ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকলো তারেক জিয়া? (ভিডিও)


প্রকাশ: 20/12/2023


Thumbnail

লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া আজ সকালে এক ভিডিও বার্তায় অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। বিএনপি যখন আন্দোলন করতে হিমশিম খাচ্ছে, অবরোধ-হরতালগুলো ভেঙে পড়ছে, ঠিক সেই সময় এই ধরনের অসহযোগ আন্দোলন কতটা বাস্তবসম্মত? সেই প্রশ্নও উঠেছে খোদ বিএনপির অনেকের মধ্যে। অনেকের মতে, এটি একটি অপরিণামদর্শী কর্মসূচি। এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিএনপির বিলুপ্তির প্রক্রিয়া চূড়ান্তভাবে সম্পূর্ণ হতে চলল। 

বিএনপি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। কিন্তু এই আন্দোলন এখন গতি হারা। বিএনপির অধিকাংশ শীর্ষ নেতা গ্রেপ্তার হয়ে কারান্তরীণ অবস্থায় আছেন। যারা বাইরে আছেন, তারাও আত্মগোপনে অথবা নিস্ক্রিয় হয়ে বসে আছেন। এরকম পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক আন্দোলন করার সক্ষমতা যে দলটির নেই, সেই দলটি অসহযোগ আন্দোলন কীভাবে পালন করবে? সেই প্রশ্নও উঠেছে। 

২০১৫ সালে বিএনপি একইভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধের ডাক দিয়েছিল। কিন্তু সেই অবরোধ শেষে মুখ থুবড়ে পড়ে এবং এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি সেই অবরোধ প্রত্যাহার করেনি। একই অবস্থা অসহযোগ আন্দোলনের ক্ষেত্রেও যে হতে যাচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য। বিএনপির রাজনৈতিক কৌশলে এক বড় ধরণের বিভ্রান্তি বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

একটি অসহযোগ আন্দোলন করার ক্ষেত্রে অনেকগুলো ধাপ অতিক্রান্ত করতে হয়। কিন্তু সেই সমস্ত ধাপ অতিক্রম না করেই মুখের কথায় অসহযোগ আন্দোলন পালন করা কতটা বাস্তবসম্মত? সেই প্রশ্ন এখন বড় আকারে উঠেছে। 

বিএনপি দুই বছরের বেশি সময় ধরে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। কিন্তু এই আন্দোলনের এর গতিপথ পরিবর্তন হয় ২৮ অক্টোবর। ধাপে ধাপে গণসমাবেশ করে বিএনপিকে অনেকটাই উজ্জীবিত মনে হচ্ছিল। কিন্তু যে মুহূর্তে ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও এবং সহিংস রাজনীতির পথে ফিরে গেল, তখন থেকেই বিএনপির আন্দোলন পথহারা হয়েছে। 

২৮ অক্টোবর বিএনপির নেতাদের নির্দেশে কর্মীরা প্রধান বিচারপতির কার্যালয়ে হামলা করে, একটি হাসপাতালে হামলা করে, একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। অর্থাৎ ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপি সারাদেশে অবরোধ হরতাল পালন করছে। এ সমস্ত অবরোধ-হরতালগুলো এখন অকার্যকর এবং প্রায় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হচ্ছে। শুধুমাত্র কিছু নাশকতার তৎপরতা ছাড়া অবরোধ বা-হরতালের কোনো চিহ্ন সারা দেশে নেই। 

সারাদেশে একটি নির্বাচনী আবহ তৈরি হচ্ছে। মানুষ স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে চায়। এই পরিস্থিতিতে অসহযোগ আন্দোলনে যে বার্তা দেওয়া হয়েছে, তা রীতিমত কৌতুক হিসেবে পরিগণিত হতে যাচ্ছে। কারণ, এই ধরনের অসহযোগ আন্দোলনের প্রস্তুতি নেই জনগণের মধ্যে, নেই বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে। এই অসহযোগ কে, কীভাবে পালন করবে? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে৷ 

তাছাড়া আজ লন্ডনে পলাতক ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার অন্যতম দণ্ডিত তারেক জিয়া যে ভাষণ দিয়েছেন তা রীতিমতো জনগণকে হুমকি দেওয়ার সামিল। তার কথাবার্তা ছিল বেপরোয়া, উদ্ধতপূর্ণ। ন্যূনতম শালীনতা, শিষ্টাচার তার বক্তব্যের মধ্যে ছিল না। তার বক্তব্য শুনে অনেকেই বিস্মিত, হতবাক। একজন রাজনৈতিক নেতা পরিচয়দানকারী দুর্বৃত্ত কীভাবে মানুষকে আদেশ দিতে পারেন? সেই প্রশ্ন বিএনপির মধ্যেই উঠে এসেছে। 

অনেকে মনে করেন যে, গত ১৭ বছর নানা পর্যায়ে ভুল রাজনীতির ফলে বিএনপি আস্তে আস্তে নিমজ্জিত হয়েছে। বিএনপির অবস্থা এখন একটি ডুবন্ত জাহাজের মতো। এর মধ্যে অসহযোগ আন্দোলন বিএনপির কফিনে শেষ পেরেক হিসেবে মনে করছেন অনেকে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭