ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি এখন কি করবে? (ভিডিও)


প্রকাশ: 18/12/2023


Thumbnail

অবশেষে আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হল। আজ প্রতীক বরাদ্দের মধ্যে দিয়ে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হল। নির্বাচন ঠেকানো বা নির্বাচনকে নিরুত্তাপ করার জন্য বিএনপি যে চেষ্টা করেছিল সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। যদিও বিএনপিসহ তাদের বেশ কিছু শরিক দলগুলো নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করেনি। কিন্তু তারপরও নির্বাচন হচ্ছে এবং নির্বাচনে এক ধরনের উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ প্রায় ১৯০০ প্রার্থী এবার নির্বাচনে দলীয় এবং স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। 

তবে এবার নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের। অন্তত একশটি আসন দেখা গেছে, যেখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে এবং নির্বাচন হবে উত্তেজনাপূর্ণ। এখন এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না কিংবা ভোটারদের কোন আগ্রহ নেই অথবা ভোটাররা এই নির্বাচন বর্জন করেছে, এমন বক্তব্যগুলো আর ধোপে টিকবে না। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির এক দফা আন্দোলন বা নির্বাচন প্রতিরোধের আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়বে। 

২০১৪ সালেও বিএনপি এবং জামায়াত জোট জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল এবং ওই নির্বাচন প্রতিহতের ডাক দিয়েছিল। সেই সময় সারা দেশে বিএনপি একটি দৃশ্যমান আন্দোলন গড়ে তুলতে পেরেছিল। ঢাকা ছাড়া সারা দেশেই বড় ধরনের আন্দোলন হয়েছিল, নাশকতা হয়েছিল এবং ওই নির্বাচনে ১৫৩ জন প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবার অবশ্য সেই অবস্থা নেই। আওয়ামী লীগ কৌশলগতভাবে কোন প্রার্থী যেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত না হন তা নিশ্চিত করেছে। প্রত্যেকটি জায়গায় স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনকে আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করছে। এর ফলে বিএনপির প্রথম লক্ষ্য ব্যর্থ হয়েছে। 

বিএনপির দ্বিতীয় লক্ষ্য ছিল, ভোটাররা যেন ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত না হয়। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কারণে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি থাকবে বলেই মনে হচ্ছে। ২০১৪ সালে বিএনপি যেভাবে আন্দোলন করেছিল এবার সেভাবে আন্দোলন করতেও পারছে না। আগামীকাল বিএনপির ডাকে সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হবে। কিন্তু এই ধরনের হরতালগুলো ক্রমশ অকার্যকর এবং ব্যর্থ হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। সাধারণ মানুষ হরতাল-অবরোধ উপেক্ষা করে জীবন-জীবিকার টানে ঘর থেকে বেরোচ্ছে, জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। হঠাৎ হঠাৎ করে গাড়ি পোড়ানো বা অগ্নিসন্ত্রাস ছাড়া বিএনপির হরতালে তেমন কোনো দৃশ্যমান কর্মসূচি থাকে না। আর এই সব করে একটি নির্বাচন ঠেকানো বিএনপির পক্ষে সম্ভব নয়। তাই প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপি এখন কি করবে? 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপি এখন বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহের দিকে তাকিয়ে আছে এবং এটা তাকিয়ে থাকা ছাড়া তাদের আর করণীয় কিছুই নেই। বিএনপি এখন প্রত্যাশা করতে পারে যে, নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হবে। এবং সেটি যদি কম হয় তাহলে সেটি বিএনপির আন্দোলনের একটি নৈতিক বিজয় হিসেবে তারা বিবেচনা করবে৷ 

দ্বিতীয়ত, বিএনপি প্রত্যাশা করছে যে, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে কারচুপি করার চেষ্টা করবে, প্রশাসনকে ব্যবহারের চেষ্টা করবে এবং নির্বাচনে অবৈধ হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বিতর্কিত করবে। যার ফসল বিএনপি পাবে। 

তৃতীয়ত, বিএনপি মনে করছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নির্বাচনের ব্যাপারে একটি হস্তক্ষেপ করবে। এই হস্তক্ষেপের ফলে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে না। কিন্তু এই সবই যদি-কিন্তু-তবে’র ওপর নির্ভরশীল। নিজের শক্তিতে বিএনপি কিছু করতে পারছে না। আর এটি হলো বিএনপির আন্দোলনের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা।

কোথায়, কখন, কি ঘটবে তার উপর বিএনপি ফসল ঘরে তুলবে, এই প্রত্যাশা বিএনপিকে আজকের এই কোণঠাসা অবস্থায় নিয়ে গেছে। সামনের দিনগুলোতে বিএনপি কী করবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭