এডিটর’স মাইন্ড

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির অন্য লড়াই


প্রকাশ: 18/12/2023


Thumbnail

আজ ১৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের চেয়েও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল আওয়ামী লীগের শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়টি। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ শরিকদের অসন্তুষ্ট রেখেই নির্বাচনের মাঠে যাওয়ার ঝুঁকি নিল। দীর্ঘদিনের জোটকে অসন্তুষ্ট করার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ রাজনীতির পথে আরও একলা হলো কি না, সেটি এখন অনেকের কাছে বড় প্রশ্ন। আওয়ামী লীগের এই একলা চলো নীতির ফলাফল বিএনপির জন্য ইতিবাচক হতে পারে। আগামী কয়েক দিনে বোঝা যাবে শরিকদের এই মান-অভিমান কোথায় গিয়ে গড়ায়। এ নির্বাচনে অনেকের কাছেই মনে হতে পারে বিএনপি যেহেতু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না, তাই এ নির্বাচন উত্তেজনাহীন। জয়-পরাজয় নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। যে কেউ অবলীলায় বলতে পারবেন, এ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় নিশ্চিত। এবার যেসব রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করছে, তাদের মধ্যে একমাত্র আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো রাজনৈতিক দলই সরকার গঠন করতে চায় না। ভোটের মাঠের লড়াইয়ে আওয়ামী লীগকে নাস্তানাবুদ করতে পারে, এমন দল একটিও নেই। তাই এ নির্বাচনের ফলাফল কী হতে যাচ্ছে, তা প্রচারণার শুরুর দিন থেকেই অনুমান করা যায়। কিন্তু তাই বলে এ নির্বাচন পানসে, আনুষ্ঠানিকতার নির্বাচন নয়। বরং আমার বিবেচনায় বাংলাদেশে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনগুলোর একটি ৭ জানুয়ারির নির্বাচন। এ নির্বাচন অগ্নিপরীক্ষার। এ নির্বাচন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের। বিএনপি ও তার সহযোগীরা নির্বাচনে অংশ না নিলেও, এ নির্বাচন তাদেরও অস্তিত্বের পরীক্ষা। নির্বাচনে যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়, তাহলে পরাজিত হবে বিএনপি। ভোটে অংশ না নিয়ে তাদের হার হবে। আর নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয়, গ্রহণযোগ্য না হয় তাহলে ভোটে জিতেও হারবে আওয়ামী লীগ।

এবারের নির্বাচন নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। ২০১৪ ও ’১৮ সালের নির্বাচনের পর বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা, গণতন্ত্র আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিবেদনে এ দুই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্র কেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলোও এ নির্বাচন নিয়ে নানা সন্দেহ, অবিশ্বাসের কথা বলেছে গত পাঁচ বছর। গত দুই বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহল বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, সে তাগিদ দেওয়া হয়েছে বারবার। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে সবচেয়ে বেশি তৎপর ছিল। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের এই অতি আগ্রহের কারণে এ দেশের বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজও মাঠে নামে। ২০১৪ ও ’১৮ সালের নির্বাচন তারা ‘গ্রহণযোগ্য’ হিসেবে স্বীকৃতিই দিতে চায় না। সুশীলরা আগামী নির্বাচনে যে জনমনের প্রতিফলন ঘটে, সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী শক্তির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।

২০১৮ সালের নির্বাচনের ফলাফলে বিএনপি প্রথমে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। ‘জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টে’র ব্যানারে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করা দলটি বুঝতেই পারেনি, কোথায় থেকে কী হলো। অপ্রত্যাশিত ফলাফলে তারা রীতিমতো বেকুব বনে যায়। প্রথমে বলে, এ ফলাফল তারা মানে না। জাতীয় সংসদে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। এরপর আস্তে আস্তে চুপিসারে তারা শপথ নেয়। জাতীয় সংসদেও যান বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বগুড়ার একটি আসন থেকে নির্বাচিত হলেও শেষ পর্যন্ত শপথ নেননি। পরে তার আসন শূন্য হয়। দল সংসদে যোগ দিলেও মির্জা ফখরুল কেন সংসদে গেলেন না? এ প্রশ্নের উত্তর বিএনপির কারও কাছেই নেই। এরকম অনেক স্ববিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপি নিজেই বিভ্রান্তির গোলক ধাঁধায় আটকে গেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি বেশকটি উপনির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয়। এরপর বিএনপি অবস্থান পাল্টায়। ২০২০ সালে তারা ঘোষণা করে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে দলটি। যে কেউ প্রশ্ন করতেই পারে, ২০১৮ সালে দলীয় সরকারের অধীনে তারা নির্বাচনে গিয়েছিল কেন? বিএনপির নেতারা অবশ্য এর জবাব দেন চটজলদি। তারা বলেন, আমরা বিশ্বাস করেছিলাম কিন্তু প্রতারিত হয়েছি। সরকার তাদের একটি সুন্দর নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারা (সরকার) কথা রাখেনি। ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে অনেক কথাই শোনা যায়। বিএনপিকে ৭০-৮০ আসন ছেড়ে দেওয়ার সমঝোতা হয়েছিল বলেও বলেন কেউ কেউ। কিন্তু সরকারের ভেতর থাকা কিছু অতি-উৎসাহীর সর্বনাশা তৎপরতায় বাংলাদেশ একটি সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে। ওই নির্বাচন যদি ভালো হতো, তাহলে আজ এ সংকট হতো না।

এবারের নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ না করার প্রধান কারণ ২০১৮ সালের নির্বাচনের তিক্ত অভিজ্ঞতা। এ নির্বাচনের আগে দলটির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দলীয় সরকারের অধীনেই বিএনপিকে নির্বাচনে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু বিএনপির নেতারা বারবার ২০১৮ সালের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। বিএনপিসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল এবারের নির্বাচন বর্জন করেছে। ২০১৪ সালেও বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বর্জন করেছিল। সে সময় বিএনপির নির্বাচন প্রতিরোধ আন্দোলন বেশ শক্তিশালী ছিল। ঢাকা ছাড়া সারা দেশেই তারা নির্বাচনের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। এবার বিএনপির আন্দোলনে সেই তেজ নেই। গুপ্ত হামলা আর নাশকতা ছাড়া এখন পর্যন্ত বিএনপি আন্দোলনের কোনো প্রভাব দেশে নেই। কিন্তু তারপরও বিএনপি আশাবাদী। তাদের ধারণা, আন্দোলনের দরকার নেই। বিএনপি প্রতিরোধ করতে না পারলেও জনগণ ভোট দিতে যাবে না। জনগণ ভোট না দিলেই এ নির্বাচন বিএনপির ভাষায় একটি ‘প্রহসনে’ পরিণত হবে। ৭ জানুয়ারির ভোট আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। বিএনপি এবং তার সহযোগী রাজনৈতিক দলগুলোর ধারণা, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পরই শুরু হবে আসল সংকট। ওইদিন শুরু হবে আওয়ামী লীগের মরণযাত্রা।

বিএনপির বক্তব্য এবং সুশীল সমাজের বক্তব্য প্রায় একই। তারাও বলছে, এ নির্বাচন হবে একপেশে, প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন। তারা ৭ জানুয়ারির নির্বাচন এখন থেকেই নাকচ করে দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র হঠাৎ নীরব। ২৮ অক্টোবর বিএনপির তাণ্ডব সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রকে বিব্রত করেছে। এরকম একটি ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমাদের বাংলাদেশ নিয়ে রোডম্যাপ এলোমেলো করে দিয়েছে। এরপর পিটার হাস ‘শর্তহীন সংলাপ’-এর প্রস্তাব নিয়ে মাঠে নামেন। ডোনাল্ড লুর চিঠি দেন। কিন্তু শর্তহীন সংলাপের মার্কিন প্রস্তাব হালে পানি পায়নি। নির্বাচনী তফসিলের পর যুক্তরাষ্ট্র একেবারে চুপচাপ। এমনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ম্যাথু মিলার যেন একই কথা বারবার বলছেন। যুক্তরাষ্ট্র আসলে দেখতে চায়, বাংলাদেশের নির্বাচন কেমন হয়। গোলাবারুদ রসদ সব প্রস্তুত। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর থেকে তা কার্যকরও হয়েছে। নির্বাচনের আগে নতুন শ্রমনীতির খড়গ ঝুলিয়ে রেখেছেন জো বাইডেন। নির্বাচন যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হয় তাহলে যে যুক্তরাষ্ট্র আবার আক্রমণাত্মক অবস্থানে চলে যাবে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

এ নির্বাচনের খুঁত ধরতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় বিএনপি, সুশীল ও পশ্চিমা বিশ্ব। তাই ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো ত্রুটিহীন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। নির্বাচনের ত্রুটি মানেই তা অগ্রহণযোগ্য হবে। হেরে যাবে আওয়ামী লীগ। নির্বাচন নিয়ে প্রথমেই যে শঙ্কার কথা সামনে আসে, তা হলো ভোটার উপস্থিতি। ৭ জানুয়ারি সব আসনে গড়ে যদি ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি না হয়, তাহলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতার সংকটে পড়বে। আন্তর্জাতিকভাবে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এ নির্বাচন স্বীকৃতি নাও দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে নানা নিষেধাজ্ঞার জালে বন্দি হতে পারে বাংলাদেশ। ১৯৯১ সালের নির্বাচন থেকেই বাংলাদেশে অলিখিতভাবে দ্বিদলীয় ব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল। ’৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত চারটি জাতীয় নির্বাচনে, দুটিতে আওয়ামী লীগ এবং দুটিতে বিএনপি জয়ী হয়। বাংলাদেশের মোট ভোটারের প্রায় ৮০ ভাগ এ দুটি দলের সমর্থক। তাই এর একটি দলের অনুপস্থিতি ভোটের রং ফিকে করে। ভোটাররা উৎসাহ হারায়। ২০১৪ ও ’১৮ সালের নির্বাচনের পর অনেকগুলো উপনির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন ছিল একপেশে ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন। এরকম বাস্তবতায় বিএনপিকে ছাড়া এ নির্বাচন কতটা আকর্ষণীয় হবে, সে এক বড় প্রশ্ন। আওয়ামী লীগও বিষয়টি জানে। এজন্যই তারা ভোটের মাঠে ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’দের ছেড়ে দিয়েছে। বিগত কিছু স্থানীয় নির্বাচনে দেখা গেছে, যেখানে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা দাঁড়িয়েছেন, সেখানে নির্বাচন হয়েছে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন এবং গাজীপুর সিটি নির্বাচন ছিল জমজমাট। জাতীয় নির্বাচনেও তাই সে ফর্মুলা এনেছে টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা দলটি। এর ফলে এরই মধ্যে নির্বাচনে সৃষ্টি হয়েছে উত্তেজনা। ভোটারদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে উৎসাহ। ভোট পর্যন্ত এ অবস্থা থাকে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়। শেষ পর্যন্ত যদি ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ভালো হয়, তাহলে এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতার চ্যালেঞ্জে পাস করবে। এ নির্বাচনের দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হলো প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা। টানা ক্ষমতায় থাকার কারণে প্রশাসনে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে অতি-উৎসাহীর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। এদের অনেকে শেখ হাসিনার চেয়েও বড় আওয়ামী লীগার। ২০১৪ সালে এসব আমলা এবং পুলিশের বাড়াবাড়ির কারণে ১৫৩টি আসনে ভোটই হয়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বসিয়ে দিতে এরা রীতিমতো শক্তি প্রয়োগ করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে যত সমালোচনা তার দায় এসব সরকারি কর্মকর্তার। এবার তারা কী করবেন, তার ওপর নির্ভর করছে এ নির্বাচনের অনেক কিছু। সরকারি দলের কিছু প্রার্থী যে কোনো মূল্যে জয়ী হতে মরিয়া। এরা জনগণের ভোটের চেয়ে প্রশাসন এবং পুলিশের সহায়তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষ্মীপুরের নির্বাচন তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ। আওয়ামী লীগে এরকম প্রার্থীর সংখ্যা কম নয়, যারা নিজে এমপি হওয়ার জন্য দলের বারোটা বাজাতেও প্রস্তুত। আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্য এ ব্যাপারে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। নির্বাচন বিতর্কহীন করতে তিনি বদ্ধপরিকর। কিন্তু তার কথা কি অর্বাচীন প্রার্থী, চাটুকার আমলা-পুলিশ কানে তুলবে? এ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হলেও তাও বোঝানো যাবে, কিন্তু নির্বাচনে কারচুপি, অনিয়ম বা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা হলে সর্বনাশ হবে আওয়ামী লীগেরই।

গ্রহণযোগ্যতার চ্যালেঞ্জে তৃতীয় পরীক্ষা নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন কতটা সাহসী ভূমিকা পালন করছে, তা দেখছে দেশবাসী, সারা বিশ্ব। এ ক্ষেত্রে আমরা কিছু আশার আলো দেখছি। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপগুলো নিরপেক্ষ, নির্মোহ। বিশেষ করে ওসি, ইউএনও, ডিসি-এসপি বদল করে কমিশন প্রশংসিত হয়েছে। নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘনকারী যেই হোক না কেন, তাকে কারণ দর্শানো হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের এ অবস্থানে সাধারণ মানুষ খুশি। আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারাও সাহস পাচ্ছেন। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে আমরা দেখেছি, আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য দলের প্রার্থীদের নির্বাচনের মাঠে নামতেই দেওয়া হয়নি। অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়েছে, বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ‘হাত পাখা’র প্রার্থীকে আক্রমণ করে। ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে হিরো আলমের ওপর হামলা ঘটনা ছিল অযাচিত। এবার এরকম ঘটনা ঘটলে তা হবে ভয়ংকর। এ পরিস্থিতি হলে নির্বাচন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে না।

এ নির্বাচন জয়-পরাজয়ের নয়। গ্রহণযোগ্যতার অগ্নিপরীক্ষার নির্বাচন। একটি সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলেই শুধু ক্ষমতাসীনরা জয়ী হবে। আর যদি নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়, বিতর্কিত হয়, ভোটারবিহীন হয় তাহলে হারবে আওয়ামী লীগ। ভোটের অঙ্কে জয়ী হলেও এটি হবে তাদের শোচনীয় পরাজয়। আর বিএনপি নির্বাচনে না থেকেও আছে। ভোট যদি বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তাহলে নির্বাচনে না থেকেও জয়ী হবে বিএনপি। কে জিতল জানা যাবে ৭ জানুয়ারি।

 

লেখক: নির্বাহী পরিচালক, পরিপ্রেক্ষিত

ইমেইল: poriprekkhit@yahoo.com



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭