আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে। তারা কোনো রাজনৈতিক দল নয়, সন্ত্রাসী দল।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন থেকে ছয় জেলার নির্বাচনী জনসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, সন্ত্রাসী দল। জামায়াত যুদ্ধাপরাধীদের দল। এদের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। এদের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত রাখতে হবে। তাহলে দেশের উন্নয়ন হবে। দেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন ঠেকানোর নামে ভয়ংকর রূপ নিয়ে নেমেছে বিএনপি। অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে তারা। রেলে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছে। মনুষ্যত্ব থাকলে এই ঘটনা ঘটাতে পারে না। বিএনপির নেতা কে? দুজনই সাজাপ্রাপ্ত। খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তারপরও তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে এবং তার বোন-ভাই রিকুয়েস্ট করার পর সাজা স্থগিত করে বাড়িতে থাকতে দিয়েছি। খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া গ্রেনেড হামলা, কোটালিপাড়ায় বোমা পুঁতে রাখা, গুলি করে আমাকে মারতে চেয়েছিলো। তারপরও তার জন্য এটুকু মানবিকতা দেখিয়েছি।
তিনি বলেন, তার ছেলে হাওয়া ভবন খুলে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বহু নেতাকর্মীকে তারা হত্যা করেছে। আর কোনদিন রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে এখন বিদেশ থেকে হুকুম দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছে। যারা হুকুম পালন করছে তারাই পাপের ভাগীদার হবে। তারেক রহমান বিদেশে জুয়া খেলে ভালোই আছে। বিএনপি নেতারা কার জন্য নাচেন? ও তো দেশেই আসে না। এমনকি মা মরো মরো, তবুও দেশে আসে না। এতো সাহস থাকলে দেশে এসে দেখুক না। দেশের মানুষ এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেবে।
নির্বাচনের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছি। কারণ আমি নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে চাই। সব প্রার্থী জনগণের কাছে যাবে, ভোট চাইবে। জনগণ যাকে ভোট দেবে সেই নির্বাচিত হবে। আমি চাই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হোক, জনগণের ভোটের অধিকার সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারুক। গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করতে চাই। গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থা ও পরিবেশ থাকলে যে উন্নয়ন হয় সেটি আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে একবারই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা বদল হয়েছে। যেটা ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ করেছে। কারণ গণতন্ত্র থাকলেই উন্নয়ন হয়।
খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও সাতক্ষীরা জেলা, বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলা, ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনা জেলা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের রাঙামাটি জেলায় নির্বাচনী জনসভা করেছে আওয়ামী লীগ। এতে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতারা, সংশ্লিষ্ট জেলা আওয়ামী লীগ, উপজেলা, থানা, পৌর আওয়ামী লীগ, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা এবং সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর নির্বাচনী এলাকার নৌকা মার্কার প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ২৯ ডিসেম্বর (শুক্রবার) বিকাল ৩টায় বরিশাল জেলা সদরে নির্বাচনী জনসভায় এবং ৩০ ডিসেম্বর (শনিবার) গোপালগঞ্জ-৩ নির্বাচনী এলাকায় (টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া) ও মাদারীপুর-৩ নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দেবেন।
এ ছাড়া ১ জানুয়ারি (সোমবার) ঢাকায় নির্বাচনী জনসভা করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জনসভাটি ওই দিন বিকাল ৩টায় মোহাম্মদপুরের শারীরিক চর্চা কেন্দ্র মাঠে হবে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সিলেট থেকে আওয়ামী লীগের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। এদিন হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহপরানের (রহ.) মাজার জিয়ারতের পর জনসভায় বক্তব্য দেন তিনি।