতে আসন্ন ২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন বলেই আশঙ্কা। এ অবস্থায় ট্রাম্প যদি অভিবাসীদের প্রতি তার বিদ্বেষমূলক মনোভাবের পরিবর্তন না করেন তবে তা যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসীদের জন্য ভবিষ্যতে এক হুমকিতে পরিণত হতেই পারে!



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭