ইনসাইড গ্রাউন্ড

টাইগারদের বর্ণাঢ্য জয়, প্রথমবারের মতো হারালো নিউজিল্যান্ডকে


প্রকাশ: 23/12/2023


Thumbnail

এই প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডে ম্যাচ জিতলো বাংলাদেশ। কিউইদের মাটিতে ১৯টি ম্যাচ খেলার পর এই প্রথম জয়ের মুখ দেখলো টাইগাররা। তবে তাদের মাটিতে শান্তদের জয়টা হয়েছে বর্ণাঢ্য। মাত্র ৯৮ রানে কিউইদের উড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশ মাত্র এক উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পেসারদের আগুন ঝড়ানো বোলিংয়ের সামনে উড়ে গেছে নিউজিল্যান্ড, অলআউট হয়েছে মাত্র ৯৮ রানে।   

নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে টসে জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। এদিন আগের ম্যাচের একাদশ থেকে একটি পরিবর্তন আনে টাইগাররা। হাসান মাহমুদকে বসিয়ে খেলানো হয়েছে মুস্তাফিজুর রহমানকে। ম্যাকলিন পার্কের উইকেটে শুরু থেকেই মিলেছিল বাড়তি বাউন্স এবং সুইং। তা কাজে লাগিয়ে শুরুটা বেশ ভালোভাবেই করে টাইগার পেসাররা। নিউজিল্যান্ডকে প্রথম আঘাতটা দিয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব। মাত্র ১৬ রানের মাথায় ভেঙেছেন কিউইদের উদ্বোধনী জুটি, ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকে ফেলেছেন কট বিহাইন্ডের ফাঁদে। ১২ বলে ৮ রান করে আউট হন রাচিন।

টাইগার পেসারদের দাপট এরপরেও অব্যাহত ছিল। বাড়তি সুইংয়ের সাথে গতি এবং বাউন্স মিলিয়ে কিউই ব্যাটারদের বেশ ভালো রকমের বেকায়দায় ফেলেছিলেন শরিফুল ইসলাম-তানজিম হাসান সাকিবরা। দারুণ বোলিং সামলাতে গিয়ে বেশ হিমশিম খেয়েছে নিউজিল্যান্ড, চাপে পড়ে দিয়েছে উইকেটও। দলের ২২ রানের মাথায় আউট হয়েছেন হেনরি নিকোলস, ১২ বলে করেছেন মোটে ১ রান। শিকারী? এবারও সেই তানজিম সাকিব।

 

সুযোগ পেয়ে নিউজিল্যান্ডকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। এক উইল ইয়ং বাদে আর কাউকেই খুব একটা সাবলীল মনে হচ্ছিল না। মাঝে চারে নেমে অধিনায়ক টম ল্যাথাম ইয়ংয়ের সাথে একটি ভালো জুটি গড়ার আভাস দিয়েছিলেন। তবে সেই জুটি থেকে এসেছে ৩৬ রান। দলের ৫৮ রানের মাথায় ৩৪ বলে ২১ রানের ইনিংস খেলে আউট হন ল্যাথাম। তাকে বোল্ড করে দিয়ে সাজঘরের রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছেন শরিফুল।

এক ওভার পরে আউট হয়েছেন ইয়ং। ৪৩ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন তিনি। এবারও উইকেটশিকারী শরিফুল। ৬১ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বেশ বিপদে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড।

সময়ের সাথে সাথে বিপদটা বেড়েছে কিউইদের। কোনো ব্যাটারই ক্রিজে এসে দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারছিলেন না। যার ফলে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে নিউজিল্যান্ড। দলের সংগ্রহটাও বড় হচ্ছিল না। দলের ৬৩ রানের মাথায় ৮ বলে ২ রান করে আউট হন মার্ক চ্যাপম্যান, তাকে ফিরিয়েছেন শরিফুল।

এরপর দলীয় ৭০ রানের মাথায় উইকেট দিয়ে এসেছেন টম ব্লান্ডেল। এবারে শিকারী সাকিব। এরপর তরুণ অলরাউন্ডার জশ ক্লার্কসন কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছেন। তবে বাকিদের মত তিনিও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। দলের ৮৫ রানের মাথায় ২৩ বলে ১৬ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন ক্লার্কসন। এবারে উইকেট নেওয়ার মিছিলে যোগ দিয়েছেন সৌম্য সরকার।

নিজের পরের ওভারে অ্যাডাম মিলনেকেও ফিরিয়ে দিয়েছেন সৌম্য। ২০ বলে ৪ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন মিলনে। আর নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ? ৮ উইকেট হারিয়ে ৮৬ রান।

বাংলাদেশের সমর্থক হয়ে থাকলে এমন পরিস্থিতিতে নির্ঘাত আপনার মনে হয়েছে, আরে! হচ্ছেটা কী? ঠিকঠাক দেখছি তো? নিউজিল্যান্ডের দুর্বোধ্য কন্ডিশনে অধরা জয়টা কি তবে ধরা দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশের জন্য? নিজেদের স্বাভাবিক ক্রিকেটের অর্ধেকটা খেলতে পারলেও এমন পরিস্থিতি থেকে অনায়াস জয় খুবই সম্ভব বাংলাদেশের জন্য।

কিউইদের ইনিংসের লেজটা মুড়ে দেওয়া বাকি ছিল। সেটা করতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি বাংলাদেশকে। আদিত্য অশোককে ফিরিয়েছেন সৌম্য আর উইলিয়াম ও'রউরকে ফিরিয়ে উইকেটের খাতায় নিজের নাম তুলেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৩১.৪ ওভারের মাথায় মাত্র ৯৮ রানেই অলআউট হয়েছে নিউজিল্যান্ড। 

বাংলাদেশের হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন শরিফুল, সাকিব এবং সৌম্য। অন্যদিকে ১ উইকেট তোলেন মুস্তাফিজ। 

বিরুদ্ধ নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে স্মরণীয় একটি জয় তুলে নেওয়ার সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। নিজেদের সামর্থ্যের অর্ধেকটা দিলেও এই ম্যাচে বাংলাদেশের জয় অনায়াসেই আসার কথা। এমন সুযোগ নিশ্চয় হেলায় হারাতে চাইবে না টাইগাররা। 

ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ ১৫.১ ওভারে মাত্র এক উইকেট হারিয়ে ৯৯ রান করে জয় নিশ্চিত করে। অধিনায়ক শান্ত ৪২ বলে ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন। এছাড়া আরেক ওপেনার আনামুল হক বিজয় ৩৩ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ৩৭ রান করে আউট হন। আর গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান সৌম্য সরকার রিটায়ার্ড হার্ট হন ৪ রান করে।

 

 

 

 

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭