ইনসাইড পলিটিক্স

এবার নির্বাচন বন্ধে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির চিঠি


প্রকাশ: 23/12/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের জন্য বিএনপি অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। কিন্তু অসহযোগ আন্দোলন শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়েছে। এটি একটি তামাশায় পরিণত হয়েছে। বিএনপির নেতারা নিজেও স্বীকার করছেন যে, এ ধরনের আন্দোলন অর্থহীন এবং এই ধরনের আন্দোলন করার মতো উপযুক্ত সময় এটি নয়। অসহযোগ আন্দোলন ডাকার আগে যে ধরনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং পারিপার্শ্বিকতা সৃষ্টি করা দরকার সেরকম পরিস্থিতি এবং পারিপার্শ্বিকতা বিএনপির সৃষ্টি করতে পারেনি। আর তাই বিএনপিও জানে যে এই আন্দোলন দিয়ে ভোট ঠেকানো যাবে না। এখন তারা আবার আগের মতো বিদেশিদের ওপর নির্ভর করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘ যেন আগামী নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে এবং বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়া এই নির্বাচনকে যেন গ্রহণযোগ্যতা স্বীকৃতি না দেয় সেজন্য বিএনপি তৎপরতা শুরু করেছে। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে, হোয়াইট হাউসে এবং একাধিক সিনেটরের কাছে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিন্ন চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেই চিঠিতে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কোন প্রেক্ষাপটে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করছে সে সম্পর্কে বলা হচ্ছে। এই নির্বাচন কেন অংশগ্রহণমূলক হবে না সে সম্পর্কে বিএনপি তার নিজস্ব মতামত তুলে ধরেছে। পাশাপাশি এই নির্বাচন হলে দেশের কী ধরনের ক্ষতি হবে সে সম্পর্কেও তারা তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। আর এসমস্ত বর্ণনার পর বিএনপির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের নির্বাচন বন্ধের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেন তাদের ভাষায় একতরফা নির্বাচনের ব্যাপারে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে এবং এ ধরনের নির্বাচনকে স্বীকৃতি না দেয় সেজন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নেও একই ধরনের চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির দুটি লবিস্ট ফার্ম কাজ করছে। এই লবিস্ট ফার্মকে এখন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর এবং অন্যান্য নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে এবং বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সুস্পষ্ট করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়াও এই লবিস্ট ফার্মগুলো জাতিসংঘেও বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে।

যদিও জাতিসংঘ বলেছে যে, কোনো দেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা বা নির্বাচনের ব্যাপারে নাক গলানো জাতিসংঘের কাজ নয়। কিন্তু বিএনপির লবিস্ট ফার্মগুলো জাতিসংঘকে বাংলাদেশের নির্বাচন সম্পর্কে নেতিবাচক তথ্য দিয়ে জাতিসংঘ যেন বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে সে ব্যাপারে তদবির চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যে চিঠিতে বাংলাদেশের বিরোধী দল হিসেবে পরিচিত নেতাদের গ্রেপ্তারের তালিকা দেওয়া হয়েছে। বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। পাশাপাশি বিএনপির নেতাদের ওপর কি ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে সে সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে বিএনপি।

কূটনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বিদেশের এভাবে প্রকাশ্যে আমন্ত্রণ জানানো নজিরবিহীন। এটি দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের পরিপন্থি। কোনো দেশের বিরোধী দল এ ধরনের কাণ্ড কারখানা করে না। কিন্তু বিএনপি এখন দেশে নির্বাচন প্রতিরোধ করতে না পেরে বিদেশে সরকারের বিরুদ্ধে বিষেদগার করছে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিরা যেন হস্তক্ষেপ করে সেজন্য দেন দরবার করছে। এটি একটি দেশের রাজনীতির জন্য দুভাগ্যজনক ঘটনা বলেও কোনো কোনো কূটনীতিক বিশ্লেষক মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭