ইনসাইড পলিটিক্স

অসহযোগ আন্দোলনে সাড়া নেই: হতাশ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা (ভিডিও)


প্রকাশ: 22/12/2023


Thumbnail

বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। কিন্তু এই আন্দোলন করতে গিয়ে আন্দোলনের কৌশল বারবার মুখ থুবড়ে পড়ছে। বিএনপির আন্দোলন কি লক্ষ্যে, কোন বিষয় অর্জনের জন্য এ নিয়ে এখন নেতারাই বিভ্রান্তিতে পড়ছেন। বিএনপি আসলে কি অর্জন করতে চায়, সেটি পরিষ্কার নয়—এমনই মনে করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তাদের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়াই গত বুধবার সারা দেশে যে অসহযোগের ডাক দেওয়া হয়েছে, সেই অসহযোগের ডাকে মানুষ সাড়া দেয়নি। 

বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, এ ধরনের কর্মসূচি ডাকলে জনগণ সাড়া দেবে—এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। তাদের মতে, জনগণকে সম্পৃক্ত না করে এ ধরনের কর্মসূচি বিএনপিকে আরও জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলছে। আর এর ফলে নেতাকর্মীরা ক্রমশ হতাশ হয়ে পড়েছেন বলেও মনে করেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।

একাধিক সূত্রগুলো বলছে, অসহযোগ আন্দোলন ঘোষণার পরে বিএনপির একমাত্র নেতা রুহুল কবির রিজভী কিছু কিছু জায়গায় লিফলেট বিতরণ করছেন। কিন্তু মাঠের কর্মীদেরকেও অসহযোগের জন্য কি করতে হবে—এই প্রশ্ন উঠেছে। অসহযোগ আন্দোলনের নির্দেশনা সংক্রান্ত বক্তব্যে বিএনপির নেতাকর্মীদের থানায় হাজিরা না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তারেক জিয়ার নির্দেশনা দলের নেতাকর্মীরাই শুনেনি। বুধবারের ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার বিএনপির অন্তত ৭০০ নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন স্থানে আদালতে হাজিরা দিয়েছেন অথবা জামিনের আবেদন করেছেন। এরকম বাস্তবতায় অসহযোগ আন্দোলন বিএনপি যখন মানছে না তখন কর্মীরা কীভাবে মানবে এই প্রশ্নটি উঠেছে। এছাড়া বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ অন্যদের মামলাগুলো এখন বিচারাধীন আছে। যদি সত্যি সত্যি আদালতের ওপর বিএনপি অনাস্থা জ্ঞাপন করতে যায় তাহলে এই সমস্ত মামলাগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বা কারও মামলাই প্রত্যাহার করা হয়নি। বিএনপি যে সমস্ত নেতারা জামিনে আছেন সেই সমস্ত নেতারাও তাদের জামিন প্রক্রিয়ার আইনি কার্যক্রম বন্ধ করেননি। এ ক্ষেত্রে অসহযোগ আন্দোলন বিএনপি অকার্যকর করে দিচ্ছে বলে অনেকে মনে করেন। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য অবশ্য স্বীকার করেছেন যে, অসহযোগ আন্দোলন করার মতো বাস্তবতা এখন বাংলাদেশে নেই। কারণ অসহযোগ আন্দোলন করার জন্য যে পরিবেশ তৈরি করা দরকার, জনগণের যে উত্তাপ দরকার সেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি নেই। বরং জনগণ মনে করে যে এখন অশান্তি বা নাশকতা বা বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটছে তা বিএনপির কারণে সৃষ্টি হচ্ছে। জনগণ এই সমস্ত সন্ত্রাস সহিংসতাকে পছন্দ করছে না। এর ফলে বিএনপির সঙ্গে জনগণের একটা সুস্পষ্ট দূরত্ব হচ্ছে।

আন্দোলনের একটি সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকে। বিএনপি কি লক্ষ্য অর্জন করতে চায় এই আন্দোলনের মাধ্যমে সেটি একটি বড় প্রশ্ন। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ মনে করেন যে, বিএনপির উচিত ছিল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা এবং সরকারকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাধ্য করা। কিন্তু সেটি বিএনপির করেনি। এরকম অবস্থায় বিএনপির দরকার ছিলো জনমত তৈরি করা। নির্বাচনের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত জনমতের ভিত্তিতে যেন নির্বাচনে জনগণ ভোট না দেয় সেই কার্যক্রম পরিচালনা করা। কিন্তু রেলে হামলা করা, নাশকতা করে বা অসহযোগ আন্দোলনের মতো উস্কানিমূলক কর্মসূচি দিয়ে জনগণকে সম্পৃক্ত করা যাবে না। ফলে ভুল রাজনীতি এবং ভুল আন্দোলন বিএনপির মধ্যে হতাশা তৈরি করছে। নেতাকর্মীরা এখন প্রকাশ্যেই মূল নেতৃত্বের সমালোচনা করছেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭